আবু তাহের খান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে সম্প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট প্রগতিশীল চিন্তাবিদ গোলাম মোহাম্মদ ফারুক। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ মিঞার বক্তব্য থেকে এ মর্মে তিনি উদ্ধৃত করেছেন যে ‘বাঙালির নিজেকে শাসন করার ইতিহাস সুখের নয়।’ অতঃপর গোলাম ফারুক লিখেছেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সকল ইতিহাসকে মিথ্যা প্রমাণিত করে বাঙালি জাতির হাতে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র তুলে দিয়ে গেছেন।’ এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গত পঞ্চাশ বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করে তিনি যে ইঙ্গিত করেছেন, তার সারমর্ম হচ্ছে: তাহলে কি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে ম্লান করে দিয়ে অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ মিঞার মন্তব্যই শেষ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে সঠিক বলে প্রমাণিত হলো? আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেও কি তাহলে স্বাধীনতা-উত্তরকালে সুখকর অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে পরিচালনা করা গেল না, বিশেষ করে ১৯৯০-উত্তর ৩০ বছর ধরে?
১৯৭২ সালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হৃদয়ে ধারণ করে অসামান্য সাহস ও আশাবাদ বুকে নিয়ে স্বাধীন দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে শিক্ষাবিদ, দার্শনিক, রাজনীতিক ইত্যাদি নানা শ্রেণিপেশার মহান সব মানুষেরা এসে তাঁদের আবেগ, সমর্থন ও অঙ্গীকার নিয়ে মহিরুহ এ প্রতিষ্ঠানের পাশে দাঁড়ান। ১৬ ডিসেম্বরের (১৯৭২) পর মাত্র দুই মাসের কম সময়ের ব্যবধানে এডওয়ার্ড এম কেনেডি ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কলাভবনের সামনে দাঁড়িয়ে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বললেন, ‘আই এম প্রাউড টু স্ট্যান্ড হিয়ার অ্যাট ঢাকা ইউনিভার্সিটি, লং দ্য সিম্বল অ্যান্ড ফোকাস অব দ্য বেঙ্গলি স্ট্রাগল ফর সেলফ-ডিটারমিনেশন, অ্যান্ড দ্য ফার্স্ট টার্গেট অব দৌজ হু হ্যাভ সওট টু রিপ্রেস দ্যাট ফ্রিডম।’ (মর্নিং নিউজ, ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২)
মুক্তিযুদ্ধের রক্তাক্ত সতেজ স্মৃতি মস্তিষ্কে প্রোথিত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা সেদিন নাওয়া-খাওয়া ভুলে গিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত প্রতিষ্ঠানটিকে পূর্ণ শক্তিতে দাঁড় করানোর জন্য নিজেরাই শুধু উঠেপড়ে লাগেননি, পরম মমতায় তাঁর শিক্ষার্থীদেরও এর সঙ্গে যুক্ত করেন। আর সে ক্ষেত্রে নেপথ্যে থেকে তাঁদের শক্তি জোগান ১৯৭১-এর শহীদ শিক্ষকেরা। নানা প্রতিকূলতা ও সীমাবদ্ধতার মধ্যেও প্রতিটি বিভাগের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমকে তাঁরা সেদিন এমনই অবিশ্বাস্য দ্রুততায় ঢেলে সাজাতে সক্ষম হয়েছিলেন যে আজ ভাবতেও অবাক লাগে কীভাবে এত বড় ও কঠিন কাজগুলো সর্বোচ্চ গুণগত মান রক্ষা করে এতটা অবলীলায় সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছিল! ওই সমস্যাসংকুল সীমাবদ্ধ পরিবেশের মধ্যেই আন্তর্জাতিক সেমিনার আয়োজন, বিদেশের খ্যাতিসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতিমান শিক্ষক-পণ্ডিতদের ক্লাসে ও অন্যত্র বক্তৃতা করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো, উঁচুমানের গবেষণাকাজ হাতে নেওয়া, স্বাধীন দেশের চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে পাঠ্যক্রমকে ঢেলে সাজানো, উন্নতমানের গবেষণা প্রবন্ধসংবলিত জার্নাল প্রকাশ ইত্যাদি কাজ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছিলেন। কিন্তু এর চেয়ে বহুগুণ বেশি সুযোগ-সুবিধা এবং আর্থিক ও অবকাঠামোগত সমর্থন নিয়েও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ এ কাজগুলো সে মাত্রায় করতে পারছে না কেন?
ব্যাপকভাবে মনে করা হয় যে প্রতিষ্ঠার একেবারে গোড়া থেকেই দীর্ঘকাল পর্যন্ত বাঙালির রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক চিন্তা ও মননের ক্ষেত্র তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে, বিশেষত ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত সময়কালে এ বিশ্ববিদ্যালয়ই ছিল বস্তুত ভাষা আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগ্রাম ও আন্দোলনের সকল পর্যায়ের চিন্তা ও সাংগঠনিক তৎপরতার কেন্দ্রবিন্দু। ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থাকাকালেই অধ্যাপক রেহমান সোবহান তাঁর বিখ্যাত ‘দুই অর্থনৈতিক তত্ত্ব’ সেমিনারের মাধ্যমে জনসমক্ষে তুলে ধরেন, যা ঐতিহাসিক ৬ দফার ভিত্তি নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শিক্ষকের মৌলিক চিন্তাভাবনাও এ দেশের সমাজ-ইতিহাসের গতিধারা নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ তার সেই অবস্থান শুধু হারিয়েই ফেলেনি, নানা হীনতায় ভরা তার বর্তমান ভূমিকা প্রায়ই মানুষকে হতাশ ও বিরক্ত করছে। এর ছাত্রাবাসগুলোর ‘গেস্টরুম নির্যাতন’ মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানাচ্ছে। অথচ তা বন্ধের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের মধ্যে রয়েছে বরফশীতল নীরবতা, যা দেখে মানুষের ভেতর গুমোট কষ্টমিশ্রিত প্রশ্ন, শিক্ষক কী করে নিজ ছাত্রের ওপর পরিচালিত এরূপ বর্বরতা দেখে নীরব থাকতে পারেন?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে শিক্ষা, গবেষণা ও জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে যে মান ও ধারায় পরিচালিত হচ্ছে, তাতে নিকট ভবিষ্যতের দিনগুলোতে তার পক্ষে আরও পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কাই সর্বাধিক। এর গবেষণাগার, গ্রন্থাগার, জার্নাল, নিয়োগ ও পদোন্নতি কাঠামো, গোষ্ঠীগত স্বার্থে উপযুক্ত যাচাই-বাছাই ছাড়াই রাতারাতি গড়ে ওঠা নতুন নতুন বিভাগ, সংস্কৃতিচর্চা, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের ধরন, ছাত্র সংসদ নির্বাচন ইত্যাদি ক্ষেত্রে বর্তমানে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তাতে করে এর পক্ষে রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনে অবদান রাখা তথা নতুন জ্ঞান সৃষ্টি ও নতুনতর উদ্ভাবনার পথে এগিয়ে যাওয়া অনেকটাই দুঃস্বপ্নের মতো। অবশ্য সে রকম স্বপ্ন দেখার আকাঙ্ক্ষা পোষণের চেয়ে সান্ধ্য কোর্সে বেশি বেশি করে সময় দেওয়াটাকেই তাঁরা অধিকতর লাভজনক বিবেচনা করেন বলে তাঁদের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড থেকে প্রতীয়মান হয়। এসব দেখে দেশের স্বল্পজ্ঞানধারী সাধারণ মানুষ কষ্ট পেলেও আমাদের উচ্চশিক্ষিত শিক্ষকেরা এসব নিয়ে আদৌ ভাবিত বলে মনে হয় না; বরং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা এখন ব্যস্ত নীল-সাদা-গোলাপির দ্বন্দ্বে। তবে একটি বিষয়ে তাঁদের মধ্যে নিরঙ্কুশ ঐকমত্য লক্ষ করা যায় এবং তা হচ্ছে সান্ধ্য কোর্স চালু রাখা, যা চালু রাখার জন্য রাষ্ট্রপতির নির্দেশনাকে উপেক্ষা করতেও তাঁরা দ্বিধা করেননি।
গোলাম ফারুক আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরকার বর্তমান বেহাল দশা ও এর চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে এটিকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার দাবিও উঠতে পারে। আর তেমনটি হলে সেটি এখানকার শিক্ষক-কর্মচারীদের চেয়েও অধিকতর হতাশাব্যঞ্জক ঘটনা হবে এর শিক্ষার্থী ও দেশের সাধারণ মানুষের জন্য। তবে উল্লিখিত উদ্বেগকে গুরুত্ব দিয়ে উপলব্ধি করার পরও আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করতে চাই যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার দেড় শ বছর পূর্তির আগেই আবার ঘুরে দাঁড়াবে। কারণ, যে প্রতিষ্ঠানটি এ দেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রতীক এবং যে প্রতিষ্ঠান এ দেশের সমাজ, রাজনীতি, ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতির নির্মাণ ও গঠনপ্রক্রিয়ার অন্যতম অগ্রদূত, সেই প্রতিষ্ঠান সবার চোখের সামনে এভাবে কিছুতেই ক্ষয়ে যেতে পারে না।
আদি উদ্যোক্তা হিসেবে এ প্রতিষ্ঠানকে যাঁরা গড়ে তুলেছিলেন, এর যে শিক্ষক-গবেষকেরা শিক্ষার মানে একে অক্সফোর্ড পদবাচ্যে তুলনীয় হওয়ার পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, এর যে শিক্ষার্থীরা বুকের রক্ত ঢেলে এ দেশের ইতিহাস ও চিন্তার নানা বাঁক নির্মাণ করেছিলেন, তাঁদের অধিকাংশ আজ আর সশরীরে না থাকলেও তাঁদের চিন্তার প্রতিনিধিরা তো প্রান্তিক চরিত্রে হলেও রাষ্ট্রের নানা স্তরে, পৃথিবীর নানা প্রান্তে টিকে আছেন। এমনকি তাঁরা আছেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরেও। আমরা গভীরভাবে বিশ্বাস করি যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকই এর ভগ্নদশায় চরম মানসিক পীড়ন বোধ করেন। কিন্তু শুধু পীড়ন বোধ করলে তো হবে না। পীড়ন বোধিত কষ্টকে সমাধানে রূপান্তরের জন্য এগিয়ে আসতে হবে। এ জন্য রাজপথে নেমে আন্দোলন করার দরকার নেই। শিক্ষকেরা (এ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী ছিলাম বিধায় আপনারা প্রত্যেকে আমার শিক্ষক), আপনারা দয়া করে আপনাদের চিন্তার আন্দোলনটিকে বেগবান করুন। আরও গবেষণা, আরও নতুন জ্ঞান সৃষ্টি এবং বৈশ্বিক স্তরের আরও উন্নততর চিন্তার মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয়টির হৃত গৌরব পুনরুদ্ধারে এগিয়ে আসুন। চিন্তাশীল বিবেকবান মানুষেরা হয়তো বাইরে থেকে আপনাদের পরামর্শ ও সহায়তা দিতে পারবেন। কিন্তু মূল কাজটি আপনাদেরই করতে হবে এবং সেই যোগ্যতা আপনাদের মধ্যে প্রচণ্ডভাবে আছে বলেই আমরা, তথা এ দেশের সাধারণ মানুষ বুকভরা আশা নিয়ে আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
বলা হয়, দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন নেতৃত্বের সংকটে ভুগছে, যার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামও উচ্চারিত হয়। আমরা সাধারণ মানুষ এতে প্রচণ্ড কষ্ট পাই। তো, যে বিশ্ববিদ্যালয়কে জিএইচ ল্যাংলি, আর সি মজুমদার, মাহমুদ হোসেন, আবু সাঈদ চৌধুরী, মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী, আবদুল মতিন চৌধুরী প্রমুখের মতো বলিষ্ঠ চরিত্রের বিদ্বজ্জনেরা নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন, সেই বিশ্ববিদ্যালয় কেন নেতৃত্বের সংকটে ভুগবে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দুই হাজার শিক্ষকের মধ্যে এমন বহু শিক্ষক রয়েছেন, যাঁরা তাঁদের জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও নেতৃত্ব দিয়ে বস্তুতই একে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডে রূপান্তরের সামর্থ্য রাখেন। আমরা আশা করব, ২০৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেড় শ বছর পূর্তির আগেই তাঁরা তাঁদের সেই সর্বোচ্চ সামর্থ্যটুকু ঢেলে দিয়ে একে তার হৃত গৌরব ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হবেন। আমাদের অনেকেই তখন আর থাকব না। কিন্তু এ দেশের অযুত মানুষের হৃদয়ের আকুতিটুকু যদি সেদিন বাস্তবতা খুঁজে পায়, তাহলে এ দেশের জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য সেটি হবে এক বিশাল প্রাপ্তি।
লেখক: আবু তাহের খান,সাবেক পরিচালক, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থা (বিসিক), শিল্প মন্ত্রণালয়; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে সম্প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট প্রগতিশীল চিন্তাবিদ গোলাম মোহাম্মদ ফারুক। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ মিঞার বক্তব্য থেকে এ মর্মে তিনি উদ্ধৃত করেছেন যে ‘বাঙালির নিজেকে শাসন করার ইতিহাস সুখের নয়।’ অতঃপর গোলাম ফারুক লিখেছেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সকল ইতিহাসকে মিথ্যা প্রমাণিত করে বাঙালি জাতির হাতে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র তুলে দিয়ে গেছেন।’ এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গত পঞ্চাশ বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করে তিনি যে ইঙ্গিত করেছেন, তার সারমর্ম হচ্ছে: তাহলে কি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে ম্লান করে দিয়ে অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ মিঞার মন্তব্যই শেষ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে সঠিক বলে প্রমাণিত হলো? আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেও কি তাহলে স্বাধীনতা-উত্তরকালে সুখকর অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে পরিচালনা করা গেল না, বিশেষ করে ১৯৯০-উত্তর ৩০ বছর ধরে?
১৯৭২ সালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হৃদয়ে ধারণ করে অসামান্য সাহস ও আশাবাদ বুকে নিয়ে স্বাধীন দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে শিক্ষাবিদ, দার্শনিক, রাজনীতিক ইত্যাদি নানা শ্রেণিপেশার মহান সব মানুষেরা এসে তাঁদের আবেগ, সমর্থন ও অঙ্গীকার নিয়ে মহিরুহ এ প্রতিষ্ঠানের পাশে দাঁড়ান। ১৬ ডিসেম্বরের (১৯৭২) পর মাত্র দুই মাসের কম সময়ের ব্যবধানে এডওয়ার্ড এম কেনেডি ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কলাভবনের সামনে দাঁড়িয়ে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বললেন, ‘আই এম প্রাউড টু স্ট্যান্ড হিয়ার অ্যাট ঢাকা ইউনিভার্সিটি, লং দ্য সিম্বল অ্যান্ড ফোকাস অব দ্য বেঙ্গলি স্ট্রাগল ফর সেলফ-ডিটারমিনেশন, অ্যান্ড দ্য ফার্স্ট টার্গেট অব দৌজ হু হ্যাভ সওট টু রিপ্রেস দ্যাট ফ্রিডম।’ (মর্নিং নিউজ, ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২)
মুক্তিযুদ্ধের রক্তাক্ত সতেজ স্মৃতি মস্তিষ্কে প্রোথিত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা সেদিন নাওয়া-খাওয়া ভুলে গিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত প্রতিষ্ঠানটিকে পূর্ণ শক্তিতে দাঁড় করানোর জন্য নিজেরাই শুধু উঠেপড়ে লাগেননি, পরম মমতায় তাঁর শিক্ষার্থীদেরও এর সঙ্গে যুক্ত করেন। আর সে ক্ষেত্রে নেপথ্যে থেকে তাঁদের শক্তি জোগান ১৯৭১-এর শহীদ শিক্ষকেরা। নানা প্রতিকূলতা ও সীমাবদ্ধতার মধ্যেও প্রতিটি বিভাগের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমকে তাঁরা সেদিন এমনই অবিশ্বাস্য দ্রুততায় ঢেলে সাজাতে সক্ষম হয়েছিলেন যে আজ ভাবতেও অবাক লাগে কীভাবে এত বড় ও কঠিন কাজগুলো সর্বোচ্চ গুণগত মান রক্ষা করে এতটা অবলীলায় সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছিল! ওই সমস্যাসংকুল সীমাবদ্ধ পরিবেশের মধ্যেই আন্তর্জাতিক সেমিনার আয়োজন, বিদেশের খ্যাতিসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতিমান শিক্ষক-পণ্ডিতদের ক্লাসে ও অন্যত্র বক্তৃতা করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো, উঁচুমানের গবেষণাকাজ হাতে নেওয়া, স্বাধীন দেশের চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে পাঠ্যক্রমকে ঢেলে সাজানো, উন্নতমানের গবেষণা প্রবন্ধসংবলিত জার্নাল প্রকাশ ইত্যাদি কাজ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছিলেন। কিন্তু এর চেয়ে বহুগুণ বেশি সুযোগ-সুবিধা এবং আর্থিক ও অবকাঠামোগত সমর্থন নিয়েও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ এ কাজগুলো সে মাত্রায় করতে পারছে না কেন?
ব্যাপকভাবে মনে করা হয় যে প্রতিষ্ঠার একেবারে গোড়া থেকেই দীর্ঘকাল পর্যন্ত বাঙালির রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক চিন্তা ও মননের ক্ষেত্র তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে, বিশেষত ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত সময়কালে এ বিশ্ববিদ্যালয়ই ছিল বস্তুত ভাষা আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগ্রাম ও আন্দোলনের সকল পর্যায়ের চিন্তা ও সাংগঠনিক তৎপরতার কেন্দ্রবিন্দু। ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থাকাকালেই অধ্যাপক রেহমান সোবহান তাঁর বিখ্যাত ‘দুই অর্থনৈতিক তত্ত্ব’ সেমিনারের মাধ্যমে জনসমক্ষে তুলে ধরেন, যা ঐতিহাসিক ৬ দফার ভিত্তি নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শিক্ষকের মৌলিক চিন্তাভাবনাও এ দেশের সমাজ-ইতিহাসের গতিধারা নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ তার সেই অবস্থান শুধু হারিয়েই ফেলেনি, নানা হীনতায় ভরা তার বর্তমান ভূমিকা প্রায়ই মানুষকে হতাশ ও বিরক্ত করছে। এর ছাত্রাবাসগুলোর ‘গেস্টরুম নির্যাতন’ মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানাচ্ছে। অথচ তা বন্ধের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের মধ্যে রয়েছে বরফশীতল নীরবতা, যা দেখে মানুষের ভেতর গুমোট কষ্টমিশ্রিত প্রশ্ন, শিক্ষক কী করে নিজ ছাত্রের ওপর পরিচালিত এরূপ বর্বরতা দেখে নীরব থাকতে পারেন?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে শিক্ষা, গবেষণা ও জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে যে মান ও ধারায় পরিচালিত হচ্ছে, তাতে নিকট ভবিষ্যতের দিনগুলোতে তার পক্ষে আরও পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কাই সর্বাধিক। এর গবেষণাগার, গ্রন্থাগার, জার্নাল, নিয়োগ ও পদোন্নতি কাঠামো, গোষ্ঠীগত স্বার্থে উপযুক্ত যাচাই-বাছাই ছাড়াই রাতারাতি গড়ে ওঠা নতুন নতুন বিভাগ, সংস্কৃতিচর্চা, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের ধরন, ছাত্র সংসদ নির্বাচন ইত্যাদি ক্ষেত্রে বর্তমানে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তাতে করে এর পক্ষে রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনে অবদান রাখা তথা নতুন জ্ঞান সৃষ্টি ও নতুনতর উদ্ভাবনার পথে এগিয়ে যাওয়া অনেকটাই দুঃস্বপ্নের মতো। অবশ্য সে রকম স্বপ্ন দেখার আকাঙ্ক্ষা পোষণের চেয়ে সান্ধ্য কোর্সে বেশি বেশি করে সময় দেওয়াটাকেই তাঁরা অধিকতর লাভজনক বিবেচনা করেন বলে তাঁদের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড থেকে প্রতীয়মান হয়। এসব দেখে দেশের স্বল্পজ্ঞানধারী সাধারণ মানুষ কষ্ট পেলেও আমাদের উচ্চশিক্ষিত শিক্ষকেরা এসব নিয়ে আদৌ ভাবিত বলে মনে হয় না; বরং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা এখন ব্যস্ত নীল-সাদা-গোলাপির দ্বন্দ্বে। তবে একটি বিষয়ে তাঁদের মধ্যে নিরঙ্কুশ ঐকমত্য লক্ষ করা যায় এবং তা হচ্ছে সান্ধ্য কোর্স চালু রাখা, যা চালু রাখার জন্য রাষ্ট্রপতির নির্দেশনাকে উপেক্ষা করতেও তাঁরা দ্বিধা করেননি।
গোলাম ফারুক আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরকার বর্তমান বেহাল দশা ও এর চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে এটিকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার দাবিও উঠতে পারে। আর তেমনটি হলে সেটি এখানকার শিক্ষক-কর্মচারীদের চেয়েও অধিকতর হতাশাব্যঞ্জক ঘটনা হবে এর শিক্ষার্থী ও দেশের সাধারণ মানুষের জন্য। তবে উল্লিখিত উদ্বেগকে গুরুত্ব দিয়ে উপলব্ধি করার পরও আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করতে চাই যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার দেড় শ বছর পূর্তির আগেই আবার ঘুরে দাঁড়াবে। কারণ, যে প্রতিষ্ঠানটি এ দেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রতীক এবং যে প্রতিষ্ঠান এ দেশের সমাজ, রাজনীতি, ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতির নির্মাণ ও গঠনপ্রক্রিয়ার অন্যতম অগ্রদূত, সেই প্রতিষ্ঠান সবার চোখের সামনে এভাবে কিছুতেই ক্ষয়ে যেতে পারে না।
আদি উদ্যোক্তা হিসেবে এ প্রতিষ্ঠানকে যাঁরা গড়ে তুলেছিলেন, এর যে শিক্ষক-গবেষকেরা শিক্ষার মানে একে অক্সফোর্ড পদবাচ্যে তুলনীয় হওয়ার পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, এর যে শিক্ষার্থীরা বুকের রক্ত ঢেলে এ দেশের ইতিহাস ও চিন্তার নানা বাঁক নির্মাণ করেছিলেন, তাঁদের অধিকাংশ আজ আর সশরীরে না থাকলেও তাঁদের চিন্তার প্রতিনিধিরা তো প্রান্তিক চরিত্রে হলেও রাষ্ট্রের নানা স্তরে, পৃথিবীর নানা প্রান্তে টিকে আছেন। এমনকি তাঁরা আছেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরেও। আমরা গভীরভাবে বিশ্বাস করি যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকই এর ভগ্নদশায় চরম মানসিক পীড়ন বোধ করেন। কিন্তু শুধু পীড়ন বোধ করলে তো হবে না। পীড়ন বোধিত কষ্টকে সমাধানে রূপান্তরের জন্য এগিয়ে আসতে হবে। এ জন্য রাজপথে নেমে আন্দোলন করার দরকার নেই। শিক্ষকেরা (এ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী ছিলাম বিধায় আপনারা প্রত্যেকে আমার শিক্ষক), আপনারা দয়া করে আপনাদের চিন্তার আন্দোলনটিকে বেগবান করুন। আরও গবেষণা, আরও নতুন জ্ঞান সৃষ্টি এবং বৈশ্বিক স্তরের আরও উন্নততর চিন্তার মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয়টির হৃত গৌরব পুনরুদ্ধারে এগিয়ে আসুন। চিন্তাশীল বিবেকবান মানুষেরা হয়তো বাইরে থেকে আপনাদের পরামর্শ ও সহায়তা দিতে পারবেন। কিন্তু মূল কাজটি আপনাদেরই করতে হবে এবং সেই যোগ্যতা আপনাদের মধ্যে প্রচণ্ডভাবে আছে বলেই আমরা, তথা এ দেশের সাধারণ মানুষ বুকভরা আশা নিয়ে আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
বলা হয়, দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন নেতৃত্বের সংকটে ভুগছে, যার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামও উচ্চারিত হয়। আমরা সাধারণ মানুষ এতে প্রচণ্ড কষ্ট পাই। তো, যে বিশ্ববিদ্যালয়কে জিএইচ ল্যাংলি, আর সি মজুমদার, মাহমুদ হোসেন, আবু সাঈদ চৌধুরী, মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী, আবদুল মতিন চৌধুরী প্রমুখের মতো বলিষ্ঠ চরিত্রের বিদ্বজ্জনেরা নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন, সেই বিশ্ববিদ্যালয় কেন নেতৃত্বের সংকটে ভুগবে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দুই হাজার শিক্ষকের মধ্যে এমন বহু শিক্ষক রয়েছেন, যাঁরা তাঁদের জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও নেতৃত্ব দিয়ে বস্তুতই একে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডে রূপান্তরের সামর্থ্য রাখেন। আমরা আশা করব, ২০৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেড় শ বছর পূর্তির আগেই তাঁরা তাঁদের সেই সর্বোচ্চ সামর্থ্যটুকু ঢেলে দিয়ে একে তার হৃত গৌরব ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হবেন। আমাদের অনেকেই তখন আর থাকব না। কিন্তু এ দেশের অযুত মানুষের হৃদয়ের আকুতিটুকু যদি সেদিন বাস্তবতা খুঁজে পায়, তাহলে এ দেশের জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য সেটি হবে এক বিশাল প্রাপ্তি।
লেখক: আবু তাহের খান,সাবেক পরিচালক, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থা (বিসিক), শিল্প মন্ত্রণালয়; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪