সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
আমরা সবাই বলি, বলে বলে ক্লান্ত ও হতাশ হই, গ্লানিতে পায়; কর্তাব্যক্তিরা অন্তঃসারশূন্য সব কথা বলতে থাকেন। আমরা শুনি, আমাদের ক্ষোভ বাড়ে। উথলে ওঠে বিদ্রোহ। দুর্ভোগ বাড়তেই থাকে; খাদ্যপণ্যের, জ্বালানির মূল্য, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ সবকিছুর দাম বাড়ছে তো বাড়ছেই। বাজারব্যবস্থায় চরম নৈরাজ্য দেখা দিয়েছে। অপরদিকে শ্রমিকের মজুরি, বিশেষ করে চা-শ্রমিকের মজুরির সংবাদ জেনে মাথা ঘুরে যাওয়ার দশা। নতুন বর্ধিত মজুরি মাত্র ১৪৫ টাকা সরকার ও মালিকপক্ষ নির্ধারণ করেছে, ভাবা যায়! এর উপসংহারটা কোথায়, কোন সিদ্ধান্তে গিয়ে আমরা পৌঁছাব? বস্তুত ওই সিদ্ধান্তটাই হলো প্রধান, নইলে আমাদের কথা কর্তাদের কথার চেয়েও মূল্যহীন হয়েই থাকবে।
সিদ্ধান্তটা কিন্তু খুবই সরল। সেটা এই যে ব্যবস্থাটাকে বদলাতে হবে, নইলে আমাদের মুক্তি নেই। বুঝতে হবে যে ব্যবস্থাটা পুঁজিবাদী। অপরাধ ব্যক্তিই করছে, তাকেই দেখা যাচ্ছে সামনে, কিন্তু মূল অপরাধী হচ্ছে ব্যবস্থাটা। সে-ই আসল অপরাধকারী। সে লুকিয়ে থাকে। এই অপরাধীকে চিহ্নিত করা দরকার। এবং তাকে বিদায় করা চাই।
সংশোধনে কুলাবে না, সংস্কার তো সংরক্ষণেরই পদক্ষেপ। উদারনীতিকেরা সংস্কার, সংশোধন ইত্যাদি চিকিৎসার কথা ভাবেন, ব্যবস্থাপত্র দেন, কিন্তু তাতে অপরাধীর স্বভাব-চরিত্রে ও অপরাধলিপ্সায় যে কোনো পরিবর্তন আসছে, তা মোটেই না। এখন তো দেখা যাচ্ছে ব্যবস্থাটা আরও বেশি মরিয়া ও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে, মরণকামড় বসাচ্ছে, পৃথিবীর সর্বত্র নিকৃষ্টমানের মানুষেরা সর্বাধিক ক্ষমতাবান হয়ে উঠছে, তারা সবকিছু তছনছ করে দেওয়ার ব্রত নিয়েছে। পৃথিবী নামের এই গ্রহটিতে মানুষ আর টিকে থাকতে পারবে কি না, সেই প্রশ্নও দেখা দিয়েছে।
ইতিমধ্যে বিশ্বের অন্যত্র যেমন, তেমনি বাংলাদেশে দেখছি আমরা যে পুঁজিবাদীরা নিজেদের ‘আলোকিত স্বার্থ’ রক্ষা করবে, তার ব্যবস্থাটাও অক্ষুণ্ন রাখতে পারছে না। বুর্জোয়া গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় যে সংসদীয় নির্বাচনব্যবস্থা, সেটাও ভেঙে পড়েছে; অর্থাৎ ভেঙে ফেলা হচ্ছে। এক পায়ের ওপর ভরসা করে দাঁড়ানোর জন্য সে ব্যর্থ কসরত করছে। তা নির্বাচনব্যবস্থা না থাকলে কী ঘটতে পারে? হয়তো নৈরাজ্য আসবে। হয়তো অভ্যুত্থান ঘটবে। বামপন্থীরা এমন শক্তিশালী অবস্থানে নেই যে তারা অভ্যুত্থান করবে, অভ্যুত্থান করলে করবে রক্ষণশীলেরা। তেমন ঘটনা নিশ্চয়ই মঙ্গলজনক হবে না।
পুঁজিবাদ ব্যক্তিস্বার্থকে প্রধান করে তোলে, স্বার্থবোধের গোপন জায়গাটাতে নীরবে ঘা দিয়ে ব্যক্তির ভেতরের মুনাফালিপ্সাটাকে জাগিয়ে তোলে। সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরী ‘সাহিত্যে চাবুক’ নামের একটি প্রবন্ধে বলেছেন যে বাংলা ভাষায় ‘মি’ প্রত্যয়যুক্ত শব্দগুলো খুবই নোংরা; ভণ্ডামি, ইতরামি, বাঁদরামি, গুন্ডামি, নোংরামি, ভাঁড়ামি—সবকিছুতেই ওই ‘মি’ হাজির; তবে মানুষের জন্য সবচেয়ে সর্বনেশে হচ্ছে ‘আমি’; কারণ ওই পদার্থটির আধিক্য ঘটলে বিদ্যাবুদ্ধি-কাণ্ডজ্ঞান সবকিছু লোপ পায়। এখন সর্বত্রই কিন্তু ওই ‘আমি’র তাণ্ডব। মধ্যযুগের কবি যে গেয়েছেন গান, ‘আপন আপন করে তুই হারালি তোর যা ছিল আপন’, সেটা এখন অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় জাজ্বল্যমান রূপে সত্য। আমার ‘আমি’ এখন আমরা হতে চায় না; আর হয় যদি তবে ‘তোমাদের’ সঙ্গে যুদ্ধ বাধায়। বোধ ও বিবেকসম্পন্ন মানুষ বলবেন আজ প্রয়োজন সর্বজনীন ‘আমরা’ হওয়া। বলবেন, তার জন্য সাংস্কৃতিক প্রস্তুতি আবশ্যক। আসলে সাংস্কৃতিক প্রস্তুতিও যথেষ্ট নয়, দরকার হবে রাজনৈতিক কাজ, সেই কাজের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের পুঁজিপন্থী ভূমিকার অবসান ঘটল। সমাজ-পরিবর্তন ছাড়া সেটা কিছুতেই সম্ভব নয়।
পরিবর্তনের জন্য অত্যাবশ্যক সাংস্কৃতিক কাজটি বাংলাদেশে আমরা করছি কি? না, করছি না। যেমন ধরা যাক, পাঠাগার। পাঠাগারে গিয়ে তো মানুষ একত্র হতে পারে। বইকে কেন্দ্র করে মেলামেশা সম্ভব। কিন্তু মানুষ তো এখন আর বই পড়ায় আগ্রহী নয়, পড়লেও পাঠাগারে যায় না; ইন্টারনেট, ওয়েবসাইটে টেপাটেপি করে ঘরে বসে যান্ত্রিক বই সংগ্রহ করে নিয়ে কোনায় বসে বসে পড়ে। পাঠাগার কেবল বই সংগ্রহের জায়গা হলে সেখানে লোক পাওয়া কঠিন হবে; হচ্ছেও। পাঠাগারকে সংস্কৃতিচর্চার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা দরকার। পাঠাগার হবে সামাজিকভাবে মিলবার একটি জায়গা, যেখানে মানুষ কেবল বই পড়ার জন্য যাবে না, নানা ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের আকর্ষণেও যাবে। পাঠাগার হওয়া চাই একটি আশ্রয়কেন্দ্র, যেখানে বই নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি নাটক, গান, আবৃত্তি, বিভিন্ন দিবস উদ্যাপন, আলোচনা, বক্তৃতা, খেলাধুলা, শরীরচর্চা প্রতিযোগিতা, অনেক কিছুর আয়োজন করা সম্ভব। সেটা করা গেলে বিকেল হলেই মানুষ ওই আশ্রয়ের দিকে রওনা হবে। ছাত্র, কর্মচারী, শিক্ষক, অবসরভোগী, শ্রমিক, কৃষক, রাজনৈতিক কর্মী—সবাই আসবে। মিলবে মিশবে; সামাজিক হবে। আলোচনা করবে ব্যবস্থা-পরিবর্তনের মতাদর্শ নিয়ে। সবকিছুর ভেতরই মতাদর্শিক বিবেচনাটা থাকবে, মিছরির ভেতর যেমন সুতো থাকত, যে সুতো ছাড়া মিছরি তৈরি করার কথা ভাবা যেত না।
দৃষ্টি দিতে হবে শিশু-কিশোরদের ওপর। খুবই জরুরি হচ্ছে একটি কিশোর আন্দোলন গড়ে তোলা। একসময়ে কিশোর আন্দোলন ছিল; এখন নেই, পুঁজির শাসক সবগুলোকেই গ্রাস করে ফেলেছে। মুকুল ফৌজ গড়ে উঠেছিল পাকিস্তান আন্দোলনের অনুপ্রেরণায়। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর সেই সংগঠন তার প্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলতে থাকে, একসময়ে নিঃশেষ হয়ে যায়। খেলাঘর যুক্ত ছিল কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে; কিন্তু কমিউনিস্ট পার্টি দ্বিখণ্ডিত হওয়া এবং বিভিন্ন স্রোতে বিভক্ত হয়ে পড়ায় খেলাঘর এখন আর নেই বললেই চলে। কচি-কাঁচার মেলা বুর্জোয়া জাতীয়তাবাদী ধারাতে গড়ে উঠেছিল। ওই ধারাও তার ভেতরকার উৎসাহ-উদ্দীপনা হারিয়ে ফেলেছে। কিশোরদের এখন কোনো সংগঠন নেই। তারা স্কুল ও কোচিং সেন্টারে ছোটাছুটি করে, ঘরে ফিরে ইন্টারনেট ও ফেসবুকের ওপর নুইয়ে থাকে, বিচ্ছিন্নতা বৃদ্ধি পায়; অনেকে মাদকাসক্ত হয়, জড়িয়ে পড়ে অপরাধে। কিশোরকে নিয়ে আসা চাই বড় অঙ্গনে। তার সৃষ্টিশীলতা ও দুঃসাহসকে উৎসাহিত করা অত্যাবশ্যক। সৃষ্টিশীলতা বাড়ে সামাজিকতায়; আর সবচেয়ে বড় দুঃসাহসিক কাজটা হলো সামাজিক পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ। দেশব্যাপী একটি কিশোর আন্দোলন গড়ে তোলা আজ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।
যুগ এখন মিডিয়ার। মিডিয়ার এত ক্ষমতা আগে কেউ কখনো দেখেনি। মিডিয়া পুরোপুরি পুঁজিবাদীদের দখলে। পুঁজিবাদের বড় একটা ভরসাও ওই মিডিয়ার ওপরই। বাংলাদেশে সমাজ-পরিবর্তনকামীদের হাতে মিডিয়া নেই। দৈনিক দূরের কথা, একটি সাপ্তাহিকও নেই। খুব দরকার অন্তত একটা সাপ্তাহিক পত্রিকা চালু করার। সেই পত্রিকা দেশ-বিদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতিতে যা ঘটছে, সেগুলো কেন ঘটছে, যা দৃশ্যমান তার পেছনে কোন স্বার্থের কারসাজি কাজ করছে, ঘটনাবলির তাৎপর্য কী, বিদ্যমান ব্যবস্থার সঙ্গে আপাতবিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলোর যোগ কোথায় এবং উত্তরণ কোন পথে সম্ভব, এসব বিষয়ে সপ্তাহে সপ্তাহে আলোচনা করবে। তাতে পাঠকের জ্ঞান যেমন বাড়বে, তেমনি সৃষ্টি হবে অন্যায়ের প্রতি ঘৃণা এবং প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থাকে ভেঙে নতুন ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্দীপনা। সমাজকে যাঁরা বদলাতে চান, তাঁদের পক্ষে সবাই মিলে অন্তত একটি সাপ্তাহিক প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া অত্যাবশ্যক। এটি হবে বড় একটি সাংস্কৃতিক পদক্ষেপ।
স্বাধীনতার পরে মনে হয়েছিল দেশে একটি নাট্য আন্দোলন শুরু হবে। শুরু হয়েছিল, কিন্তু এগোয়নি। শিল্পীরা চলে গেছেন টেলিভিশনে ও সিনেমায়। তেমন গান গাওয়া যায়নি, যা মানুষকে একই সঙ্গে আনন্দ দেবে এবং উদ্দীপ্ত করবে। কবিতা লেখা হচ্ছে ব্যক্তির বিচ্ছিন্নতা নিয়ে, তাতে দুঃখের দুর্বিষহতা যত পাওয়া যাচ্ছে, গভীর কোনো দার্শনিকতা তত পাওয়া যাচ্ছে না।
মোটকথা, বিদ্যমান অন্ধকারে মননশীলতা ও সৃজনশীলতার আলো জ্বালা চাই, যে আলো সম্ভব করবে সাংস্কৃতিক জাগরণের এবং পথ দেখাবে সামাজিক বিপ্লবের, যার মধ্য দিয়ে উৎপাদনব্যবস্থা বর্তমান পুঁজিবাদী স্তরে আর আটক থাকবে না, বন্ধন ভেঙে, সমাজতান্ত্রিক স্তরে উন্নীত হবে। জীবনে আসবে প্রাচুর্য, জীবনযাপন হবে আনন্দময়। সে কাজ একা কেউ করতে পারবে না, অল্প কজনে কুলাবে না; তার জন্য পাড়ায়-মহল্লায়, যেমন শহরে, তেমনি গ্রামগঞ্জে, সব ধরনের বসতিতে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তোলা চাই। ওইখানে পরিবর্তনকামী মানুষের সাংস্কৃতিক লালন-পালন চলবে, যে মানুষ সোৎসাহে রাজনীতিতে যোগ দেবে। রাজনীতি বুর্জোয়াদের ক্ষমতা-পরিবর্তনের ক্রীড়া-কৌতুকে সীমিত থাকবে না, হয়ে দাঁড়াবে বিপ্লবীদের সমাজ-পরিবর্তনের পদক্ষেপ।
পৃথিবীব্যাপী আজ পুঁজিবাদবিরোধী চেতনা প্রখর হয়ে উঠেছে; সেই চেতনাকে সামাজিক বিপ্লবের পথে এবং সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে অগ্রসর করার ওপরই কিন্তু নির্ভর করছে মানবজাতির ভবিষ্যৎ।
মধ্যযুগের কবির একটা পরামর্শ ছিল: ‘এবার তোর ভরা আপন তুই বিলিয়ে দেবে যারে তারে।’ ওই পরামর্শে কিন্তু কুলাবে না। কেননা, বিপদটা হবে এই যে আমার আপন যদি আপনে ভরপুর হয়ে যায়, যদি ভারী হয়ে ওঠে স্বার্থে ও সম্পদলিপ্সায়, তবে সে ‘আপন’ নির্ঘাত ডুববে এবং নিজে ডোবার আগে অন্যদের ভরাডুবি ঘটাতে চাইবে এবং তাতে করে সবারই হবে ডোবার দশা। সেটাই এখন ঘটছে, বিশ্বময়। আমার ‘আপন’ ভাসবে যদি নিজে ভারী না-হয়ে অপরের সঙ্গে একত্রে ভাসতে চায় তবেই। মুশকিল যা ঘটানোর ঘটাবে সম্পদের ব্যক্তিমালিকানা। ঘটাচ্ছেও। মানুষের পক্ষে তাই মানুষ থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে, সামাজিকতা হারিয়ে সে অধম হয়ে পড়ছে বন্য প্রাণীরও।
ক্ষমতাধরেরা ও বচনবাগীশরা যা ইচ্ছা বলুন, বলতে থাকুন, আসল কথাটা হলো সমাজ-পরিবর্তন। সেটা যেন না ভুলি। এটাও যেন না ভুলি যে পালানোর কোনো উপায় নেই, পালালেও বাঁচা যাবে না এবং বাঁচা মানে কেবল টিকে থাকা নয়, মানুষের মতো বাঁচা।
কিন্তু আমরা বাঁচব, অবশ্যই জয়ী হব, যদি আমরা যুদ্ধে থাকি। ভরসা এই যে আমরা একা নই। বিশ্বজুড়ে মানুষ এখন যুদ্ধে আছে। প্রতিটি সমাজেই ব্যক্তিমানুষ যতই সন্ত্রস্ত হোক, ভয় পাক, সমষ্টিবদ্ধ মানুষ লড়ছে এবং লড়তে গিয়েই বুঝে নিচ্ছে যে বাঁচতে হলে লড়তে হবে। বাঁচার সঙ্গে মরার যে যুদ্ধ, তাতে পরাজয়ের কোনো স্থান নেই। ইতিহাস এগোচ্ছে এবং এগোবে। ইতিহাসে বাঁক আছে, কিন্তু থেমে-যাওয়া নেই। ইতিহাসকে এগিয়ে নেওয়ার সংগ্রামে আমরা বাংলাদেশের মানুষেরাও আছি। অতীতে ছিলাম, আছি বর্তমানে এবং থাকব ভবিষ্যতেও। তবে ইতিহাস এমনি এমনি এগোয় না; তার জন্য সাংস্কৃতিক প্রস্তুতি চাই, অনুশীলন চাই জ্ঞানের ও সৃজনশীলতার। সবার ওপরে চাই সংঘবদ্ধতা।
আমরা সবাই বলি, বলে বলে ক্লান্ত ও হতাশ হই, গ্লানিতে পায়; কর্তাব্যক্তিরা অন্তঃসারশূন্য সব কথা বলতে থাকেন। আমরা শুনি, আমাদের ক্ষোভ বাড়ে। উথলে ওঠে বিদ্রোহ। দুর্ভোগ বাড়তেই থাকে; খাদ্যপণ্যের, জ্বালানির মূল্য, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ সবকিছুর দাম বাড়ছে তো বাড়ছেই। বাজারব্যবস্থায় চরম নৈরাজ্য দেখা দিয়েছে। অপরদিকে শ্রমিকের মজুরি, বিশেষ করে চা-শ্রমিকের মজুরির সংবাদ জেনে মাথা ঘুরে যাওয়ার দশা। নতুন বর্ধিত মজুরি মাত্র ১৪৫ টাকা সরকার ও মালিকপক্ষ নির্ধারণ করেছে, ভাবা যায়! এর উপসংহারটা কোথায়, কোন সিদ্ধান্তে গিয়ে আমরা পৌঁছাব? বস্তুত ওই সিদ্ধান্তটাই হলো প্রধান, নইলে আমাদের কথা কর্তাদের কথার চেয়েও মূল্যহীন হয়েই থাকবে।
সিদ্ধান্তটা কিন্তু খুবই সরল। সেটা এই যে ব্যবস্থাটাকে বদলাতে হবে, নইলে আমাদের মুক্তি নেই। বুঝতে হবে যে ব্যবস্থাটা পুঁজিবাদী। অপরাধ ব্যক্তিই করছে, তাকেই দেখা যাচ্ছে সামনে, কিন্তু মূল অপরাধী হচ্ছে ব্যবস্থাটা। সে-ই আসল অপরাধকারী। সে লুকিয়ে থাকে। এই অপরাধীকে চিহ্নিত করা দরকার। এবং তাকে বিদায় করা চাই।
সংশোধনে কুলাবে না, সংস্কার তো সংরক্ষণেরই পদক্ষেপ। উদারনীতিকেরা সংস্কার, সংশোধন ইত্যাদি চিকিৎসার কথা ভাবেন, ব্যবস্থাপত্র দেন, কিন্তু তাতে অপরাধীর স্বভাব-চরিত্রে ও অপরাধলিপ্সায় যে কোনো পরিবর্তন আসছে, তা মোটেই না। এখন তো দেখা যাচ্ছে ব্যবস্থাটা আরও বেশি মরিয়া ও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে, মরণকামড় বসাচ্ছে, পৃথিবীর সর্বত্র নিকৃষ্টমানের মানুষেরা সর্বাধিক ক্ষমতাবান হয়ে উঠছে, তারা সবকিছু তছনছ করে দেওয়ার ব্রত নিয়েছে। পৃথিবী নামের এই গ্রহটিতে মানুষ আর টিকে থাকতে পারবে কি না, সেই প্রশ্নও দেখা দিয়েছে।
ইতিমধ্যে বিশ্বের অন্যত্র যেমন, তেমনি বাংলাদেশে দেখছি আমরা যে পুঁজিবাদীরা নিজেদের ‘আলোকিত স্বার্থ’ রক্ষা করবে, তার ব্যবস্থাটাও অক্ষুণ্ন রাখতে পারছে না। বুর্জোয়া গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় যে সংসদীয় নির্বাচনব্যবস্থা, সেটাও ভেঙে পড়েছে; অর্থাৎ ভেঙে ফেলা হচ্ছে। এক পায়ের ওপর ভরসা করে দাঁড়ানোর জন্য সে ব্যর্থ কসরত করছে। তা নির্বাচনব্যবস্থা না থাকলে কী ঘটতে পারে? হয়তো নৈরাজ্য আসবে। হয়তো অভ্যুত্থান ঘটবে। বামপন্থীরা এমন শক্তিশালী অবস্থানে নেই যে তারা অভ্যুত্থান করবে, অভ্যুত্থান করলে করবে রক্ষণশীলেরা। তেমন ঘটনা নিশ্চয়ই মঙ্গলজনক হবে না।
পুঁজিবাদ ব্যক্তিস্বার্থকে প্রধান করে তোলে, স্বার্থবোধের গোপন জায়গাটাতে নীরবে ঘা দিয়ে ব্যক্তির ভেতরের মুনাফালিপ্সাটাকে জাগিয়ে তোলে। সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরী ‘সাহিত্যে চাবুক’ নামের একটি প্রবন্ধে বলেছেন যে বাংলা ভাষায় ‘মি’ প্রত্যয়যুক্ত শব্দগুলো খুবই নোংরা; ভণ্ডামি, ইতরামি, বাঁদরামি, গুন্ডামি, নোংরামি, ভাঁড়ামি—সবকিছুতেই ওই ‘মি’ হাজির; তবে মানুষের জন্য সবচেয়ে সর্বনেশে হচ্ছে ‘আমি’; কারণ ওই পদার্থটির আধিক্য ঘটলে বিদ্যাবুদ্ধি-কাণ্ডজ্ঞান সবকিছু লোপ পায়। এখন সর্বত্রই কিন্তু ওই ‘আমি’র তাণ্ডব। মধ্যযুগের কবি যে গেয়েছেন গান, ‘আপন আপন করে তুই হারালি তোর যা ছিল আপন’, সেটা এখন অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় জাজ্বল্যমান রূপে সত্য। আমার ‘আমি’ এখন আমরা হতে চায় না; আর হয় যদি তবে ‘তোমাদের’ সঙ্গে যুদ্ধ বাধায়। বোধ ও বিবেকসম্পন্ন মানুষ বলবেন আজ প্রয়োজন সর্বজনীন ‘আমরা’ হওয়া। বলবেন, তার জন্য সাংস্কৃতিক প্রস্তুতি আবশ্যক। আসলে সাংস্কৃতিক প্রস্তুতিও যথেষ্ট নয়, দরকার হবে রাজনৈতিক কাজ, সেই কাজের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের পুঁজিপন্থী ভূমিকার অবসান ঘটল। সমাজ-পরিবর্তন ছাড়া সেটা কিছুতেই সম্ভব নয়।
পরিবর্তনের জন্য অত্যাবশ্যক সাংস্কৃতিক কাজটি বাংলাদেশে আমরা করছি কি? না, করছি না। যেমন ধরা যাক, পাঠাগার। পাঠাগারে গিয়ে তো মানুষ একত্র হতে পারে। বইকে কেন্দ্র করে মেলামেশা সম্ভব। কিন্তু মানুষ তো এখন আর বই পড়ায় আগ্রহী নয়, পড়লেও পাঠাগারে যায় না; ইন্টারনেট, ওয়েবসাইটে টেপাটেপি করে ঘরে বসে যান্ত্রিক বই সংগ্রহ করে নিয়ে কোনায় বসে বসে পড়ে। পাঠাগার কেবল বই সংগ্রহের জায়গা হলে সেখানে লোক পাওয়া কঠিন হবে; হচ্ছেও। পাঠাগারকে সংস্কৃতিচর্চার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা দরকার। পাঠাগার হবে সামাজিকভাবে মিলবার একটি জায়গা, যেখানে মানুষ কেবল বই পড়ার জন্য যাবে না, নানা ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের আকর্ষণেও যাবে। পাঠাগার হওয়া চাই একটি আশ্রয়কেন্দ্র, যেখানে বই নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি নাটক, গান, আবৃত্তি, বিভিন্ন দিবস উদ্যাপন, আলোচনা, বক্তৃতা, খেলাধুলা, শরীরচর্চা প্রতিযোগিতা, অনেক কিছুর আয়োজন করা সম্ভব। সেটা করা গেলে বিকেল হলেই মানুষ ওই আশ্রয়ের দিকে রওনা হবে। ছাত্র, কর্মচারী, শিক্ষক, অবসরভোগী, শ্রমিক, কৃষক, রাজনৈতিক কর্মী—সবাই আসবে। মিলবে মিশবে; সামাজিক হবে। আলোচনা করবে ব্যবস্থা-পরিবর্তনের মতাদর্শ নিয়ে। সবকিছুর ভেতরই মতাদর্শিক বিবেচনাটা থাকবে, মিছরির ভেতর যেমন সুতো থাকত, যে সুতো ছাড়া মিছরি তৈরি করার কথা ভাবা যেত না।
দৃষ্টি দিতে হবে শিশু-কিশোরদের ওপর। খুবই জরুরি হচ্ছে একটি কিশোর আন্দোলন গড়ে তোলা। একসময়ে কিশোর আন্দোলন ছিল; এখন নেই, পুঁজির শাসক সবগুলোকেই গ্রাস করে ফেলেছে। মুকুল ফৌজ গড়ে উঠেছিল পাকিস্তান আন্দোলনের অনুপ্রেরণায়। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর সেই সংগঠন তার প্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলতে থাকে, একসময়ে নিঃশেষ হয়ে যায়। খেলাঘর যুক্ত ছিল কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে; কিন্তু কমিউনিস্ট পার্টি দ্বিখণ্ডিত হওয়া এবং বিভিন্ন স্রোতে বিভক্ত হয়ে পড়ায় খেলাঘর এখন আর নেই বললেই চলে। কচি-কাঁচার মেলা বুর্জোয়া জাতীয়তাবাদী ধারাতে গড়ে উঠেছিল। ওই ধারাও তার ভেতরকার উৎসাহ-উদ্দীপনা হারিয়ে ফেলেছে। কিশোরদের এখন কোনো সংগঠন নেই। তারা স্কুল ও কোচিং সেন্টারে ছোটাছুটি করে, ঘরে ফিরে ইন্টারনেট ও ফেসবুকের ওপর নুইয়ে থাকে, বিচ্ছিন্নতা বৃদ্ধি পায়; অনেকে মাদকাসক্ত হয়, জড়িয়ে পড়ে অপরাধে। কিশোরকে নিয়ে আসা চাই বড় অঙ্গনে। তার সৃষ্টিশীলতা ও দুঃসাহসকে উৎসাহিত করা অত্যাবশ্যক। সৃষ্টিশীলতা বাড়ে সামাজিকতায়; আর সবচেয়ে বড় দুঃসাহসিক কাজটা হলো সামাজিক পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ। দেশব্যাপী একটি কিশোর আন্দোলন গড়ে তোলা আজ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।
যুগ এখন মিডিয়ার। মিডিয়ার এত ক্ষমতা আগে কেউ কখনো দেখেনি। মিডিয়া পুরোপুরি পুঁজিবাদীদের দখলে। পুঁজিবাদের বড় একটা ভরসাও ওই মিডিয়ার ওপরই। বাংলাদেশে সমাজ-পরিবর্তনকামীদের হাতে মিডিয়া নেই। দৈনিক দূরের কথা, একটি সাপ্তাহিকও নেই। খুব দরকার অন্তত একটা সাপ্তাহিক পত্রিকা চালু করার। সেই পত্রিকা দেশ-বিদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতিতে যা ঘটছে, সেগুলো কেন ঘটছে, যা দৃশ্যমান তার পেছনে কোন স্বার্থের কারসাজি কাজ করছে, ঘটনাবলির তাৎপর্য কী, বিদ্যমান ব্যবস্থার সঙ্গে আপাতবিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলোর যোগ কোথায় এবং উত্তরণ কোন পথে সম্ভব, এসব বিষয়ে সপ্তাহে সপ্তাহে আলোচনা করবে। তাতে পাঠকের জ্ঞান যেমন বাড়বে, তেমনি সৃষ্টি হবে অন্যায়ের প্রতি ঘৃণা এবং প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থাকে ভেঙে নতুন ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্দীপনা। সমাজকে যাঁরা বদলাতে চান, তাঁদের পক্ষে সবাই মিলে অন্তত একটি সাপ্তাহিক প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া অত্যাবশ্যক। এটি হবে বড় একটি সাংস্কৃতিক পদক্ষেপ।
স্বাধীনতার পরে মনে হয়েছিল দেশে একটি নাট্য আন্দোলন শুরু হবে। শুরু হয়েছিল, কিন্তু এগোয়নি। শিল্পীরা চলে গেছেন টেলিভিশনে ও সিনেমায়। তেমন গান গাওয়া যায়নি, যা মানুষকে একই সঙ্গে আনন্দ দেবে এবং উদ্দীপ্ত করবে। কবিতা লেখা হচ্ছে ব্যক্তির বিচ্ছিন্নতা নিয়ে, তাতে দুঃখের দুর্বিষহতা যত পাওয়া যাচ্ছে, গভীর কোনো দার্শনিকতা তত পাওয়া যাচ্ছে না।
মোটকথা, বিদ্যমান অন্ধকারে মননশীলতা ও সৃজনশীলতার আলো জ্বালা চাই, যে আলো সম্ভব করবে সাংস্কৃতিক জাগরণের এবং পথ দেখাবে সামাজিক বিপ্লবের, যার মধ্য দিয়ে উৎপাদনব্যবস্থা বর্তমান পুঁজিবাদী স্তরে আর আটক থাকবে না, বন্ধন ভেঙে, সমাজতান্ত্রিক স্তরে উন্নীত হবে। জীবনে আসবে প্রাচুর্য, জীবনযাপন হবে আনন্দময়। সে কাজ একা কেউ করতে পারবে না, অল্প কজনে কুলাবে না; তার জন্য পাড়ায়-মহল্লায়, যেমন শহরে, তেমনি গ্রামগঞ্জে, সব ধরনের বসতিতে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তোলা চাই। ওইখানে পরিবর্তনকামী মানুষের সাংস্কৃতিক লালন-পালন চলবে, যে মানুষ সোৎসাহে রাজনীতিতে যোগ দেবে। রাজনীতি বুর্জোয়াদের ক্ষমতা-পরিবর্তনের ক্রীড়া-কৌতুকে সীমিত থাকবে না, হয়ে দাঁড়াবে বিপ্লবীদের সমাজ-পরিবর্তনের পদক্ষেপ।
পৃথিবীব্যাপী আজ পুঁজিবাদবিরোধী চেতনা প্রখর হয়ে উঠেছে; সেই চেতনাকে সামাজিক বিপ্লবের পথে এবং সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে অগ্রসর করার ওপরই কিন্তু নির্ভর করছে মানবজাতির ভবিষ্যৎ।
মধ্যযুগের কবির একটা পরামর্শ ছিল: ‘এবার তোর ভরা আপন তুই বিলিয়ে দেবে যারে তারে।’ ওই পরামর্শে কিন্তু কুলাবে না। কেননা, বিপদটা হবে এই যে আমার আপন যদি আপনে ভরপুর হয়ে যায়, যদি ভারী হয়ে ওঠে স্বার্থে ও সম্পদলিপ্সায়, তবে সে ‘আপন’ নির্ঘাত ডুববে এবং নিজে ডোবার আগে অন্যদের ভরাডুবি ঘটাতে চাইবে এবং তাতে করে সবারই হবে ডোবার দশা। সেটাই এখন ঘটছে, বিশ্বময়। আমার ‘আপন’ ভাসবে যদি নিজে ভারী না-হয়ে অপরের সঙ্গে একত্রে ভাসতে চায় তবেই। মুশকিল যা ঘটানোর ঘটাবে সম্পদের ব্যক্তিমালিকানা। ঘটাচ্ছেও। মানুষের পক্ষে তাই মানুষ থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে, সামাজিকতা হারিয়ে সে অধম হয়ে পড়ছে বন্য প্রাণীরও।
ক্ষমতাধরেরা ও বচনবাগীশরা যা ইচ্ছা বলুন, বলতে থাকুন, আসল কথাটা হলো সমাজ-পরিবর্তন। সেটা যেন না ভুলি। এটাও যেন না ভুলি যে পালানোর কোনো উপায় নেই, পালালেও বাঁচা যাবে না এবং বাঁচা মানে কেবল টিকে থাকা নয়, মানুষের মতো বাঁচা।
কিন্তু আমরা বাঁচব, অবশ্যই জয়ী হব, যদি আমরা যুদ্ধে থাকি। ভরসা এই যে আমরা একা নই। বিশ্বজুড়ে মানুষ এখন যুদ্ধে আছে। প্রতিটি সমাজেই ব্যক্তিমানুষ যতই সন্ত্রস্ত হোক, ভয় পাক, সমষ্টিবদ্ধ মানুষ লড়ছে এবং লড়তে গিয়েই বুঝে নিচ্ছে যে বাঁচতে হলে লড়তে হবে। বাঁচার সঙ্গে মরার যে যুদ্ধ, তাতে পরাজয়ের কোনো স্থান নেই। ইতিহাস এগোচ্ছে এবং এগোবে। ইতিহাসে বাঁক আছে, কিন্তু থেমে-যাওয়া নেই। ইতিহাসকে এগিয়ে নেওয়ার সংগ্রামে আমরা বাংলাদেশের মানুষেরাও আছি। অতীতে ছিলাম, আছি বর্তমানে এবং থাকব ভবিষ্যতেও। তবে ইতিহাস এমনি এমনি এগোয় না; তার জন্য সাংস্কৃতিক প্রস্তুতি চাই, অনুশীলন চাই জ্ঞানের ও সৃজনশীলতার। সবার ওপরে চাই সংঘবদ্ধতা।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪