বাসব রায়, কবি
প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে প্রশাসনের বড় কর্তাব্যক্তিদের রাষ্ট্র পরিচালনায় ভূমিকা রাখতে হয়। এটি তাঁদের রুটিনমাফিক দায়িত্ব। বিসিএস পাস করে নানা রকম পদ-পদবি পেরিয়ে প্রশাসনের উচ্চ পদে আসীন ব্যক্তিরা চাকরি-পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে নেমে পড়েন। চাকরিজনিত কারণে রাষ্ট্র পরিচালনার বিভিন্ন কূটকৌশল তাঁদের নখদর্পণে থাকে। সুতরাং রাজনীতির মোহ তাঁদের মধ্যে জাগতে পারে, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
দেশ পরিচালনায় আমলাদের ভূমিকা বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ। সব সরকারের আমলেই আমলারা বড় বড় রাজনৈতিক পদ-পদবি কুক্ষিগত করে ফেলেন স্বীয় যোগ্যতায় এবং রাষ্ট্রীয় কাজে দক্ষতার পরিচয় দেন, এটি বলার অপেক্ষা রাখে না। সরকার পরিচালনায় এবং রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আমলারা সরকারকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। দলবদ্ধ আমলারা ইচ্ছেমতো সরকার পরিচালনায় ভূমিকা রাখতে সচেষ্ট হন। ফলে কখনো কখনো রাষ্ট্র এবং সরকার বিতর্কের মধ্যে পড়ে যায়। জনগণের সঙ্গে সম্পর্কহীন আমলারা জনস্বার্থে খুব একটা কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেন না। কিন্তু তাঁরা রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ নিয়ে রাজনৈতিক দলের হয়ে পার্লামেন্ট সদস্য থেকে মন্ত্রিত্ব পর্যন্ত বাগিয়ে নিতে সক্ষম হন।
এহেন দূরদর্শী আমলাদের অনেকেই রাজনৈতিক অবস্থানে আসীন হয়ে আইনপ্রণেতাসহ মন্ত্রী বনে যান। জনগণবিচ্ছিন্ন এসব আমলা মেধাবী এবং সরকার পরিচালনায় দক্ষতার পরিচয় দেন বটে, তবে স্থানীয় পর্যায়ে সাধারণ জনগণের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্কটা রাজা বনাম প্রজার মতোই থেকে যায়। এতে মাঠপর্যায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং ভুঁইফোড় রাজনৈতিক কর্মীদের আবির্ভাব ঘটে। এসব কর্মীর দাপট এবং ক্ষমতা কোথাও কোথাও সরকারের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। অরাজনৈতিক নেতৃত্ব জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি সহানুভূতিশীল হতে ব্যর্থ হয়। আর নেতার হাতে গড়া আনকোরা কর্মীরা জনগণ পর্যন্ত নেতাকে পৌঁছাতে চান না, পাছে তাঁদের অভীষ্ট লক্ষ্যের ব্যাঘাত হয় বা স্বার্থের হানি হয়।
সামগ্রিক ভাবনায় দেখা যায়, বিজ্ঞ আমলারা আমলা হিসেবেই বেশ যোগ্যতার পরিচয় দেন, কিন্তু রাজনৈতিক ব্যাপকতায় সবকিছু সামলে ওঠা তাঁদের জন্য বেশ কষ্টকর হয়ে যায়। দীর্ঘদিন আমলাগিরি করার জন্য স্বভাবতই জনসাধারণ থেকে তাঁরা বিচ্ছিন্ন থাকেন। এসব আমলা ফাইলবন্দী জীবনে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন। পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে এসে ফাইল আর জনগণকে গুলিয়ে ফেলেন একসঙ্গে, ফলে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। জনগণ ধীরে ধীরে এসব নেতার থেকে দূরত্বে চলে যায় আর নেতাও জনগণের কামড় থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলতে চান। একটি অফিসের বিশেষ একটি বা দুটি শাখা পরিচালনার অভিজ্ঞতা থেকে একটি দেশ চালনার স্পৃহা তাঁদের আসে কোত্থেকে, এটাই মাথায় আসে না! তাঁরা হতে পারেন অফিসবান্ধব, তবে জনবান্ধব ততটা নন।
তৃণমূল পর্যায়ের মানুষেরা তাঁদের সংসদীয় আসনের সদস্যের কাছে দাবি-দাওয়া তুলে ধরতে চান। চান এসবের সুষ্ঠু সমাধান। কিন্তু জনবিচ্ছিন্ন নেতারা তৃণমূলের জনগণকে বাড়তি ঝামেলা মনে করেন। যেহেতু কর্মজীবনে এসব নেতা অফিসকক্ষে কাটিয়েছেন তাঁর দপ্তরের জনা চারেক বা পাঁচেক লোক নিয়ে অথবা মাঠপর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে নেতাদের তোষামোদে ফরমাশ পালন করেছেন আর এতেই স্বপ্ন দেখেছেন একদিন তিনি রাজনৈতিক বড় নেতা হবেন, সেহেতু জনগণ বনাম নেতৃত্ব একটি বড়সড় গ্যাপে আটকে পড়ে, যা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন।
আমলাতন্ত্রের ধারক-বাহকদের ধারাবাহিকভাবে দেশ পরিচালনা বা দল পরিচালনায় সফল হওয়ার গৌরব কম। তাঁরা নেতা হন বা নেতা সাজেন; জনগণ উপস্থিত চাকচিক্য আর বাগাড়ম্বরে চমকিত হয়ে সমর্থন করে, কিন্তু পরক্ষণেই সেসব বিভ্রান্তি থেকে বেরিয়ে আসে। জনগণের নেতা হতে হলে জনগণের ভালোবাসায় তা হওয়া উচিত। হঠাৎ আকাশ থেকে ধপাস ধপাস করে পড়ে সঙ্গে সঙ্গেই নেতা হওয়াদের দ্বারা দেশ ও জাতি উপকৃত হতে পারে কি না, সেটা বিচারের ভার জনগণের। কিন্তু এতে করে রাজনৈতিক অঙ্গনে হাজার হাজার দালাল তৈরি হয়েছে বা হচ্ছে, তাতে সন্দেহ নেই। আর এসব দালালের কাছে নেতৃত্ব এখন বন্দী, জনগণ অসহায় এবং আতঙ্কিত।
লেখক: বাসব রায়, কবি
প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে প্রশাসনের বড় কর্তাব্যক্তিদের রাষ্ট্র পরিচালনায় ভূমিকা রাখতে হয়। এটি তাঁদের রুটিনমাফিক দায়িত্ব। বিসিএস পাস করে নানা রকম পদ-পদবি পেরিয়ে প্রশাসনের উচ্চ পদে আসীন ব্যক্তিরা চাকরি-পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে নেমে পড়েন। চাকরিজনিত কারণে রাষ্ট্র পরিচালনার বিভিন্ন কূটকৌশল তাঁদের নখদর্পণে থাকে। সুতরাং রাজনীতির মোহ তাঁদের মধ্যে জাগতে পারে, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
দেশ পরিচালনায় আমলাদের ভূমিকা বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ। সব সরকারের আমলেই আমলারা বড় বড় রাজনৈতিক পদ-পদবি কুক্ষিগত করে ফেলেন স্বীয় যোগ্যতায় এবং রাষ্ট্রীয় কাজে দক্ষতার পরিচয় দেন, এটি বলার অপেক্ষা রাখে না। সরকার পরিচালনায় এবং রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আমলারা সরকারকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। দলবদ্ধ আমলারা ইচ্ছেমতো সরকার পরিচালনায় ভূমিকা রাখতে সচেষ্ট হন। ফলে কখনো কখনো রাষ্ট্র এবং সরকার বিতর্কের মধ্যে পড়ে যায়। জনগণের সঙ্গে সম্পর্কহীন আমলারা জনস্বার্থে খুব একটা কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেন না। কিন্তু তাঁরা রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ নিয়ে রাজনৈতিক দলের হয়ে পার্লামেন্ট সদস্য থেকে মন্ত্রিত্ব পর্যন্ত বাগিয়ে নিতে সক্ষম হন।
এহেন দূরদর্শী আমলাদের অনেকেই রাজনৈতিক অবস্থানে আসীন হয়ে আইনপ্রণেতাসহ মন্ত্রী বনে যান। জনগণবিচ্ছিন্ন এসব আমলা মেধাবী এবং সরকার পরিচালনায় দক্ষতার পরিচয় দেন বটে, তবে স্থানীয় পর্যায়ে সাধারণ জনগণের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্কটা রাজা বনাম প্রজার মতোই থেকে যায়। এতে মাঠপর্যায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং ভুঁইফোড় রাজনৈতিক কর্মীদের আবির্ভাব ঘটে। এসব কর্মীর দাপট এবং ক্ষমতা কোথাও কোথাও সরকারের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। অরাজনৈতিক নেতৃত্ব জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি সহানুভূতিশীল হতে ব্যর্থ হয়। আর নেতার হাতে গড়া আনকোরা কর্মীরা জনগণ পর্যন্ত নেতাকে পৌঁছাতে চান না, পাছে তাঁদের অভীষ্ট লক্ষ্যের ব্যাঘাত হয় বা স্বার্থের হানি হয়।
সামগ্রিক ভাবনায় দেখা যায়, বিজ্ঞ আমলারা আমলা হিসেবেই বেশ যোগ্যতার পরিচয় দেন, কিন্তু রাজনৈতিক ব্যাপকতায় সবকিছু সামলে ওঠা তাঁদের জন্য বেশ কষ্টকর হয়ে যায়। দীর্ঘদিন আমলাগিরি করার জন্য স্বভাবতই জনসাধারণ থেকে তাঁরা বিচ্ছিন্ন থাকেন। এসব আমলা ফাইলবন্দী জীবনে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন। পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে এসে ফাইল আর জনগণকে গুলিয়ে ফেলেন একসঙ্গে, ফলে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। জনগণ ধীরে ধীরে এসব নেতার থেকে দূরত্বে চলে যায় আর নেতাও জনগণের কামড় থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলতে চান। একটি অফিসের বিশেষ একটি বা দুটি শাখা পরিচালনার অভিজ্ঞতা থেকে একটি দেশ চালনার স্পৃহা তাঁদের আসে কোত্থেকে, এটাই মাথায় আসে না! তাঁরা হতে পারেন অফিসবান্ধব, তবে জনবান্ধব ততটা নন।
তৃণমূল পর্যায়ের মানুষেরা তাঁদের সংসদীয় আসনের সদস্যের কাছে দাবি-দাওয়া তুলে ধরতে চান। চান এসবের সুষ্ঠু সমাধান। কিন্তু জনবিচ্ছিন্ন নেতারা তৃণমূলের জনগণকে বাড়তি ঝামেলা মনে করেন। যেহেতু কর্মজীবনে এসব নেতা অফিসকক্ষে কাটিয়েছেন তাঁর দপ্তরের জনা চারেক বা পাঁচেক লোক নিয়ে অথবা মাঠপর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে নেতাদের তোষামোদে ফরমাশ পালন করেছেন আর এতেই স্বপ্ন দেখেছেন একদিন তিনি রাজনৈতিক বড় নেতা হবেন, সেহেতু জনগণ বনাম নেতৃত্ব একটি বড়সড় গ্যাপে আটকে পড়ে, যা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন।
আমলাতন্ত্রের ধারক-বাহকদের ধারাবাহিকভাবে দেশ পরিচালনা বা দল পরিচালনায় সফল হওয়ার গৌরব কম। তাঁরা নেতা হন বা নেতা সাজেন; জনগণ উপস্থিত চাকচিক্য আর বাগাড়ম্বরে চমকিত হয়ে সমর্থন করে, কিন্তু পরক্ষণেই সেসব বিভ্রান্তি থেকে বেরিয়ে আসে। জনগণের নেতা হতে হলে জনগণের ভালোবাসায় তা হওয়া উচিত। হঠাৎ আকাশ থেকে ধপাস ধপাস করে পড়ে সঙ্গে সঙ্গেই নেতা হওয়াদের দ্বারা দেশ ও জাতি উপকৃত হতে পারে কি না, সেটা বিচারের ভার জনগণের। কিন্তু এতে করে রাজনৈতিক অঙ্গনে হাজার হাজার দালাল তৈরি হয়েছে বা হচ্ছে, তাতে সন্দেহ নেই। আর এসব দালালের কাছে নেতৃত্ব এখন বন্দী, জনগণ অসহায় এবং আতঙ্কিত।
লেখক: বাসব রায়, কবি
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪