মামুনুর রশীদ
দুর্নীতি দমনের জন্য যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, সেগুলো বহু আগে থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের লোকেরা নানাভাবে দুর্নীতির সঙ্গে অথবা প্রভাবশালীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়েছেন।
আবার এসেছে ডিসেম্বর। বর্ষ পরিক্রমায় বিষয়টি স্বাভাবিক বটে। কিন্তু এই শীতকাল আবার বাঙালির জীবনে এক আবেগের মাস। আন্দোলন, সংগ্রাম এবং যুদ্ধের মাস। আজ থেকে ৫১ বছর আগে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের শেষ দিনগুলো আমরা দেখেছি। দেশ স্বাধীন হয়েছিল। অনেক সন্তান ঘরে ফিরেছিল, অনেকেই ঘরে ফেরেনি। যেসব মৌল আদর্শের ভিত্তিতে দেশটা স্বাধীন হয়েছিল সে-ও আজ ক্লিশে। সামাজিক ও রাজনীতিক জীবনে বিশৃঙ্খলা বেড়েছে। একজন আরেকজনকে হুমকি দিচ্ছে ‘খেলা হবে’।
একাত্তরে যেমন আমরা সবাই ছিলাম ভাই ভাই, আজ সে পরিস্থিতি নেই। অনেকটা মুখোমুখিই দাঁড়িয়ে গিয়েছি। সেই ডিসেম্বরে আমি ছিলাম কলকাতায়। রণাঙ্গন থেকে এসেছিলাম স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। অশেষ কষ্ট ভোগ করে এক অনিশ্চয়তায় স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পীদের নিয়ে স্বপ্ন রচনা করেছিলাম। তিন বছর পরেই যেন সব পাল্টে গেল। দেশের বেতারের নামটাও পাল্টে গেল। হয়ে গেল রেডিও বাংলাদেশ। আবার সেই মিলিটারি। আগের মিলিটারি ছিল অচেনা। এবারের মিলিটারি অচেনা নয়, আমাদেরই ভাই-বেরাদার।
শত্রু এবার ঘরের। মুক্তিযুদ্ধের কথা কেউ মনে রাখে না। নতুন প্রজন্ম আসে, তাদের যুদ্ধের কষ্টের কথা মনে থাকার কথা নয়; বরং তাদের জীবনযাপন যদি কষ্টের হয়, তাহলে আগের প্রজন্মকেই দোষারোপ করে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের বড় কষ্ট হয়। আমরা যখন দেখি যে দেশপ্রেমের কারণে অকাতরে প্রাণ দিয়েছিল কিছু মানুষ, সেই দেশপ্রেম কমে গেছে। স্বাধীনতা ছিনতাই হয়ে যাচ্ছে। দেশপ্রেম শুধু আবেগ নয়, দেশের অর্থনীতি রক্ষা করে সব ব্যবস্থাকে মানুষের জন্য তৈরি করা দেশপ্রেমের একটা অংশ। সেসব কোথায় উবে গেল। যাঁরাই রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন, তাঁরাই অর্থের জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েন। আর যেন কোনো উদ্দেশ্যই নেই, একটাই কাজ—টাকা চাই, টাকা।
আবার টাকা এ দেশে রাখাও যাবে না। সন্তানসন্ততিদের জন্যও এ দেশ নিরাপদ নয়। দেশটাকে ৫১ বছরেও নিরাপদ করতে পারিনি। স্বাস্থ্য, শিক্ষা কোনো খাতেই আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারিনি। এবারের করোনার সূচনা পর্বে একটি অসহায় স্বাস্থ্যব্যবস্থা দেখেছি। এই অসহায় অবস্থার মধ্যেও কিছু ব্যবসায়ী, আমলা, রাজনীতিক মিলিয়ে কোটি কোটি টাকা ব্যবসা করে নিলেন। ব্যবসায়ীরা মুনাফা করবেনই, এটাই তাঁদের কাজ, কিন্তু পাশাপাশি তাঁরা আবার অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। সেই সব প্রতিষ্ঠানে অনেক কর্মসংস্থান হয়। যেমন আমাদের পোশাকশিল্পে লাখ লাখ নারী শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। দেশে অসংখ্য শিক্ষিত বেকার। একটা সরকারি বা বেসরকারি চাকরির জন্য কয়েক হাজার প্রার্থী। এত উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা অথচ তাদের চাকরির সংস্থান নেই। আর এই উচ্চশিক্ষা কোনো দক্ষতাও সৃষ্টি করছে না। এই অদক্ষ উচ্চশিক্ষিতরা সরকারি চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে এবং একসময় বয়সটা চলে যাচ্ছে। বাকি জীবনটা পড়েই রইল, কিছুই হলো না। তেমন কোনো কাজও শেখেননি তাঁরা। অথচ তাঁর সামনেই রাজনীতির কাজে লেগে তাঁর বন্ধুরা বিপুল অর্থের মালিক হয়ে গেছেন। দামি গাড়ি হাঁকাচ্ছেন তাঁর সামনেই।
বেকারত্ব সব দেশেই আছে। কিন্তু তার একটা আশু সমাধানের ভাবনাও থাকে সামনে। যাঁরা রাজনীতি করেন, তাঁদের আসলে এসব নিয়ে মাথাব্যথা নেই। একটাই কাজ—একে অপরকে গালাগাল করা। ক্ষমতা চাইবে, কিন্তু জনগণের কোনো কথা নেই। মানুষের জীবনযাপনের কোনো সংকটের কথা কোথাও উচ্চারিত হচ্ছে না। ক্ষমতা চাইছে, কিন্তু ক্ষমতা পেলে রাষ্ট্রটা কেমন করে চালাবে, তা তাঁদের জানা নেই। তাই যা হওয়ার তা-ই হবে। কিন্তু বোঝা যায় সবার চোখে-মুখে একটাই ভাষা—তা হলো টাকা। ক্ষমতা পেলে টাকা হবে। উন্নয়ন হচ্ছে, কিন্তু তা-ও দুর্নীতিও দ্বারা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আর এই উন্নয়নের অবকাঠামো যারা ব্যবহার করবে, তাদের নিয়ে কোনো চিন্তা নেই। মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশে এখন ধর্মবাদী শিক্ষা এবং অধর্মের সংস্কৃতির ছড়াছড়ি। এই ডিসেম্বরে যেমন অসাম্প্রদায়িক সংহতির বিকাশ ঘটত, একদা এখন সেখানে ওয়াজ মাহফিল এবং নানা ধরনের সংস্কৃতিবিরোধী আয়োজন। লাখ লাখ মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকেরা এসব আয়োজনে যুক্ত হচ্ছেন। তবে আশার কথা, শিশুরাও আর সেখানে পড়তে চাইছে না। ওই ব্যবস্থা থেকে একটা মুক্তির আয়োজন অদূর ভবিষ্যতে তারাই রচনা করবে। কারণ সেখানেও একটা অদক্ষ উচ্চশিক্ষিত শ্রেণির জন্ম হচ্ছে।
বর্তমান রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা দলটিই একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে। এখন ওই দলের শাসনকালেই শিক্ষাব্যবস্থার এতগুলো গণবিরোধী ধারার জন্ম হলো। এ অত্যন্ত বেদনার বিষয়। এত দিনে দেশপ্রেমের একটা নতুন সংজ্ঞা তৈরি হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আমাদের গীতিকাররা আকাশ, বনানী, নদী ছাড়া কিছুই দেখতে পান না। দেশপ্রেম অর্থ যে যেখানেই কাজ করুক, সেখানেই তার সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়ে কাজ করতে হবে। তার মানে দাঁড়ায় পেশাদারি। এই পেশাদারিটা জন্মই নিল না এই বাঙালির জীবনে।
যতটুকু আছে তার আবার যথেষ্ট ব্যবহার হয় টাকা কামানোয়—এই টাকা দিয়ে যে কী হবে, তা-ও তাদের ভাবনায় নেই। টরন্টো, নিউইয়র্কের মেম সাহেবরা যা করেন, ঢাকায়ও এই মেম সাহেবরা স্বামীর অবৈধ অর্থে শপিং মলগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন। এই শপিং মল আর দোকান তাঁদের কল্যাণেই ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। কারণ দুর্নীতি এখন শুধু রাজনীতিতে নেই—ছড়িয়ে পড়েছে জেলা শহরে, উপজেলা এবং গ্রাম পর্যায়ে।
দুর্নীতি দমনের জন্য যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, সেগুলো বহু আগে থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের লোকেরা নানাভাবে দুর্নীতির সঙ্গে অথবা প্রভাবশালীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়েছেন। সবটা মিলিয়ে ডিসেম্বরে যে নতুন ভাবনার সৃষ্টি হবে, তার আর অবকাশ কোথায়?
সব হতাশা ছাপিয়ে একমাত্র শিল্প-সাহিত্যে জেগে আছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। তার সবটাই যে সঠিক পথের ভাবনা, তা নয়। তারপরও আমাদের নাটকে, কাব্যে, চিত্রকলায়, সাংবাদিকতায় প্রবীণ থেকে তরুণদের মধ্যে জাগ্রত আছে মুক্তিযুদ্ধের ডিসেম্বর। কিন্তু এ ভাবনাও যদি কীটদষ্ট হয়, তাহলে কোথাও ভরসা মিলবে না।
লেখক: মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব
দুর্নীতি দমনের জন্য যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, সেগুলো বহু আগে থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের লোকেরা নানাভাবে দুর্নীতির সঙ্গে অথবা প্রভাবশালীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়েছেন।
আবার এসেছে ডিসেম্বর। বর্ষ পরিক্রমায় বিষয়টি স্বাভাবিক বটে। কিন্তু এই শীতকাল আবার বাঙালির জীবনে এক আবেগের মাস। আন্দোলন, সংগ্রাম এবং যুদ্ধের মাস। আজ থেকে ৫১ বছর আগে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের শেষ দিনগুলো আমরা দেখেছি। দেশ স্বাধীন হয়েছিল। অনেক সন্তান ঘরে ফিরেছিল, অনেকেই ঘরে ফেরেনি। যেসব মৌল আদর্শের ভিত্তিতে দেশটা স্বাধীন হয়েছিল সে-ও আজ ক্লিশে। সামাজিক ও রাজনীতিক জীবনে বিশৃঙ্খলা বেড়েছে। একজন আরেকজনকে হুমকি দিচ্ছে ‘খেলা হবে’।
একাত্তরে যেমন আমরা সবাই ছিলাম ভাই ভাই, আজ সে পরিস্থিতি নেই। অনেকটা মুখোমুখিই দাঁড়িয়ে গিয়েছি। সেই ডিসেম্বরে আমি ছিলাম কলকাতায়। রণাঙ্গন থেকে এসেছিলাম স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। অশেষ কষ্ট ভোগ করে এক অনিশ্চয়তায় স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পীদের নিয়ে স্বপ্ন রচনা করেছিলাম। তিন বছর পরেই যেন সব পাল্টে গেল। দেশের বেতারের নামটাও পাল্টে গেল। হয়ে গেল রেডিও বাংলাদেশ। আবার সেই মিলিটারি। আগের মিলিটারি ছিল অচেনা। এবারের মিলিটারি অচেনা নয়, আমাদেরই ভাই-বেরাদার।
শত্রু এবার ঘরের। মুক্তিযুদ্ধের কথা কেউ মনে রাখে না। নতুন প্রজন্ম আসে, তাদের যুদ্ধের কষ্টের কথা মনে থাকার কথা নয়; বরং তাদের জীবনযাপন যদি কষ্টের হয়, তাহলে আগের প্রজন্মকেই দোষারোপ করে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের বড় কষ্ট হয়। আমরা যখন দেখি যে দেশপ্রেমের কারণে অকাতরে প্রাণ দিয়েছিল কিছু মানুষ, সেই দেশপ্রেম কমে গেছে। স্বাধীনতা ছিনতাই হয়ে যাচ্ছে। দেশপ্রেম শুধু আবেগ নয়, দেশের অর্থনীতি রক্ষা করে সব ব্যবস্থাকে মানুষের জন্য তৈরি করা দেশপ্রেমের একটা অংশ। সেসব কোথায় উবে গেল। যাঁরাই রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন, তাঁরাই অর্থের জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েন। আর যেন কোনো উদ্দেশ্যই নেই, একটাই কাজ—টাকা চাই, টাকা।
আবার টাকা এ দেশে রাখাও যাবে না। সন্তানসন্ততিদের জন্যও এ দেশ নিরাপদ নয়। দেশটাকে ৫১ বছরেও নিরাপদ করতে পারিনি। স্বাস্থ্য, শিক্ষা কোনো খাতেই আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারিনি। এবারের করোনার সূচনা পর্বে একটি অসহায় স্বাস্থ্যব্যবস্থা দেখেছি। এই অসহায় অবস্থার মধ্যেও কিছু ব্যবসায়ী, আমলা, রাজনীতিক মিলিয়ে কোটি কোটি টাকা ব্যবসা করে নিলেন। ব্যবসায়ীরা মুনাফা করবেনই, এটাই তাঁদের কাজ, কিন্তু পাশাপাশি তাঁরা আবার অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। সেই সব প্রতিষ্ঠানে অনেক কর্মসংস্থান হয়। যেমন আমাদের পোশাকশিল্পে লাখ লাখ নারী শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। দেশে অসংখ্য শিক্ষিত বেকার। একটা সরকারি বা বেসরকারি চাকরির জন্য কয়েক হাজার প্রার্থী। এত উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা অথচ তাদের চাকরির সংস্থান নেই। আর এই উচ্চশিক্ষা কোনো দক্ষতাও সৃষ্টি করছে না। এই অদক্ষ উচ্চশিক্ষিতরা সরকারি চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে এবং একসময় বয়সটা চলে যাচ্ছে। বাকি জীবনটা পড়েই রইল, কিছুই হলো না। তেমন কোনো কাজও শেখেননি তাঁরা। অথচ তাঁর সামনেই রাজনীতির কাজে লেগে তাঁর বন্ধুরা বিপুল অর্থের মালিক হয়ে গেছেন। দামি গাড়ি হাঁকাচ্ছেন তাঁর সামনেই।
বেকারত্ব সব দেশেই আছে। কিন্তু তার একটা আশু সমাধানের ভাবনাও থাকে সামনে। যাঁরা রাজনীতি করেন, তাঁদের আসলে এসব নিয়ে মাথাব্যথা নেই। একটাই কাজ—একে অপরকে গালাগাল করা। ক্ষমতা চাইবে, কিন্তু জনগণের কোনো কথা নেই। মানুষের জীবনযাপনের কোনো সংকটের কথা কোথাও উচ্চারিত হচ্ছে না। ক্ষমতা চাইছে, কিন্তু ক্ষমতা পেলে রাষ্ট্রটা কেমন করে চালাবে, তা তাঁদের জানা নেই। তাই যা হওয়ার তা-ই হবে। কিন্তু বোঝা যায় সবার চোখে-মুখে একটাই ভাষা—তা হলো টাকা। ক্ষমতা পেলে টাকা হবে। উন্নয়ন হচ্ছে, কিন্তু তা-ও দুর্নীতিও দ্বারা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আর এই উন্নয়নের অবকাঠামো যারা ব্যবহার করবে, তাদের নিয়ে কোনো চিন্তা নেই। মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশে এখন ধর্মবাদী শিক্ষা এবং অধর্মের সংস্কৃতির ছড়াছড়ি। এই ডিসেম্বরে যেমন অসাম্প্রদায়িক সংহতির বিকাশ ঘটত, একদা এখন সেখানে ওয়াজ মাহফিল এবং নানা ধরনের সংস্কৃতিবিরোধী আয়োজন। লাখ লাখ মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকেরা এসব আয়োজনে যুক্ত হচ্ছেন। তবে আশার কথা, শিশুরাও আর সেখানে পড়তে চাইছে না। ওই ব্যবস্থা থেকে একটা মুক্তির আয়োজন অদূর ভবিষ্যতে তারাই রচনা করবে। কারণ সেখানেও একটা অদক্ষ উচ্চশিক্ষিত শ্রেণির জন্ম হচ্ছে।
বর্তমান রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা দলটিই একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে। এখন ওই দলের শাসনকালেই শিক্ষাব্যবস্থার এতগুলো গণবিরোধী ধারার জন্ম হলো। এ অত্যন্ত বেদনার বিষয়। এত দিনে দেশপ্রেমের একটা নতুন সংজ্ঞা তৈরি হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আমাদের গীতিকাররা আকাশ, বনানী, নদী ছাড়া কিছুই দেখতে পান না। দেশপ্রেম অর্থ যে যেখানেই কাজ করুক, সেখানেই তার সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়ে কাজ করতে হবে। তার মানে দাঁড়ায় পেশাদারি। এই পেশাদারিটা জন্মই নিল না এই বাঙালির জীবনে।
যতটুকু আছে তার আবার যথেষ্ট ব্যবহার হয় টাকা কামানোয়—এই টাকা দিয়ে যে কী হবে, তা-ও তাদের ভাবনায় নেই। টরন্টো, নিউইয়র্কের মেম সাহেবরা যা করেন, ঢাকায়ও এই মেম সাহেবরা স্বামীর অবৈধ অর্থে শপিং মলগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন। এই শপিং মল আর দোকান তাঁদের কল্যাণেই ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। কারণ দুর্নীতি এখন শুধু রাজনীতিতে নেই—ছড়িয়ে পড়েছে জেলা শহরে, উপজেলা এবং গ্রাম পর্যায়ে।
দুর্নীতি দমনের জন্য যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, সেগুলো বহু আগে থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের লোকেরা নানাভাবে দুর্নীতির সঙ্গে অথবা প্রভাবশালীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়েছেন। সবটা মিলিয়ে ডিসেম্বরে যে নতুন ভাবনার সৃষ্টি হবে, তার আর অবকাশ কোথায়?
সব হতাশা ছাপিয়ে একমাত্র শিল্প-সাহিত্যে জেগে আছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। তার সবটাই যে সঠিক পথের ভাবনা, তা নয়। তারপরও আমাদের নাটকে, কাব্যে, চিত্রকলায়, সাংবাদিকতায় প্রবীণ থেকে তরুণদের মধ্যে জাগ্রত আছে মুক্তিযুদ্ধের ডিসেম্বর। কিন্তু এ ভাবনাও যদি কীটদষ্ট হয়, তাহলে কোথাও ভরসা মিলবে না।
লেখক: মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪