মামুনুর রশীদ
শিল্পীর আবার সংগঠন কী? শিল্পী তো এককভাবে সংগ্রাম করে নিজেকে দাঁড় করিয়েছেন। তিনি অভিনয় করেন, গান গান, নৃত্যের সঙ্গে যুক্ত ও চারুকলার কাজ করেন। তাঁর শিক্ষা সাধারণত গুরুমুখী বা একাডেমিক হলেও তিনিও একক সংগ্রামী। শিল্পীর সমর্থক, সমঝদার এবং অনুগামী হচ্ছে দর্শক-শ্রোতা এবং শিল্পমোদী মানুষ। তাঁর জীবনে একক যাত্রায় সাধারণত কেউ সঙ্গী হতে পারে না। যখন কোনো অভিনেতা মঞ্চে, টেলিভিশনে অথবা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, তখন তিনি নিঃসঙ্গ কিন্তু সহশিল্পীদের সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়ার মতো প্রয়োজন আছে বটে। অন্যান্য শিল্পের অবশ্য তার প্রয়োজন হয় না।
একজন অভিনেতা যখন তাঁর সাফল্য এবং ব্যর্থতার দায় নিজেই নেন, তখন তাঁর কি সংগঠনের প্রয়োজন আছে? অভিনেতার প্রয়োজন হয়। কারণ, প্রথম থেকেই শিল্পটিকে নানা ধরনের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে আসতে হয়, সেটা যেকোনো ক্ষেত্রেই হোক। সেই আদিকাল থেকে যখন অভিনয় ছিল একক শিল্প, তখন কিছু লোককে একত্র করতে হয়েছে এবং সেই লোকগুলোর ভালো লাগা ও মন্দ লাগাকে তোয়াক্কা করতে হয়েছে।
কালক্রমে দলবদ্ধতার বিষয়টি এসেছে এবং সাংগঠনিকতা বেড়েছে। আজকের দিনে সাংগঠনিকতা প্রবল। প্রচার, বিপণন এসবও যুক্ত হয়েছে, অভিনয়শিল্পের সঙ্গে পেশাগতভাবে তা যুক্ত করা সম্ভব। তারপরও সংগঠন কেন? মানুষ যেদিন থেকে অধিকার সচেতন হয়েছে, তখনই সংগঠনকে খুঁজতে শুরু করেছে। কারণ, অধিকারের লড়াইটা একা করা যায় না। চারপাশের মানুষের প্রয়োজন পড়ে। আর আজকের দিনে অভিনয়শিল্পটা যখন একটা অর্থকরী বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন এই অধিকারের বিপরীতেও একটি শক্তি দাঁড়িয়ে গেছে। সেই শক্তিটা মূলত অর্থলগ্নিকারকদের এবং ক্ষমতাসীনদের।
অভিনয়শিল্পটার আবার একটা গোলমাল আছে। সেখানে গল্প লাগে। আর এই গল্পগুলো একটু ঝামেলার। সেই গল্পে একটা গদগদ প্রেমকাহিনি কিছুটা যৌনতা আর কিছুটা মারামারি থাকলেই কোনো সমস্যা নেই। সমস্যাটা হচ্ছে এর বিপণন নিয়ে। এই ভাগ-বাঁটোয়ারায় কে কতটা পাবে, তা নিয়ে একটা দ্বন্দ্ব লেগে যায়। কিন্তু যখনই গদগদ কাহিনিটা চলে না; বরং একটা সামাজিক গল্পই চাই, যেখানে দর্শকও প্রচুর থাকবে, সেখানে একটা ত্রিমুখী দ্বন্দ্ব এসে হাজির হয়। একদিকে নির্মাণকারীরা, যেখানে শিল্পীরা থাকেন। অন্যদিকে লগ্নিকারকেরা, যাঁরা এটাকে বিক্রি করবেন তাঁদের। আবার এই কাহিনিতে রাষ্ট্রের শাসকেরা যদি বিরক্ত হয়, তবে আরেকটা পক্ষ দাঁড়িয়ে যায়। এই যে ত্রিমুখী লড়াই, এর সামালটা কে দেবে? এই তখনই প্রয়োজন হয় যাঁরা এই পেশায় নিয়োজিত, তাঁদের একটা কণ্ঠস্বর। এই কণ্ঠস্বরের মধ্যেও সমস্যা আছে। চারদিক থেকে এলোপাতাড়ি মন্তব্য যদি আসতেই থাকে, যা কোনো সুচিন্তিত পথে এগোয় না, তা নিয়তই এক স্বেচ্ছাচারিতার দিকে চলে যেতে পারে।
সেখানে কী কর্তব্য? যুগ যুগ ধরে সেই সব কারণে সংগঠন গড়ে উঠেছে, যারা সুচিন্তিত পথে সঠিক ভাবনাকে উপস্থিত করার জন্য একটা পথের ঠিকানা দেবে, সংগঠিত শক্তির পক্ষে দাঁড়িয়ে অধিকারটাকে আদায় করবে। কাজটি খুব সহজ নয়। তার জন্য প্রতিনিধিত্বমূলক একটা চিন্তক গোষ্ঠীর প্রয়োজন হয়ে পড়ে, পেশার মধ্য থেকেই সেটা নির্বাচন করতে হয়। মানবজাতি সব সময় এ নির্বাচন করতে তার সাফল্য এবং ব্যর্থতা দেখিয়েছে। এখানেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। তবে এই জটিলতা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সহজ কিছু পথও তারা বেছে নিয়েছে। সেই সহজ পথগুলো আবার আখেরে সহজ থাকে না। কিন্তু অভিজ্ঞতা, ইতিহাস নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়েই একটি সংগঠন তৈরি হয়। এই সংগঠন শিল্পীকে একটা নৈরাজ্য থেকেও মুক্তি দেয়; যদি তাঁর নিঃসঙ্গ মুহূর্তে সংগঠনটি পাশে এসে দাঁড়ায় এবং তাঁর সমস্যার একটা যৌক্তিক সমাধান দিতে পারে!
কিন্তু যদি শিল্পীর পাশে কোনো সংগঠন না থাকে তাহলে তার পক্ষে একটা হঠকারী অথবা স্বার্থপরতা এসে দেখা দিতে পারে। মানবজাতির অন্তর্গত চরিত্রের মধ্যে স্বার্থপরতা আছে। তার আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে না মিললে সে কোনো সম্মিলিত সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারে না। তাই সংগঠনকে প্রতিনিয়ত বিষয়গুলোকে যৌক্তিক করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হয়। যদিও বিষয়টি আপেক্ষিক, তবু এটি বড় সংগ্রাম, যেখানে শিল্পীর অধিকার এবং সুবিচার পাওয়ার বিষয়টির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এই অপেক্ষার কাল আবার দীর্ঘ হলে হবে না। কিন্তু যেকোনো বিচারেই একটা গোষ্ঠীর জন্য অবশ্যই একটা সাংগঠনিক সংগ্রামের প্রয়োজন আছে।
মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব
শিল্পীর আবার সংগঠন কী? শিল্পী তো এককভাবে সংগ্রাম করে নিজেকে দাঁড় করিয়েছেন। তিনি অভিনয় করেন, গান গান, নৃত্যের সঙ্গে যুক্ত ও চারুকলার কাজ করেন। তাঁর শিক্ষা সাধারণত গুরুমুখী বা একাডেমিক হলেও তিনিও একক সংগ্রামী। শিল্পীর সমর্থক, সমঝদার এবং অনুগামী হচ্ছে দর্শক-শ্রোতা এবং শিল্পমোদী মানুষ। তাঁর জীবনে একক যাত্রায় সাধারণত কেউ সঙ্গী হতে পারে না। যখন কোনো অভিনেতা মঞ্চে, টেলিভিশনে অথবা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, তখন তিনি নিঃসঙ্গ কিন্তু সহশিল্পীদের সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়ার মতো প্রয়োজন আছে বটে। অন্যান্য শিল্পের অবশ্য তার প্রয়োজন হয় না।
একজন অভিনেতা যখন তাঁর সাফল্য এবং ব্যর্থতার দায় নিজেই নেন, তখন তাঁর কি সংগঠনের প্রয়োজন আছে? অভিনেতার প্রয়োজন হয়। কারণ, প্রথম থেকেই শিল্পটিকে নানা ধরনের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে আসতে হয়, সেটা যেকোনো ক্ষেত্রেই হোক। সেই আদিকাল থেকে যখন অভিনয় ছিল একক শিল্প, তখন কিছু লোককে একত্র করতে হয়েছে এবং সেই লোকগুলোর ভালো লাগা ও মন্দ লাগাকে তোয়াক্কা করতে হয়েছে।
কালক্রমে দলবদ্ধতার বিষয়টি এসেছে এবং সাংগঠনিকতা বেড়েছে। আজকের দিনে সাংগঠনিকতা প্রবল। প্রচার, বিপণন এসবও যুক্ত হয়েছে, অভিনয়শিল্পের সঙ্গে পেশাগতভাবে তা যুক্ত করা সম্ভব। তারপরও সংগঠন কেন? মানুষ যেদিন থেকে অধিকার সচেতন হয়েছে, তখনই সংগঠনকে খুঁজতে শুরু করেছে। কারণ, অধিকারের লড়াইটা একা করা যায় না। চারপাশের মানুষের প্রয়োজন পড়ে। আর আজকের দিনে অভিনয়শিল্পটা যখন একটা অর্থকরী বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন এই অধিকারের বিপরীতেও একটি শক্তি দাঁড়িয়ে গেছে। সেই শক্তিটা মূলত অর্থলগ্নিকারকদের এবং ক্ষমতাসীনদের।
অভিনয়শিল্পটার আবার একটা গোলমাল আছে। সেখানে গল্প লাগে। আর এই গল্পগুলো একটু ঝামেলার। সেই গল্পে একটা গদগদ প্রেমকাহিনি কিছুটা যৌনতা আর কিছুটা মারামারি থাকলেই কোনো সমস্যা নেই। সমস্যাটা হচ্ছে এর বিপণন নিয়ে। এই ভাগ-বাঁটোয়ারায় কে কতটা পাবে, তা নিয়ে একটা দ্বন্দ্ব লেগে যায়। কিন্তু যখনই গদগদ কাহিনিটা চলে না; বরং একটা সামাজিক গল্পই চাই, যেখানে দর্শকও প্রচুর থাকবে, সেখানে একটা ত্রিমুখী দ্বন্দ্ব এসে হাজির হয়। একদিকে নির্মাণকারীরা, যেখানে শিল্পীরা থাকেন। অন্যদিকে লগ্নিকারকেরা, যাঁরা এটাকে বিক্রি করবেন তাঁদের। আবার এই কাহিনিতে রাষ্ট্রের শাসকেরা যদি বিরক্ত হয়, তবে আরেকটা পক্ষ দাঁড়িয়ে যায়। এই যে ত্রিমুখী লড়াই, এর সামালটা কে দেবে? এই তখনই প্রয়োজন হয় যাঁরা এই পেশায় নিয়োজিত, তাঁদের একটা কণ্ঠস্বর। এই কণ্ঠস্বরের মধ্যেও সমস্যা আছে। চারদিক থেকে এলোপাতাড়ি মন্তব্য যদি আসতেই থাকে, যা কোনো সুচিন্তিত পথে এগোয় না, তা নিয়তই এক স্বেচ্ছাচারিতার দিকে চলে যেতে পারে।
সেখানে কী কর্তব্য? যুগ যুগ ধরে সেই সব কারণে সংগঠন গড়ে উঠেছে, যারা সুচিন্তিত পথে সঠিক ভাবনাকে উপস্থিত করার জন্য একটা পথের ঠিকানা দেবে, সংগঠিত শক্তির পক্ষে দাঁড়িয়ে অধিকারটাকে আদায় করবে। কাজটি খুব সহজ নয়। তার জন্য প্রতিনিধিত্বমূলক একটা চিন্তক গোষ্ঠীর প্রয়োজন হয়ে পড়ে, পেশার মধ্য থেকেই সেটা নির্বাচন করতে হয়। মানবজাতি সব সময় এ নির্বাচন করতে তার সাফল্য এবং ব্যর্থতা দেখিয়েছে। এখানেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। তবে এই জটিলতা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সহজ কিছু পথও তারা বেছে নিয়েছে। সেই সহজ পথগুলো আবার আখেরে সহজ থাকে না। কিন্তু অভিজ্ঞতা, ইতিহাস নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়েই একটি সংগঠন তৈরি হয়। এই সংগঠন শিল্পীকে একটা নৈরাজ্য থেকেও মুক্তি দেয়; যদি তাঁর নিঃসঙ্গ মুহূর্তে সংগঠনটি পাশে এসে দাঁড়ায় এবং তাঁর সমস্যার একটা যৌক্তিক সমাধান দিতে পারে!
কিন্তু যদি শিল্পীর পাশে কোনো সংগঠন না থাকে তাহলে তার পক্ষে একটা হঠকারী অথবা স্বার্থপরতা এসে দেখা দিতে পারে। মানবজাতির অন্তর্গত চরিত্রের মধ্যে স্বার্থপরতা আছে। তার আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে না মিললে সে কোনো সম্মিলিত সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারে না। তাই সংগঠনকে প্রতিনিয়ত বিষয়গুলোকে যৌক্তিক করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হয়। যদিও বিষয়টি আপেক্ষিক, তবু এটি বড় সংগ্রাম, যেখানে শিল্পীর অধিকার এবং সুবিচার পাওয়ার বিষয়টির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এই অপেক্ষার কাল আবার দীর্ঘ হলে হবে না। কিন্তু যেকোনো বিচারেই একটা গোষ্ঠীর জন্য অবশ্যই একটা সাংগঠনিক সংগ্রামের প্রয়োজন আছে।
মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪