এ কে এম শামসুদ্দিন
১ জুলাই ঢাকার এক দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত একটি সংবাদের শিরোনাম ছিল এ রকম, ‘ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা করায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাল্টা মামলা, সাংবাদিক গ্রেপ্তার।’ পাঠক, অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন এ আবার নতুন খবর কী? আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতার নির্দেশে যেখানে সাংবাদিক পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়, সেই তুলনায় এ ঘটনা তো কিছুই না। জামালপুরের বকশীগঞ্জের সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিমকে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনা এর প্রকৃত উদাহরণ। পত্রিকার শিরোনামের খবরটি হলো, হবিগঞ্জের সাতছড়ি বনের গাছ পাচার নিয়ে দৈনিক সিলেট পত্রিকায় সাংবাদিক আব্দুল জাহির মিয়ার লেখা একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এ নিয়ে চুনারুঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সায়েম মিয়া ক্ষিপ্ত হন। অতঃপর ২৩ জুন সায়েম কয়েকজন গুন্ডাপান্ডা নিয়ে সাংবাদিক জাহিরের ওপর হামলা করেন। আহত অবস্থায় ওই দিন রাতেই জাহির থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। থানায় মামলা করতে যাওয়ায় পুনরায় জাহিরের ওপর হামলা করেন সায়েম ও তাঁর সঙ্গীরা। এ পরিপ্রেক্ষিতে কোনো উপায় না পেয়ে জাহির ২৫ জুন হবিগঞ্জ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন।
আদালত আবেদনটি এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করার জন্য চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। ২৭ জুন মামলাটি রেকর্ড হয়। মামলা রেকর্ড হওয়ার পরও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেননি। অথচ মামলার ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই ঈদের দিন রাতে মামলার বাদী সাংবাদিক জাহিরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করেন ছাত্রলীগ কর্মী মহিবুর রহমান। এ মামলায় জাহিরের বন্ধু একই উপজেলার অপর এক সাংবাদিক আব্দুর রাজ্জাককেও অভিযুক্ত করা হয়।
ছাত্রলীগ কর্মীরা মামলা করার কিছুক্ষণের মধ্যে থানার পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে এবং ওই দিন ভোররাতেই (ঈদের রাতে) আব্দুর রাজ্জাককে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার করেই পুলিশ বসে থাকেনি, তারা সাংবাদিক রাজ্জাককে হাতকড়া পরিয়ে থানার সামনে দাঁড় করিয়ে ছবিও তোলে। অথচ দোষ প্রমাণিত হওয়ার আগেই একজন সাংবাদিকের আত্মসম্মানবোধকে ভূলুণ্ঠিত করার জন্য এভাবে হাতকড়া পরিয়ে ছবি তোলার অধিকার পুলিশ রাখে না।
বাংলাদেশে সাংবাদিক নির্যাতন, হয়রানি কিংবা হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা নতুন নয়। অনেক আগে থেকেই এ ধরনের ঘটনা ঘটে আসছে। তবে কয়েক দশক ধরে এর মাত্রা বেড়েই চলেছে; বিশেষ করে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি, মামলা, পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান ও আক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। নানা নিরাপত্তাঝুঁকি নিয়ে এখন পেশাগত দায়িত্ব পালন করে থাকেন বাংলাদেশের সাংবাদিকেরা; বিশেষ করে মফস্বলে সাংবাদিকতা করা আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। মফস্বলে দুই ধরনের সাংবাদিক আছেন।
এর মধ্যে যাঁরা প্রকৃতই সাংবাদিকতা করতে চান, তাঁদের ওপর সব ধরনের চাপ থাকে। প্রভাবশালী রাজনীতিক বা জনপ্রতিনিধি, বিশেষ করে সরকার-সমর্থিত ব্যক্তি থেকে শুরু করে প্রশাসনের যাঁরা অন্যায় বা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত–সবার আক্রোশের শিকার হন মফস্বলের সাংবাদিকেরা। এ জন্য সাংবাদিকদের ভেতর একধরনের আতঙ্ক কাজ করে। ফলে সাংবাদিকেরা নিজে থেকে একটু এগিয়ে গিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করেন। মুশকিল হলো, মফস্বলে প্রত্যেক সাংবাদিকই পরিচিত। সবাই সবাইকে চেনেন। কাজেই, কেউ যদি কোনো সৎ সাংবাদিকতা করতে যান এবং তা যদি সুবিধাভোগী মহলের বিরুদ্ধে যায়, তাহলে সেই সাংবাদিককে টার্গেট করা সহজ হয়। ঢাকা বা বড় বড় শহরে সেটা সম্ভব নয়।
মফস্বলে সাংবাদিকেরা প্রতি মুহূর্তে, প্রতিদিনই ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে প্রভাবশালী মহলের চাপে পড়ে অনেক সময় সাংবাদিকেরাই সেলফ সেন্সরশিপ অবলম্বন করেন। মফস্বলে অনেক সাংবাদিক ভয়ে কিংবা বিপদে না পড়ার জন্য ভালো সংবাদ করার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তা করতে পারেন না।
আবার এমনও দেখা যায়, মফস্বলের সাংবাদিক হয়তো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসংবলিত কোনো সংবাদ পাঠালেন, কিন্তু পত্রিকায় তা ছাপানোই হলো না। বিভিন্ন ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সরকারি প্রশাসন এবং ক্ষমতাসীন রাজনীতিবিদেরাই বিভিন্ন সময় মফস্বল সাংবাদিকদের প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠেন। অনেক ক্ষেত্রে মফস্বলে একজন সাংবাদিক তাঁর পেশাগত কারণে যখন কোনো প্রতিকূলতার মাঝে পড়েন, তখন তাঁর নিয়োগকারী সংবাদমাধ্যম তাঁকে সহায়তার জন্য কতটা এগিয়ে আসে, তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। যার সম্পর্কে বা যে বিষয়ে সংবাদ হয়েছে, তার সঙ্গে যদি নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের রাজনৈতিক ভাবাদর্শের মিল থাকে, তাহলে তো কথাই নেই। তখন সাংবাদিককে ভাগ্যবিড়ম্বনায় পড়তে হয়। তার খেসারতও দিতে হয় কঠিনভাবে।
একটা সময় ছিল যখন স্থানীয় পর্যায়ে সাংবাদিকতা করতে গিয়ে টেলিফোনে হুমকি পেতেন, এখন হুমকি প্রকাশ্যে দেওয়া হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ডেকে নিয়ে মৌখিকভাবে হুমকি দেওয়া হয়। কখনো গোষ্ঠীগতভাবে হুমকি দেওয়া হয়। স্থানীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক, সামাজিক ও ব্যবসায়িক শক্তি অনেক সুগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ, যারা সাংবাদিকদের জন্য প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি করে থাকে; অর্থাৎ মফস্বলে প্রতিনিয়তই সাংবাদিকদের নির্যাতনের শিকার হতে হয়। সংবাদ তাদের পক্ষে গেলে শুভকামনা এবং বিপক্ষে গেলে বিভিন্ন ডিগ্রির হুমকি আসতে থাকে।
মফস্বলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জমিজমা এবং দুর্নীতির খবর হয়। এসব বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন করতে গেলেই কেউ না কেউ শত্রু হয়ে যায় এবং প্রতিশোধ নিতে চায়। প্রতিশোধ নিতে গিয়ে তারা ক্ষমতার পূর্ণ ব্যবহার করে যেকোনো কিছু করতে পারে। এমন পরিবেশের মধ্য দিয়েই মফস্বলে সাংবাদিকতা করতে হয়। এর মধ্যে নতুন করে যোগ হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ের ডিজিটাল নিরাপত্তা ও আইসিটি আইন। এই আইনের আওতায় শত শত মামলা হয়েছে। এর বেশির ভাগ অংশই হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ে সাংবাদিকতার জন্য। কোনো ব্যতিক্রম কিছু ঘটলে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এই মামলাগুলো জুড়ে দেওয়া হয়। তার মানে কী দাঁড়ায়? স্থানীয় শক্তির সঙ্গে এই আইনের ভয়ভীতিটুকুও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কাজ করে।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত দেশে ১১৯ জন সাংবাদিক বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন, হয়রানি, হুমকির শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ১৪ জন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সদস্য বা তার সহযোগীদের কাছ থেকে হুমকির শিকার হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে হয়রানির শিকার হয়েছেন ২১ জন। খবর প্রকাশ করার জন্য মামলা হয়েছে ২০ জনের বিরুদ্ধে, দুর্বৃত্তদের হাতে নির্যাতন, হামলা, হুমকি, হয়রানির শিকার হয়েছেন ১৮ জন। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ছয় মাসের মানবাধিকার প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গত ছয় মাসে ২৪টি মামলা হয়েছে। এ ২৪টি মামলা পর্যালোচনা করে আসক বলেছে, ২৪টি মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ৬০। এর মধ্যে তাৎক্ষণিক ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২৪টি মামলার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করার অভিযোগে ৫টি মামলা হয়েছে, যেখানে আসামি করা হয়েছে পাঁচজনকে এবং তাৎক্ষণিকভাবে চারজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। সাংবাদিক ও সব মুক্তচিন্তা চর্চাকারীর বিরুদ্ধে করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ইতিমধ্যেই নিবর্তনমূলক আইনে পরিণত হয়েছে।
শুধু নির্যাতন, হয়রানি আর হুমকিই নয়, হত্যা, গুম, খুন ও অপহরণের ঘটনাও ঘটেছে কয়েক দশক ধরে। আসক এক জরিপে জানিয়েছে, গত ১০ বছর এ ধরনের ঘটনার শিকার হয়েছেন ৩০ জন সাংবাদিক। এসব ঘটনায় জড়িতদের বিচার হওয়ার নজির খুব কমই। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সাংবাদিক হত্যার বিচার ঝুলে আছে দীর্ঘসূত্রতায়। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর ও রুনি। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার ঘোষণা দেন।
কিন্তু এক দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও আজও শেষ হয়নি তদন্তের কাজ। এরই মধ্যে ৯৯ বার পিছিয়েছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ। এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ সেঞ্চুরি পেরিয়ে গেলেও আশ্চর্য হব না। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া নিয়ে যা শুরু হয়েছে তাতে অনেকেই বলছেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার তো দূরে থাক, তদন্ত প্রতিবেদনও জমা পড়বে কি না, সন্দেহ। কারণ হিসেবে তাঁরা বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের এমন ঘনিষ্ঠ কেউ জড়িত যে তাদের নাম পর্যন্ত নেওয়া কড়াকড়িভাবে নিষেধ করা আছে। এসব কথার পেছনের সত্যটা কী, তা বলা মুশকিল।
অনেকে বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে দুটো ঘটনার রহস্য কখনো উন্মোচিত হবে না। এক. বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা এবং দুই. সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড। তবে মানুষের এ ধারণা পাল্টানোর জন্য সরকারেরই উচিত উদ্যোগ গ্রহণ করা। তা না হলে মানুষের ধারণাই প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ থেকে যাবে।
সাংবাদিক নির্যাতন করলে কিংবা হত্যা করলেও যে কোনো শাস্তি হয় না, এমন ধারণা প্রায় প্রতিষ্ঠিতই হয়ে গেছে। ক্ষমতার বলয়ের মানুষদের ভেতর একরকম ধারণাই সৃষ্টি হয়েছে যে সাংবাদিক পেটালে পার পাওয়া যায়। দীর্ঘদিনের বিচারহীনতা এর মূল কারণ। ২০০০ সালে যশোরে জনকণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি শামছুর রহমান কেবল হত্যা, ২০০১ সালে দৈনিক অনির্বাণের সাংবাদিক এস এম নহর আলী হত্যা, ২০০২ সালে খুলনার দৈনিক পূর্বাঞ্চলের স্টাফ রিপোর্টার হারুনার রশীদ খোকন হত্যার বিচার হয়নি আজও। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে সাংবাদিক পেটালে বা হত্যা করলে সমাজের কারও যেন কিচ্ছু যায়-আসে না।
এটা নিঃসন্দেহে সাংবাদিক নেতাদের চরম ব্যর্থতা। ব্যক্তিগত সুবিধাভোগের লালসায় আজকাল এসব হত্যাকাণ্ডসহ সাংবাদিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ জোরালো প্রতিবাদ করতেও দেখা যায় না তারকা সাংবাদিকদের। উচ্চপর্যায়ের সংবাদ সম্মেলনে এসব তারকা সাংবাদিকদের যেভাবে তোষামোদ করতে দেখা যায়, তাতে তাঁদের আত্মসম্মানবোধ নিয়েও প্রশ্ন জাগে।
রাজনৈতিক কারণে সাংবাদিকেরা আজ দ্বিধাবিভক্ত। সাংবাদিকদের এই দ্বিধাবিভক্তির পূর্ণ সুযোগ নিচ্ছে ক্ষমতাসীনেরা। এ যেন ব্রিটিশদের ‘Divide and Rule’ পলিসির ফল ভোগ করার মতো। ফলে সাংবাদিকদের ওপর যে এত অনাচার ও অবিচার হচ্ছে, সে ব্যাপারে সরকারের ওপর আগে যতটা চাপ সৃষ্টি করা যেত, এখন তা-ও সম্ভব হচ্ছে না। মুক্ত ও নিরাপদ সাংবাদিকতার এই সংকট নিরসনে সরকারের সদিচ্ছা থাকলে যেকোনো মুহূর্তে তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।সরকার সে পথে হাঁটছে বলে মনে হচ্ছে না। এ কারণেই স্বাধীন গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতায় বিশ্বাস করে বলে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা হরহামেশাই যে দাবি করেন, আমরা তার প্রমাণও দেখতে পাচ্ছি না।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও কলাম লেখক
১ জুলাই ঢাকার এক দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত একটি সংবাদের শিরোনাম ছিল এ রকম, ‘ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা করায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাল্টা মামলা, সাংবাদিক গ্রেপ্তার।’ পাঠক, অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন এ আবার নতুন খবর কী? আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতার নির্দেশে যেখানে সাংবাদিক পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়, সেই তুলনায় এ ঘটনা তো কিছুই না। জামালপুরের বকশীগঞ্জের সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিমকে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনা এর প্রকৃত উদাহরণ। পত্রিকার শিরোনামের খবরটি হলো, হবিগঞ্জের সাতছড়ি বনের গাছ পাচার নিয়ে দৈনিক সিলেট পত্রিকায় সাংবাদিক আব্দুল জাহির মিয়ার লেখা একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এ নিয়ে চুনারুঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সায়েম মিয়া ক্ষিপ্ত হন। অতঃপর ২৩ জুন সায়েম কয়েকজন গুন্ডাপান্ডা নিয়ে সাংবাদিক জাহিরের ওপর হামলা করেন। আহত অবস্থায় ওই দিন রাতেই জাহির থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। থানায় মামলা করতে যাওয়ায় পুনরায় জাহিরের ওপর হামলা করেন সায়েম ও তাঁর সঙ্গীরা। এ পরিপ্রেক্ষিতে কোনো উপায় না পেয়ে জাহির ২৫ জুন হবিগঞ্জ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন।
আদালত আবেদনটি এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করার জন্য চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। ২৭ জুন মামলাটি রেকর্ড হয়। মামলা রেকর্ড হওয়ার পরও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেননি। অথচ মামলার ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই ঈদের দিন রাতে মামলার বাদী সাংবাদিক জাহিরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করেন ছাত্রলীগ কর্মী মহিবুর রহমান। এ মামলায় জাহিরের বন্ধু একই উপজেলার অপর এক সাংবাদিক আব্দুর রাজ্জাককেও অভিযুক্ত করা হয়।
ছাত্রলীগ কর্মীরা মামলা করার কিছুক্ষণের মধ্যে থানার পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে এবং ওই দিন ভোররাতেই (ঈদের রাতে) আব্দুর রাজ্জাককে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার করেই পুলিশ বসে থাকেনি, তারা সাংবাদিক রাজ্জাককে হাতকড়া পরিয়ে থানার সামনে দাঁড় করিয়ে ছবিও তোলে। অথচ দোষ প্রমাণিত হওয়ার আগেই একজন সাংবাদিকের আত্মসম্মানবোধকে ভূলুণ্ঠিত করার জন্য এভাবে হাতকড়া পরিয়ে ছবি তোলার অধিকার পুলিশ রাখে না।
বাংলাদেশে সাংবাদিক নির্যাতন, হয়রানি কিংবা হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা নতুন নয়। অনেক আগে থেকেই এ ধরনের ঘটনা ঘটে আসছে। তবে কয়েক দশক ধরে এর মাত্রা বেড়েই চলেছে; বিশেষ করে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি, মামলা, পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান ও আক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। নানা নিরাপত্তাঝুঁকি নিয়ে এখন পেশাগত দায়িত্ব পালন করে থাকেন বাংলাদেশের সাংবাদিকেরা; বিশেষ করে মফস্বলে সাংবাদিকতা করা আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। মফস্বলে দুই ধরনের সাংবাদিক আছেন।
এর মধ্যে যাঁরা প্রকৃতই সাংবাদিকতা করতে চান, তাঁদের ওপর সব ধরনের চাপ থাকে। প্রভাবশালী রাজনীতিক বা জনপ্রতিনিধি, বিশেষ করে সরকার-সমর্থিত ব্যক্তি থেকে শুরু করে প্রশাসনের যাঁরা অন্যায় বা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত–সবার আক্রোশের শিকার হন মফস্বলের সাংবাদিকেরা। এ জন্য সাংবাদিকদের ভেতর একধরনের আতঙ্ক কাজ করে। ফলে সাংবাদিকেরা নিজে থেকে একটু এগিয়ে গিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করেন। মুশকিল হলো, মফস্বলে প্রত্যেক সাংবাদিকই পরিচিত। সবাই সবাইকে চেনেন। কাজেই, কেউ যদি কোনো সৎ সাংবাদিকতা করতে যান এবং তা যদি সুবিধাভোগী মহলের বিরুদ্ধে যায়, তাহলে সেই সাংবাদিককে টার্গেট করা সহজ হয়। ঢাকা বা বড় বড় শহরে সেটা সম্ভব নয়।
মফস্বলে সাংবাদিকেরা প্রতি মুহূর্তে, প্রতিদিনই ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে প্রভাবশালী মহলের চাপে পড়ে অনেক সময় সাংবাদিকেরাই সেলফ সেন্সরশিপ অবলম্বন করেন। মফস্বলে অনেক সাংবাদিক ভয়ে কিংবা বিপদে না পড়ার জন্য ভালো সংবাদ করার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তা করতে পারেন না।
আবার এমনও দেখা যায়, মফস্বলের সাংবাদিক হয়তো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসংবলিত কোনো সংবাদ পাঠালেন, কিন্তু পত্রিকায় তা ছাপানোই হলো না। বিভিন্ন ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সরকারি প্রশাসন এবং ক্ষমতাসীন রাজনীতিবিদেরাই বিভিন্ন সময় মফস্বল সাংবাদিকদের প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠেন। অনেক ক্ষেত্রে মফস্বলে একজন সাংবাদিক তাঁর পেশাগত কারণে যখন কোনো প্রতিকূলতার মাঝে পড়েন, তখন তাঁর নিয়োগকারী সংবাদমাধ্যম তাঁকে সহায়তার জন্য কতটা এগিয়ে আসে, তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। যার সম্পর্কে বা যে বিষয়ে সংবাদ হয়েছে, তার সঙ্গে যদি নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের রাজনৈতিক ভাবাদর্শের মিল থাকে, তাহলে তো কথাই নেই। তখন সাংবাদিককে ভাগ্যবিড়ম্বনায় পড়তে হয়। তার খেসারতও দিতে হয় কঠিনভাবে।
একটা সময় ছিল যখন স্থানীয় পর্যায়ে সাংবাদিকতা করতে গিয়ে টেলিফোনে হুমকি পেতেন, এখন হুমকি প্রকাশ্যে দেওয়া হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ডেকে নিয়ে মৌখিকভাবে হুমকি দেওয়া হয়। কখনো গোষ্ঠীগতভাবে হুমকি দেওয়া হয়। স্থানীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক, সামাজিক ও ব্যবসায়িক শক্তি অনেক সুগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ, যারা সাংবাদিকদের জন্য প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি করে থাকে; অর্থাৎ মফস্বলে প্রতিনিয়তই সাংবাদিকদের নির্যাতনের শিকার হতে হয়। সংবাদ তাদের পক্ষে গেলে শুভকামনা এবং বিপক্ষে গেলে বিভিন্ন ডিগ্রির হুমকি আসতে থাকে।
মফস্বলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জমিজমা এবং দুর্নীতির খবর হয়। এসব বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন করতে গেলেই কেউ না কেউ শত্রু হয়ে যায় এবং প্রতিশোধ নিতে চায়। প্রতিশোধ নিতে গিয়ে তারা ক্ষমতার পূর্ণ ব্যবহার করে যেকোনো কিছু করতে পারে। এমন পরিবেশের মধ্য দিয়েই মফস্বলে সাংবাদিকতা করতে হয়। এর মধ্যে নতুন করে যোগ হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ের ডিজিটাল নিরাপত্তা ও আইসিটি আইন। এই আইনের আওতায় শত শত মামলা হয়েছে। এর বেশির ভাগ অংশই হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ে সাংবাদিকতার জন্য। কোনো ব্যতিক্রম কিছু ঘটলে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এই মামলাগুলো জুড়ে দেওয়া হয়। তার মানে কী দাঁড়ায়? স্থানীয় শক্তির সঙ্গে এই আইনের ভয়ভীতিটুকুও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কাজ করে।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত দেশে ১১৯ জন সাংবাদিক বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন, হয়রানি, হুমকির শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ১৪ জন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সদস্য বা তার সহযোগীদের কাছ থেকে হুমকির শিকার হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে হয়রানির শিকার হয়েছেন ২১ জন। খবর প্রকাশ করার জন্য মামলা হয়েছে ২০ জনের বিরুদ্ধে, দুর্বৃত্তদের হাতে নির্যাতন, হামলা, হুমকি, হয়রানির শিকার হয়েছেন ১৮ জন। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ছয় মাসের মানবাধিকার প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গত ছয় মাসে ২৪টি মামলা হয়েছে। এ ২৪টি মামলা পর্যালোচনা করে আসক বলেছে, ২৪টি মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ৬০। এর মধ্যে তাৎক্ষণিক ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২৪টি মামলার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করার অভিযোগে ৫টি মামলা হয়েছে, যেখানে আসামি করা হয়েছে পাঁচজনকে এবং তাৎক্ষণিকভাবে চারজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। সাংবাদিক ও সব মুক্তচিন্তা চর্চাকারীর বিরুদ্ধে করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ইতিমধ্যেই নিবর্তনমূলক আইনে পরিণত হয়েছে।
শুধু নির্যাতন, হয়রানি আর হুমকিই নয়, হত্যা, গুম, খুন ও অপহরণের ঘটনাও ঘটেছে কয়েক দশক ধরে। আসক এক জরিপে জানিয়েছে, গত ১০ বছর এ ধরনের ঘটনার শিকার হয়েছেন ৩০ জন সাংবাদিক। এসব ঘটনায় জড়িতদের বিচার হওয়ার নজির খুব কমই। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সাংবাদিক হত্যার বিচার ঝুলে আছে দীর্ঘসূত্রতায়। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর ও রুনি। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার ঘোষণা দেন।
কিন্তু এক দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও আজও শেষ হয়নি তদন্তের কাজ। এরই মধ্যে ৯৯ বার পিছিয়েছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ। এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ সেঞ্চুরি পেরিয়ে গেলেও আশ্চর্য হব না। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া নিয়ে যা শুরু হয়েছে তাতে অনেকেই বলছেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার তো দূরে থাক, তদন্ত প্রতিবেদনও জমা পড়বে কি না, সন্দেহ। কারণ হিসেবে তাঁরা বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের এমন ঘনিষ্ঠ কেউ জড়িত যে তাদের নাম পর্যন্ত নেওয়া কড়াকড়িভাবে নিষেধ করা আছে। এসব কথার পেছনের সত্যটা কী, তা বলা মুশকিল।
অনেকে বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে দুটো ঘটনার রহস্য কখনো উন্মোচিত হবে না। এক. বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা এবং দুই. সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড। তবে মানুষের এ ধারণা পাল্টানোর জন্য সরকারেরই উচিত উদ্যোগ গ্রহণ করা। তা না হলে মানুষের ধারণাই প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ থেকে যাবে।
সাংবাদিক নির্যাতন করলে কিংবা হত্যা করলেও যে কোনো শাস্তি হয় না, এমন ধারণা প্রায় প্রতিষ্ঠিতই হয়ে গেছে। ক্ষমতার বলয়ের মানুষদের ভেতর একরকম ধারণাই সৃষ্টি হয়েছে যে সাংবাদিক পেটালে পার পাওয়া যায়। দীর্ঘদিনের বিচারহীনতা এর মূল কারণ। ২০০০ সালে যশোরে জনকণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি শামছুর রহমান কেবল হত্যা, ২০০১ সালে দৈনিক অনির্বাণের সাংবাদিক এস এম নহর আলী হত্যা, ২০০২ সালে খুলনার দৈনিক পূর্বাঞ্চলের স্টাফ রিপোর্টার হারুনার রশীদ খোকন হত্যার বিচার হয়নি আজও। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে সাংবাদিক পেটালে বা হত্যা করলে সমাজের কারও যেন কিচ্ছু যায়-আসে না।
এটা নিঃসন্দেহে সাংবাদিক নেতাদের চরম ব্যর্থতা। ব্যক্তিগত সুবিধাভোগের লালসায় আজকাল এসব হত্যাকাণ্ডসহ সাংবাদিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ জোরালো প্রতিবাদ করতেও দেখা যায় না তারকা সাংবাদিকদের। উচ্চপর্যায়ের সংবাদ সম্মেলনে এসব তারকা সাংবাদিকদের যেভাবে তোষামোদ করতে দেখা যায়, তাতে তাঁদের আত্মসম্মানবোধ নিয়েও প্রশ্ন জাগে।
রাজনৈতিক কারণে সাংবাদিকেরা আজ দ্বিধাবিভক্ত। সাংবাদিকদের এই দ্বিধাবিভক্তির পূর্ণ সুযোগ নিচ্ছে ক্ষমতাসীনেরা। এ যেন ব্রিটিশদের ‘Divide and Rule’ পলিসির ফল ভোগ করার মতো। ফলে সাংবাদিকদের ওপর যে এত অনাচার ও অবিচার হচ্ছে, সে ব্যাপারে সরকারের ওপর আগে যতটা চাপ সৃষ্টি করা যেত, এখন তা-ও সম্ভব হচ্ছে না। মুক্ত ও নিরাপদ সাংবাদিকতার এই সংকট নিরসনে সরকারের সদিচ্ছা থাকলে যেকোনো মুহূর্তে তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।সরকার সে পথে হাঁটছে বলে মনে হচ্ছে না। এ কারণেই স্বাধীন গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতায় বিশ্বাস করে বলে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা হরহামেশাই যে দাবি করেন, আমরা তার প্রমাণও দেখতে পাচ্ছি না।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও কলাম লেখক
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪