হোম > জাতীয়

অবশেষে জাহাজের মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করল সোমালি জলদস্যুরা

সবুর শুভ, চট্টগ্রাম

আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৪, ১৭: ৫১

অবশেষে আলোচনার দুয়ার খুলল। মুক্তিপণ নিয়ে দেনদরবারের জটও খুলে গেল। ২৩ জন নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর জিম্মি দশার ৯ দিনের মাথায় সোমালিয়ার জলদস্যুরা জাহাজের মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে জলদস্যুদের সঙ্গে এসআর শিপিং কর্তৃপক্ষের কথা হয়েছে বলে জানান কোম্পানির মুখপাত্র মো. মিজানুল ইসলাম।

এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ ও এর ২৩ নাবিকের জিম্মি দশার এ অবস্থায় জলদস্যুদের সঙ্গে মালিকপক্ষের যোগাযোগের বিষয়টিকে আশাব্যঞ্জক বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন।

২০১০ সালে জিম্মি করা একই কোম্পানির আরেক জাহাজ জাহান মনির ক্ষেত্রেও মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগে একই সময় নিয়েছিল দস্যুরা। মুক্তিপণ দিয়ে ১০০ দিন পর জাহান মনি এবং ২৫ নাবিক ও প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রী মুক্ত হন।

এমভি আবদুল্লাহর ক্ষেত্রে কত দিন লাগতে পারে সেটিই এখন দেখার বিষয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) সভাপতি ক্যাপ্টেন এম আনাম চৌধুরী।

চরম উৎকণ্ঠায় থাকা জিম্মি জাহাজের নাবিকদের পরিবারের লোকজনও এ যোগাযোগের খবরে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন।

কমান্ডো অভিযান চালিয়ে জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধার তৎপরতা নিয়ে আলোচনার মাঝেই এ ধরনের খবর নিঃসন্দেহে স্বস্তির বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জাহাজের ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি এড়ানোর জন্য সব পক্ষের পছন্দের পথ এটিই।

তথ্যমতে, জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও ২৩ নাবিকের জিম্মি দশার ৯ দিন অতিবাহিত হয়েছে। গত শনিবার (১৬ মার্চ) রাত ৮টায় সর্বশেষ এক নাবিকের সঙ্গে মালিকপক্ষের যোগাযোগ হয়। তাঁর বরাত দিয়ে কেএসআরএমের মুখপাত্র মো. মিজানুল ইসলাম তখন জানিয়েছিলেন, জাহাজের সবাই সুস্থ ও নিরাপদে আছেন। এরপর আর কোনো যোগাযোগ হয়নি।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) রাত ৮টার দিকে সোমালিয়ার গ্যারাকাদ উপকূল থেকে সাত নটিক্যাল মাইল (১ নটিক্যাল মাইল সমান ১ দশমিক ৮৫২ কিলোমিটার) দূরে দস্যুরা প্রথমে জাহাজটি নোঙর করেছিল। এরপর গত শুক্রবার (১৫ মার্চ) গ্যারাকাদ উপকূল থেকে ৪৫ থেকে ৫০ নটিক্যাল মাইল উত্তর দিকে জাহাজটির অবস্থান শনাক্ত করা হয়। উপকূলবর্তী গদবজিরান নামক স্থান থেকে মাত্র ৪ নটিক্যাল মাইল দূরে জাহাজটির সর্বশেষ অবস্থান ছিল ১৫ মার্চ রাত ৮টায়। এ অবস্থানের হেরফের হওয়ার কথা এখনো শোনা যায়নি।

তথ্যমতে, গত শনিবার (১৬ মার্চ) ভারতীয় নৌবাহিনীর সদস্যরা দস্যুদের নিয়ন্ত্রণে থাকা মাল্টার পতাকাবাহী কার্গো জাহাজ এমভি রুয়েন উদ্ধার করেন। গত ডিসেম্বরে জলদস্যুরা ওই জাহাজ ছিনতাই করে। কমান্ডো অভিযান চালিয়ে ভারতীয় নৌবাহিনী ওই জাহাজের ১৭ নাবিককে মুক্ত এবং ৩৫ জলদস্যুকে আটক করে।

এরপর এমভি আবদুল্লাহকে উদ্ধারে আন্তর্জাতিক নৌ সেনা ও সোমালিয়ার আধা স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল পান্টল্যান্ড পুলিশের যৌথ অভিযানের প্রস্তুতির কথা গণমাধ্যমে আসে। এতে নড়েচড়ে বসে জাহাজের মালিকপক্ষ ও সরকার। এ ধরনের অভিযানকে বিপজ্জনক বলে মনে করছে সব পক্ষ। নৌ বিশেষজ্ঞরাও একই মত দিয়েছেন। দস্যুদের সঙ্গে যেকোনো উপায়ে সমঝোতাই জাহাজ ও জিম্মি মুক্তির একমাত্র নিরাপদ উপায় বলছেন তাঁরা।

দস্যুদের সঙ্গে সর্বশেষ যোগাযোগের ব্যাপারে মো. মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে জলদস্যুদের যোগাযোগ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আলাপ-আলোচনার একটা পরিবেশ সৃষ্টির সুযোগ হলো।’ তবে মুক্তিপণের বিষয়ে কথা হয়নি বলে জানান তিনি। যদিও আন্তর্জাতিক লবিস্টদের সঙ্গে মুক্তিপণের বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে বলে জানান মিজানুল ইসলাম।

উল্লেখ্য, ১২ মার্চ থেকে সোমালি দস্যুদের কবজায় রয়েছে এসআর শিপিংয়ের কয়লাবোঝাই এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ। এর পর থেকে এ জাহাজে থাকা ২৩ নাবিকের আত্মীয়স্বজনদের চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। এর মধ্যে জাহাজ মালিকপক্ষ ও দস্যুদের মধ্যে যোগাযোগ হওয়ার খবর আসায় জিম্মিদের পরিবারে কিছুটা হলেও স্বস্তি আসবে বলে মনে করছেন জাহান মনিতে জিম্মি দশা থেকে মুক্ত মো. ইদ্রিস।

দেশের উন্নয়নে ৬১ লাখ আনসার-ভিডিপিকে কাজে লাগাতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সংস্কার প্রতিবেদন থেকে হবে নতুন নির্দেশিকা, তার ভিত্তিতেই নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা

জুলাই গণহত্যার বিচার নির্বাচনের আগেই সম্ভব: আসিফ নজরুল

সংস্কারের ৬ প্রতিবেদন নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে ফেব্রুয়ারিতে সংলাপ

সেকশন