চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণের দাবিতে এক শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ ভবনে আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে চূড়ান্ত পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ ও বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে অনুমতিবিষয়ক ‘অ্যাপেয়ার্ড সার্টিফিকেটের’ দাবিও জানান।
অবরুদ্ধ থাকা শিক্ষক হলেন ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক এস এম কামরুজ্জামান। গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাঁকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন শিক্ষার্থীরা। সে সময় বিষয়টি সমাধানে বিভাগের শিক্ষকেরা জরুরি বৈঠক করছিলেন।
বিভাগের শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে, ভেটেরিনারি বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের শিক্ষার্থীরা তাত্ত্বিক অংশ শেষ করে গত বছরের আগস্টে ইন্টার্নশিপ শুরু করেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ওই ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে ইন্টার্নশিপ চলাকালীন বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অ্যাপেয়ার্ড সার্টিফিকেট দাবি করলে শিক্ষকেরা মৌখিক সম্মতি দেন। পরে বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে আনুষ্ঠানিক আবেদন করেন শিক্ষার্থীরা। তবে মাত্র দেড় মাস ইন্টার্নশিপ হওয়ায় বিভাগীয় একাডেমিক কমিটি তাঁদের অনুরোধ নাকোচ করে দেয়। পরে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি দিলে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের পক্ষে সংশ্লিষ্ট বিভাগে অনুরোধ জানানোর আশ্বাস দেন।
উপাচার্যের অনুরোধে শিক্ষার্থীরা বিভাগে আবারও আবেদন করলে পুনরায় নাকোচ করে দেওয়া হয়। পরে শিক্ষার্থীরা আরও এক দফা প্রশাসনের সহযোগিতা চান এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে ইন্টার্নশিপে থাকা শিক্ষার্থীরা কর্মবিরতিতে যান। পরে তাঁরা গত মঙ্গলবার অবস্থান কর্মসূচি ও গত বুধবার বিভাগের সভাপতিকে অবরুদ্ধ করে ‘ডিপার্টমেন্ট ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন। এদিন প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা গিয়ে শিক্ষার্থীদের ‘ইতিবাচক’ আশ্বাস দিয়ে সভাপতিকে মুক্ত করেন। এরপর আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় আন্দোলনকারীরা ওই ব্যাচের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক এস এম কামরুজ্জামানকে অবরুদ্ধ করেন।
ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের শিক্ষার্থী শোভন বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের কারিকুলামের তাত্ত্বিক অংশের পড়াশোনা শেষ। এখন ইন্টার্নশিপ চলছে। এ সময় বিভাগ চাইলে শিক্ষার্থীদের অ্যাপেয়ার্ড সার্টিফিকেট দিতে পারে, যার মাধ্যমে বিসিএসসহ চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা যায়। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সুযোগ দেওয়া হলেও আমাদের দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের দাবি, আজকের ভেতরেই অ্যাপেয়ার্ড সার্টিফিকেট দিতে হবে এবং অবিলম্বে পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করতে হবে।’
এ বিষয়ে জানতে অবরুদ্ধ শিক্ষক অধ্যাপক এস এম কামরুজ্জামানের মোবাইল ফোনে কল করলে তিনি কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মইজুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী বিভাগের পরীক্ষাসহ একাডেমিক বিষয়ের দায়িত্ব বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কোনো নির্দেশনা দেওয়ার এখতিয়ার নেই।