গাজীপুর (শ্রীপুর) প্রতিনিধি
‘আমাদের বাসটি আগে ছিল, পেছনে ছিল আগুন লাগা বাসটি। আমাদের বাসে সবাই প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। পেছনে বড় ভাইদের বাস। রাস্তা সরু থাকায় বাসগুলো ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। পেছনের বাস থেকে হঠাৎ করে ডাক চিৎকার করে বলছে, ‘তোমাদের কাছে পানি আছে দ্রুত পানি দাও। আমাদের বাসে আগুন লাগছে। পানি দাও।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পিকনিক বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিন সহপাঠীর মৃত্যু ঘটনার এমন হৃদয়বিদারক বর্ণনা দেন ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি) বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মাহিদ হাসান শিশির।
তিনি বলেন, তাদের কাছে থাকা বোতলের পানি ছিটাতে থাকেন। এ সময় স্থানীয়রাও তাঁদের সহযোগিতা করে। হঠাৎ করে স্থানীয়রা বলেন, একজন মারা গেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এরপর আশপাশের মানুষ আমাদেরকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনে। ওদিকে কী হয়েছে আমরা বলতে পারব না। আমরা হেঁটে, কেউ অটোরিকশা যোগে রিসোর্টে আসি। এখন এখানেই রয়েছি। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’
তদন্ত কমিটি
এদিকে পিকনিকে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালমা আক্তারকে প্রধান করে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে গাজীপুর জেলা প্রশাসন। তবে কত কার্য দিবেসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবে সেটি নিশ্চিত করেননি তিনি।
আজ শনিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন। তিনি জানান, আইইউটির তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালমা আক্তারকে প্রধান করে চার সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ, শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল ও ময়মনসিংহ পল্লী সমিতি-২ মাওনা জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার।
উল্লেখ্য, আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি) পিকনিকবাহী বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে অগ্নিসংযোগে মোস্তাকিম রহমান মাহিম, মোজাম্মেল হোসেন ও জুবায়ের রহমান সাকিব নামের তিন শিক্ষার্থী মারা যায়। অপর তিনজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।