হোম > সারা দেশ > রংপুর

মাহিন বেঁচে নেই জানেন না মা, বাবা ছুটেছেন ঢাকা

শিপুল ইসলাম, রংপুর 

বিদ্যুতায়িত বাসে মারা যাওয়া মুবতাছিন রহমান মাহিন। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিকনিকে যাওয়ার পথে সকালে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছে ছেলে। সকাল থেকে দুপুর, দুপুর গড়িয়ে বিকেল, প্রতিবেশি-স্বজনেরা মৃত্যুর খবর জানলেও মা জানেন ছেলে আহত হয়েছে। ছেলের মরদেহ আসা পর্যন্ত যেন মায়ের কানে মৃত্যুর খবর না পৌঁছায় সে জন্য স্বজনেরা চালাচ্ছেন জোর প্রচেষ্টা। প্রতিবেশী ও অন্য কাউকে বাড়ির আশেপাশে ভিড়তে দিচ্ছে না তাঁরা।

আজ শনিবার সকালে গাজীপুরের শ্রীপুরে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) পিকনিকের দোতলা বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যাওয়া তিনজনের মধ্যে রয়েছেন মুবতাছিন রহমান মাহিন। রংপুর নগরীর জুম্মাপাড়ায় তাঁর বাড়িতে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা যায়।

মাহিনের বাবা ইমতিয়াজুর রহমান এবি ব্যাংকের সৈয়দপুর শাখার ব্যবস্থাপক। দুই ভাইয়ের মধ্যে মাহিন বড়।

মা-বাবা ও পরিবারের খুব আদরের ছিল মাহিন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালি গ্রামে তাঁকে বহন করা বিআরটিসির দোতল বাসটি পৌঁছালে ঝুলে থাকা তারে বিদ্যুতায়িত হয়ে মাহিনসহ আইইউটির তিন শিক্ষার্থী মারা যান। এ ঘটনায় আহত হন আরও তিন জন।

বিকেলে মাহিনের বাড়িতে যাওয়ার পথে পুরো এলাকা থমথমে দেখা যায়। মোড়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রতিবেশিরা তাঁর মৃত্যুর খবর নিয়ে আলোচনা করছেন। তবে বাড়ির আশেপাশে কাউকে দেখা যায়নি।

মুবতাছিন রহমান মাহিনের চাচা হাসান রহমান জানান, আইইউটি ইউনিভার্সিটিতে ক্যারিয়ার অ্যান্ড বিজনেস সোসাইটিতে শেষ বর্ষে পড়ছিল। সকালে সে বাসে বিদ্যুতায়িত হয়ে পুড়ে মারা গেছে। মাহিনের বাবা ঢাকার পথে রওনা দিয়েছে। বিষয়টি এখনও তাঁর মাকে জানানো হয়নি। ছেলের মৃত্যুর খরব তাঁর মা সহ্য করতে পারবে না। এ জন্য বাড়ির আশেপাশে কাউকে আসতে দেওয়া হচ্ছে না।

মাহিনের বাড়ির নিচে স্বজনদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুবতাছিন রহমানের চাচা হাসান রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার বাবা (মাহিন) গেছে ওখানে (আইইউটি) ভালো কিছু করে আসবে। তাঁর কোনো ক্ষতি কল্পনাতেই আসে না। তাকে ফিরতে হবে লাশ হয়ে এর মতো দুঃখজনক কিছু হতেই পারে না। এখানে শতভাগ একটা অবহেলা ছিল, দায়িত্বে ছিল যারা। একটা তার ঝুলে পড়বে গায়ের মধ্যে এটা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই, কার অবহেলার কারণে আমাদের সন্তানকে হারাতে হলো, এমন ঘটনা ঘটল।

চাচাতো ভাই ইমতিয়াজ রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সর্বশেষ দুই সপ্তাহ আগে কথা হয়েছিল। আর কথা হয়নি। অনেক ভালো ছিল মাহিন ভাই। কখনও কারও সঙ্গে খারাপ আচারণ করতো না। আমাদেরকে অনেক ভালোবাসত। ভাইকে অনেক মিস করব। আমার ভাইয়ের মতো যেন আর কারও মৃত্যু না হয় আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি।’

মাহিনের মৃত্যুর খবরে ভেঙে পড়েছে ছোটবেলার বন্ধু তাসিম। মাহিনের বাড়ির পাশে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাসিম বলেন, ‘আন্দোলনের সময় তিন মাস একসাথে ছিলাম। কিন্তু পরীক্ষা থাকায় সে ঢাকায় চলে যায়। প্রায় দুই থেকে তিন সপ্তাহ আগে হঠাৎ সে বাড়িতে আসছিল। যাওয়ার সময় খুব তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফিরবে বলে জানিয়েছিল। কিন্তু বন্ধু যে সারা জীবনের জন্য ফিরবে তা কল্পনাও করতে পারছি না।’

প্রতিবেশি জাকির হোসেন বলেন, ‘মাহিন ছিল শান্ত প্রকৃতির। সে বাড়ি থেকে খুব কম বের হত। আমরা সকালে খবর পাইছি মাহিন আগুনে পুড়ে মারা গেছে। কিন্তু ওর মা তা জানে না। তাই বাড়িতে কাউকে যেতে দিচ্ছে না। ওর মা জানে মাহিন আহত হইছে। আল্লাহ ভালো ছেলেটাকে এভাবে কেড়ে নিল।’

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ধাক্কা খেয়েছে জনগণের প্রত্যাশা: নুর

রাজনৈতিক সরকার ছাড়া সংস্কার টেকসই হবে না: সিজিএস সংলাপে বক্তরা

সিটি গ্রুপের ভোজ্যতেলের কারখানা পরিদর্শনে ভোক্তা-অধিকারের কর্মকর্তারা

চট্টগ্রামে পাহাড়ের জমি থেকে দখলদার উচ্ছেদ

আন্তকলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় মাইলস্টোন কলেজের সাফল্য

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প পরিদর্শনে তিন উপদেষ্টা

লালমনিরহাটে ট্রেনে কাটা পড়ে শিশুর মৃত্যু

পদ্মা নদী থেকে অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার

৩৪ মাস ধরে পরিত্যক্ত ভবনে ইউএনও, রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ

বগুড়ায় ৬ জনকে কুপিয়ে জখম, অভিযোগ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে

সেকশন