নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর বাসভবনে আগুনে পুড়ে নিহত তিনজনের পরিচয় নিশ্চিত করেছিল ফায়ার সার্ভিস। নিহতদের একজনকে বাড়িটির কর্মচারী প্রশান্ত বলা হলেও তাঁকে জীবিত পাওয়া গেছে। লাশটি মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর গাজী নঈমুল হোসেন লিটুর (৫৮) বলে শনাক্ত করেছেন স্বজনেরা।
ঘটনার ৫ দিন পর আজ শুক্রবার দুপুরে পরিবারের সদস্যরা শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের মর্গে তাঁর পরিচয় শনাক্ত করেন। অজ্ঞাত হিসেবে মৃতদেহটি এত দিন শেবাচিমর হিমাগারে ছিল।
গত সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নগরের কালিবাড়ি সড়কে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর বাসায় আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। রাত ৯টার দিকে আগুন নেভানোর পর বাসার দোতালার বিভিন্ন কক্ষে তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। পরদিনই দুজনের পরিচয় শনাক্ত করেন স্বজনরা।
তাঁরা হলেন-হাসানাতের বড় ছেলে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী কর্মী মঈন জমাদ্দার (৪০) ও নুরুল ইসলাম নুরু (৪৫)। আরেক মরদেহের শনাক্ত না হওয়ায় অপর মৃতদেহটি মর্গে রাখা ছিল।
আজ শুক্রবার লিটুর ভাই মঞ্জুর হোসেন বরুন জানান, সোমবার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন বেলা আড়াইটার দিকে তিনি হাসানাত আবদুল্লাহর বাসায় যান। বেলা ৩টা ৩৫ মিনিট সর্বশেষ পরিবারের সঙ্গে কথা হয়। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ওই বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ঘটনার কয়েক মিনিট আগে সাদিক আবদুল্লাহর সঙ্গে থাকা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতাকর্মী পালাতে সক্ষম হন।
তিনি বলেন, মোবাইল সচল থাকলেও অ্যারোপ্লেন অপশন অন ছিল। যে কারণে তাঁকে খুঁজতে মোবাইল ফোনে বারবার কল দেওয়া হলেও বন্ধ পাওয়া গেছে।
নাইমুল হোসেন লিটু ২০০৮ সাল থেকে টানা চার বার বরিশাল সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ছিলেন। বিগত পরিষদে ১ নম্বর প্যানেল মেয়র ছিলেন। জনপ্রতিনিধি হওয়ার আগে তিনি নগরের নতুন বাজারে মথুরানাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিএসসি শিক্ষক ছিলেন। যে কারণে তিনি ‘লিটু স্যার’ নামে বেশি পরিচিত। তাঁর বাবা মরহুম অধ্যক্ষ হোসেন আলী ছিলেন ভাষা সৈনিক। পুরো পরিবারই আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। লিটুর একমাত্র ছেলে কানাডা প্রবাসী বলে জানা গেছে।