‘করোনার কারণে কর্মহীন হওয়ায় অনেকে বিপদে পরে যায়। তখন আমরা চিন্তা করি স্থায়ী প্রোজেক্টের মাধ্যমে কীভাবে এদের স্বাবলম্বী করা যায়। তখন পটুয়াখালীবাসী যুব সংগঠনের উদ্যোগে 'স্বাবলম্বী' প্রজেক্ট শুরু করি। এই উদ্যোগের অধীনে সামর্থ্যবানদের সহযোগিতায় এ পর্যন্ত ৬ জনকে ভ্যানগাড়ি কিনে দিয়েছি, ব্যবসা করার জন্য নগদ টাকা দিয়েছি।’
কথাগুলো পটুয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞানে মাস্টার্স করে একটি ফ্লেক্সিলোডের দোকানে কাজ করা মাহমুদ হাসান রায়হানের। আর্তমানবতায় কাজ করে মানসিক স্বস্তির জায়গা থেকে তিনি এ উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সমাজের বিত্তবান মানুষের সহযোগিতায় এমন বহু মানুষকে সহযোগিতা করেছেন রায়হান।
সংগঠনটির কার্যক্রমের মধ্যে এ পর্যন্ত ২ হাজার গরিব শিক্ষার্থীর মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, ৪০০ গরিব শিক্ষার্থীকে স্কুলব্যাগ প্রদান, দরিদ্রদের মাঝে বাছুর ও ভ্যানগাড়ি বিতরণ, উপকূলীয় অঞ্চলে তালগাছের বীজ রোপণ, পূজার পোশাক বিতরণ, প্রতিবন্ধী ও প্যারালাইজড মানুষের জন্য হুইলচেয়ার প্রদান, শীতবস্ত্র বিতরণ, মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনার আসর, দেয়াল লিখনসহ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, মহান বিজয় দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, দুস্থ শিশুদের নিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। করোনাকালেও অসহায় ও কর্মহীন মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। মাইকিং করে মানুষকে সচেতন করেছেন, অসহায় ও কর্মহীনদের ঘরে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। বিনা মূল্যে অক্সিজেন সেবা, স্বল্পমূল্যে শাক-সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রি করেছেন।
শহীদ আলাউদ্দিন শিশুপার্ক এলাকার মো. মফিজুর রহমান সোহেল বলেন, রায়হান আপদে-বিপদে যেভাবে এসে মানুষের পাশে দাঁড়ান এবং সেবা করেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। রায়হান আমাদের এলাকার ছেলে। তাঁর জন্য আজ আমরা গর্বিত। রায়হান শুধু পটুয়াখালীর জন্য না, সারা বাংলাদেশের জন্য দৃষ্টান্ত।
মাহমুদ হাসান রায়হান আরও বলেন, ‘আমি এবং আমার সংগঠন ‘‘একটি মানবিক পটুয়াখালী’’ তৈরির চেষ্টা করছি। আমি ঝুঁকি নিয়ে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো মানব সেবায় ব্যয় করেছি। অসহায়, অভাবী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করেছি। যত দিন বেঁচে থাকব আমি আমার সংগঠন নিয়ে মানুষের পাশে থাকব। তাতে আমার জীবনে যত বাধা-বিপত্তি আসুক না কেন। সব বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে আমি মানুষের কল্যাণে ও আর্তমানবতার সেবায় কাজ করে যাবই। মানুষ তো মানুষের জন্যই।’