মো. সাইফুল ইসলাম আকাশ, ভোলা
দ্বীপ জেলা ভোলার দুই শ বছরের ঐতিহ্য মহিষের দুধের কাঁচা টক দই বা ‘মইষা দই’ জিওগ্রাফিকাল আইডেনটিফিকেশন (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি মিলেছে। গত ২৪ সেপ্টেম্বর ২৯ নম্বর শ্রেণিতে জিআই-৫৫ হিসেবে স্বীকৃতি পায় পণ্যটি।
পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মুনিম হাসানের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. আরিফুজ্জামান মহিষের দুধের কাঁচা দইকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির জন্য পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে আবেদন করেন।
দীর্ঘদিন পর এ স্বীকৃতি পাওয়ায় জেলার দই ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। জানতে চাইলে ঘুইংহাট বাজারের বিসমিল্লাহ দধি ঘরের মালিক মো. মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে খামারিরা দুধ দিয়ে যায় এবং সেগুলোকে ছোট ছোট হাঁড়িতে বেলা একটার মধ্যে বসিয়ে পর দিন সেগুলো দধিতে পরিণত হয়।’
জেলার প্রবীণ সাংবাদিক মো. শওকত হোসেন বলেন, ‘আটশো বছরের পুরোনো দ্বীপজেলা ভোলা, ধান সুপারির পরে এ জেলা গ্যাসের জন্য সারা দেশের মানুষের কাছে পরিচিত। মহিষের দধি আগেও মানুষের কাছে প্রিয় ছিল কিন্তু এটি স্বীকৃতি পায়নি। জেলার চরাঞ্চলে নানা সমস্যা ও বিভিন্ন রোগের কারণে মহিষের পালন কষ্ট হয়ে যাচ্ছে, অনেক মহিষ মারা যাচ্ছে, মহিষের চারণ ভূমিগুলো আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে, মহিষের জন্য যে খাদ্য প্রয়োজন তা পর্যাপ্ত পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত ছিল কিন্তু তা করা হয়নি, এখন স্বীকৃতি পেয়েছে আশা করি, সরকার এ ব্যাপারে একটি বড় প্রকল্প নিয়ে কাজ করবে।’
জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আজাদ জাহান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ধান–সুপারি, ইলিশের গোলা এ তিনে ভোলা। এখন সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মহিষের দই। ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দইয়ের স্বীকৃতি সেটি অন্য জেলায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। মহিষের দুধের কাঁচা দই ভোলার ঐতিহ্য। এটি অন্য জেলার হতে পারে না। জেলা প্রশাসন ও স্থানীয়দের চেষ্টায় জিআই-৫৫ নম্বরে এটি তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।’
মো. আজাদ জাহান আরও বলেন, ‘মহিষের কাঁচা দইয়ের উৎপাদন বাড়াতে শিল্প ও একটি বৃহত্তম প্রকল্পের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করবে জেলা প্রশাসন।’