আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি
আজ বুধবার বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশের বিজয় ঘোষিত হলেও ৬ দিন পরে আজ এই দিনে বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বিজয় পতাকা উড়েছিল। দীর্ঘ ২৮ দিন ধরে মুক্তিবাহিনী ও মুজিববাহিনীর যৌথ আক্রমণের পর ওই দিন শতাধিক পাকিস্তানি সেনা মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। ফলে আগৈলঝাড়া বাংলাদেশের সর্বশেষ হানাদারমুক্ত এলাকা।
জানা যায়, স্বাধীনতাযুদ্ধের ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখানে এখনো সরকারি উদ্যোগে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে কোনো স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়নি। হানাদার বাহিনী ও তাঁদের দোসররা নির্বিচারে সহস্রাধিক লোক হত্যা করেছিল। পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের দোসরদের হাতে তিন শতাধিক মা-বোনকে ইজ্জত হারাতে হয়েছিল। এ এলাকায় সর্বপ্রথম সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, অ্যাড আব্দুল করিম সরদার এমএনএর উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করা হয়। ওই দলের প্রধান ছিলেন মতিয়ার রহমান তালুকদার। তাঁর সহযোগী ছিলেন নুর মোহম্মাদ গোমস্তা।
কোটালীপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা হেমায়েত উদ্দিনের নেতৃত্বে গঠন করা হয় হেমায়েত বাহিনী। তিনি ও তাঁর বাহিনী আগৈলঝাড়া-রামশীল-পয়সারহাট-সিকিরবাজার এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধ করেন। সর্বশেষ মুজিব বাহিনীর একটি দল ভারত থেকে ট্রেনিং শেষে আগৈলঝাড়া-গৌরনদীতে এসে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
ওই দলের নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি। এ ছাড়া রকিব সেরনিয়াবাত, ফজলুর রহমান হাওলাদার ও মেজর শাহআলম তালুকদার তাঁর সহযোগী ছিলেন। বরিশালের বিভিন্ন এলাকায় পাকিস্তানি সেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ১৬ ডিসেম্বরের আগে আত্মসমর্পণ করলেও এই এলাকায় পাকিস্তনি সেনারা দীর্ঘ ২৮ দিন যুদ্ধের পরে ২২ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। যে কারণে আজকের এই দিনটি আগৈলঝাড়া মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করা হয়।