নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের সময় নিহত নাহিদ হাসানের মৃত্যুর ঘটনায় করা হত্যা মামলার ঢাকা কলেজের পাঁচ শিক্ষার্থীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রোববার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ওই পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন—ঢাকা কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আব্দুল কাইয়ুম, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মাহমুদ এরফান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র জুনাইদ বুগদাদী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের ছাত্র পলাশ মিয়া ও বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ফয়সাল ইসলাম। রোববার দুপুরে আসামিদের দুই দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক মো. তারিকুল আলম জুয়েল। শুনানি শেষে মহানগর হাকিম মেহেদী হাসান প্রত্যেককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গত ২৮ এপ্রিল ওই পাঁচ ছাত্রকে ২ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে পুলিশ প্রতিবেদনে বলা হয়, নাহিদ হত্যার সঙ্গে এই আসামিরা জড়িত রয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এবং পারিপার্শ্বিক ঘটনা যাচাই বাছাই শেষে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদনে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানান।
এর আগে, গত ২০ এপ্রিল নিহত নাহিদের বাবা মো. নাদিম হোসেন বাদী হয়ে নিউমার্কেট থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় তিনি অজ্ঞাতনামাদের আসামি হিসেবে উল্লেখ করেন।
নাহিদ একটি কুরিয়ার সার্ভিসে ডেলিভারি ম্যান হিসেবে কাজ করতেন। ঘটনার দিন গত ১৯ এপ্রিল কামরাঙ্গীরচরে বাসা থেকে বের হয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেই তিনি মারা যান।
এর আগে, ১৮ এপ্রিল রাত ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলে এ সংঘর্ষ। এরপর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলেও ১৯ এপ্রিল সকাল ১০টার পর থেকে ফের দফায় দফায় শুরু হয় সংঘর্ষ, যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। আহতদের মধ্যে মারা যান নাহিদ ও মুরসালিন নামের একজন।