হোম > সারা দেশ > ঢাকা

কবুতরের মাংস-ভাত নিয়ে অপেক্ষায় মা, আন্দোলনে যাওয়া ছেলে ফিরলেন লাশ হয়ে 

গনেশ দাস, বগুড়া

সকালে বাড়িতে কবুতর জবাই করে মা জমেলা বেগমকে রান্না করতে বলে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যোগ দিতে যান রিকশাচালক কমর উদ্দিন (৪২)। দুপুরে বাড়িতে ফিরে ভাত খাওয়ার কথা। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেও বাড়িতে আসেনি কমর উদ্দিন। রান্না করা কবুতরের মাংস আর ভাত পরিবারের সবাই খেলেও মা জমেলা বেগম ভাত নিয়ে ছেলের অপেক্ষায় বসে থাকেন। একপর্যায়ে ফোন বন্ধ পেয়ে চিন্তায় পড়ে যান পরিবারের সবাই। 

রাত সাড়ে ৮ টার দিকে গ্রামের একজন খবর দেন গুলিতে নিহত হয়েছেন কমর উদ্দিন। তাঁর লাশ বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে।

কমর উদ্দিন বগুড়া পৌরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের চক আকাশ তারা গ্রামের মৃত কছির উদ্দিনের ছেলে। গত ৪ আগস্ট (রোববার) দুপুরে বগুড়া শহরের নবাববাড়ি সড়কে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি।

আজ সোমবার কমর উদ্দিনের বাড়িতে গেলে তাঁর মা জমেলা বেগম ছেলের ছবি আর রিকশা ধরে আহাজারি করে এভাবেই বর্ণনা করেন।

জমেলা বেগম বলেন, ছোট ছেলে কমর উদ্দিন রিকশা চালিয়ে সংসার চালাত। বাড়ির সাড়ে তিন শতাংশ জমি ছাড়া আর কোনো সম্পদ নেই। সাত মাসের গর্ভবতী স্ত্রী, মা, দুই ছেলে তৌহিদ (৬) এবং আব্দুল্লাহকে (২) নিয়ে কমর উদ্দিনের সংসার। মা জমেলা বেগম হোটেলে কাজ করলেও বয়সের কারণে এখন আর করতে পারেন না। রিকশা চালিয়েই ৫ জনের সংসার চালাতেন কমর উদ্দিন। 

জমেলা বেগম বলেন, ৪ আগস্ট সকাল ১০ টার দিকে মাথায় লাল কাপড় বেঁধে লাঠি হাতে ছাত্রদের আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন কমর উদ্দিন। দুপুরে বাড়ি ফিরে কবুতরের মাংস দিয়ে ভাত খাওয়ার কথা ছিল। আগের দিন শনিবারও সকালে আন্দোলনে গিয়ে দুপুর বাড়ি ফেরে কমর উদ্দিন। ভাত খেয়ে আবারও আন্দোলনে যোগ দিতে যায়। রোববার সকালে আন্দোলনে গিয়ে ফেরেন লাশ হয়ে।

কমর উদ্দিনের বড় ভাইয়ের ছেলে জহুরুল ইসলাম জীবন বলেন, প্রতিবেশী আসাদুল তাদেরকে জানায় দুপুর আড়াইটার দিকে কমর উদ্দিনকে ফতেহ আলী মোড় থেকে পুলিশ প্লাজা পর্যন্ত নবাববাড়ি সড়কে দেখা গেছে। পরে গুলিবিদ্ধ হলে লোকজন তাকে প্রথমে ডায়াবেটিস হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। পরে সেখান থেকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সন্ধ্যার পর তিনি মারা যান। কমর উদ্দিনের দেহে শটগানের ছড়রা গুলির অসংখ্য চিহ্ন দেখা গেছে।

কমর উদ্দিনের মা বলেন, হাসপাতাল থেকে পরদিন সোমবার সকালে লাশ নিয়ে আসা হয়। জানাজা শেষে গ্রামেই দাফন করা হয়।

কমর উদ্দিন মারা যাওয়ার খবর পেয়ে বিএনপির সাবেক এমপি হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু তাঁর বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা জানান এবং নগদ ১০ হাজার টাকা সহযোগিতা করেন। এ ছাড়া ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রুস্তম আলী ৫ হাজার, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ৫ হাজার টাকা এবং স্থানীয় বিএনপি কর্মী মিষ্টার হোসেন একটি ছাগল দিয়ে সহযোগিতা করেছেন বলে জানান জমেলা বেগম।

তিনি বলেন, ‘মানুষের দেওয়া টাকায় আর কত দিন চলবে? ছেলের বউ সাত মাসের গর্ভবতী, রক্ত শূন্যতায় ভুগছে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার জরুরিভাবে শরীরে রক্ত দিতে বলেছেন। আরও দুইটি শিশু সন্তান রয়েছে। তাদের মুখে ভাত তুলে দিব কীভাবে? বয়সের কারণে এখন আর হোটেলে কাজ করতে পারিনি। গর্ভবতী ছেলের বউ দুই নাতিকে নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ছেলে হারা জমেলা বেগম।’

প্রধান উপদেষ্টার সাবেক সহকর্মী পরিচয়ে পুলিশের কাছে চাঁদা দাবি, গ্রেপ্তার ১

সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ইউপিতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ভাঙচুর

পোলো বাওয়া উৎসবে মাতলেন শত শিকারি

‘হাইব্রিড’ বলায় সংঘর্ষ দোকান-বাড়ি ভাঙচুর

পলাতক আসামি অনুষ্ঠানের অতিথি, খুঁজে পায়নি পুলিশ

‘দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি না দেওয়ায় স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা’

কবি নজরুলের নাতি বাবুল কাজী ‘লাইফ সাপোর্টে’

মানিকগঞ্জে নদীর তীরে পার্বণ নবান্ন উৎসব

জাবির মেয়েদের হল থেকে বহিরাগত যুবক আটক

সেকশন