প্রতিনিধি, যশোর
ঈদের পর লকডাউনের প্রথম দিন সকালে যশোরের রাস্তাঘাটে তুলনামূলকভাবে সবকিছু স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা পাল্টে যায়। রাস্তার মোড়ে মোড়ে সেনা, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ আবারও কঠোর অবস্থান নেয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতও পরিচালনা করা হচ্ছে।
আজ শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমনটিই দেখা যায়।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. সায়েমুজ্জামান বলেন, ‘আজ সকাল থেকে লকডাউন শুরু হয়েছে। কিন্তু সে সময়ও কিছু নৈশকোচ যশোর হয়ে খুলনা, সাতক্ষীরাসহ অন্যান্য জেলায় যাচ্ছিল। ওই সব কোচে যেসব যাত্রী বাড়ি ফিরছিলেন তাঁদের কষ্ট লাঘবে সকালে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে। আমরা যখন নিশ্চিত হয়েছি যে আর কোনো পরিবহন নেই, তখন থেকেই কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়।’
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আরও বলেন, আজ সকাল থেকেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের একাধিক দল সড়ক ও মহাসড়কগুলোয় টহল দেয়। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে অনেককেই জরিমানা করা হয়েছে। গতবারের লকডাউনের মতো এবারও যশোরে দুপুর ১২টার পর ফার্মেসি ছাড়া কোনো দোকানই খোলা রাখা যাবে না। এর আগ পর্যন্ত শুধু কাঁচাবাজার ও নিত্যপণ্যের দোকান খোলা থাকবে। হোটেল, রেস্তোরাঁসহ সব ধরনের বিপণিবিতান ও চায়ের দোকান সব বন্ধ থাকবে। শুধু জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো মানুষ বাইরে বের হতে পারবে না। বের হলে তাদের জরিমানা ও সাজা দেওয়া হবে।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন বলেন, সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। দু-এক দিনের মধ্যে ফিডার রোড কিংবা সংযোগ সড়কগুলোও লক করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া টহল কার্যক্রমও বৃদ্ধি করা হয়েছে। অহেতুক ঘোরাঘুরি করলে তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন চলা পর্যন্ত প্রশাসন কঠোর অবস্থানেই থাকবে।
যশোরের সিভিল সার্জন ও করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব শেখ আবু শাহীন বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা আগের লকডাউনের সুফল পেতে শুরু করেছি। গত কয়েক দিনে মৃত্যু ও সংক্রমণের হার তুলনামূলক কমেছে। আমরা আশা করছি এবারও সাধারণ মানুষ সচেতন হবে এবং তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে। সেটি সম্ভব হলে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কমিয়ে আনা যাবে। সে লক্ষ্যে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ সমন্বিতভাবে কাজ করছে।’