কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার মিরপুরে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটি গঠন নিয়ে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আহত এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকালে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত ব্যক্তির নাম খোকন মোল্লা (৪০)। তিনি মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের বুড়াপাড়া গ্রামের নওশের মোল্লার ছেলে। খোকন মোল্লাকে নিজেদের কর্মী দাবি করে কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক সুজাউদ্দিন জোয়ারদার সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল রোববার বেলা ৩টার দিকে বুড়াপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটি গঠন নিয়ে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৮ জন আহত হন।
এই ঘটনায় স্থানীয় জামায়াত কর্মীদের ঘরবাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটি গঠন নিয়ে কয়েক দিন ধরেই ইউনিয়ন জামায়াতের আমির নাসিম রেজা মুকুল ও স্থানীয় বিএনপি কর্মী রাশেদ মাহমুদ নাসিরের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। দুজনেই কমিটির আহ্বায়ক প্রার্থী ছিলেন। অ্যাডহক কমিটি থেকে নাম প্রত্যাহারের জন্য মুকুলের ওপরে চাপ সৃষ্টি করছিলেন নাসির। এ নিয়ে বিরোধের জেরে গত শনিবার রাতে মুকুলকে হুমকি দেন নাসির। এর প্রতিবাদে গতকাল রোববার বেলা ৩টার দিকে বুড়াপাড়া স্কুল মাঠে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা।
প্রতিবাদ সভায় কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আবদুল গফুর উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিএনপির কর্মী নাসিরের সমর্থকেরা সেখানে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা ও উত্তেজনা শুরু হয়। একপর্যায়ে নাসিরের নেতৃত্বে তাঁর লোকজন হামলা চালান। এতে দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতদের উদ্ধার করে ছয়জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ১২ জনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে খোকনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সকালে তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক সুজাউদ্দিন জোয়ারদার বলেন, অতি সত্বর সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
মিরপুর উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব রহমত আলী রব্বান বলেন, রাশেদ মাহমুদ নাসির একসময় ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এখন তিনি বিএনপির সক্রিয় কর্মী।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।