হোম > সারা দেশ > রংপুর

‘চাকরি পেলেই ভাই আমাকে অনেক পুতুল কিনে দিত’

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

‘সন্ধ্যা নামলেই ভাইয়ের কথা বেশি বেশি মনে পড়ে। ঢাকায় যাওয়ার পর প্রতিদিন সন্ধ্যার পর ভাই মাকে ফোন দিত। আর একটু পড়া আছে, শেষ হলেই চাকরি পাবে। চাকরি পেলেই আমাকে অনেক পুতুল কিনে দেবে। ভাইয়ের এসব কথা খুব মনে পড়ে।’ 

কথাগুলো বলছিল কোটা সংস্কার আন্দোলনে রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত মারুফ হোসেনের ছোট বোন মাইসা। 

এদিকে একমাত্র ছেলের মৃত্যু সংবাদ আসার পর একবারই চিৎকার করে কেঁদে উঠেছিলেন মা ময়না খাতুন। এরপর বুকে পাথর চাপা দিয়েছেন। কোনো প্রশ্নের জবাব দেন না। কেউ কথা বললে শুধু তাকিয়ে থাকেন। এখন ছেলের থাকার ঘরে স্মৃতি হাতরে ফেরেন। নিহত ছেলের ঘরে তালা দিয়ে চাবিটা নিজের কাছে রেখেছেন। ইচ্ছে হলে ওই রুমে গিয়ে টেবিলের পাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকেন। ছেলের ব্যবহারের বাইসাইকেলে হাত বুলান। মায়ের সঙ্গে ভাইয়ের হাতের স্পর্শ খুঁজে ফেরে একমাত্র ছোট বোন মাইসাও। 

একমাত্র ভাইয়ের স্মৃতি তাড়া করে ফিরছে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মাইসাকে। সন্ধ্যার পরপরই ভাই মাকে ফোন করত। তার সঙ্গেও কথা বলত। চাকরি পেলেই তার পছন্দের অনেক খেলনা কিনে দেওয়ার কথা দিয়েছিল। কিন্তু ভাই আর নাই। এখনো সন্ধ্যা নামলেই ভাইয়ের ফেনের অপেক্ষা থাকে। ভাইয়ের কথাগুলো তার কানে বাজে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় রাজধানীতে নিজের ভাড়া বাসার সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শেষ বর্ষের পরীক্ষার্থী মারুফ হোসেন (২০)।

ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিতে নিহত মারুফ হোসেন কুষ্টিয়ার খোকসা পৌর এলাকার থানা পাড়ার শরিফ উদ্দিনের একমাত্র ছেলে। তিনি শেষ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়ে ইন্টার্নি ও চাকরির খোঁজে গত ২৯ জুন রাজধানী ঢাকায় যান। বন্ধুদের সঙ্গে বাড্ডা এলাকার একটি মেসে ওঠেন। ১৯ জুলাই দুপুরে তিনি ওই বাসার সামনেই গুলিবিদ্ধ হন। আহত অবস্থায় স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরদিন ২০ জুলাই সকালে ময়নাতদন্ত ছাড়াই খোকসা কেন্দ্রীয় পৌর ঈদগাহে জানাজা শেষে পৌর কবরস্থানে মারুফকে দাফন করা হয়। 

মারুফের মৃত্যুর পর বাবা-মা ও ছোট বোনটি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। ফুটপাতে ফল বিক্রেতা শরিফ উদ্দিন কাজে যান না। গত ৫ দিনে বাড়িতে উনুন জ্বলেনি। প্রতিবেশীরা পালা করে খাবার দিয়ে যাচ্ছেন পরিবারটিকে। 

বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, দুই কক্ষের চারচালা টিনের ঘরের বারান্দায় মা ময়না খাতুনকে ঘিরে প্রতিবেশী মহিলারা বসে আছেন। তাঁরা নানা কথা বলে তাঁকে (ময়না) সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কারও কথায় সাড়া নেই ময়না খাতুনের। নির্বাক তিনি শুধু শুনছেন। হঠাৎ করেই ছেলের ঘরের তালা খুলে টেবিলের কাছে গিয়ে দাঁড়ালেন। সরে গিয়ে ছেলের শোয়ার খাটে বসে বললেন, বাবার সাইকেল। এই সাইকেলেই বাবা (মারুফ) স্কুল করেছে। বাজারে ঘুরতে যেত। 

ভাইকে হারানো ছোট্ট মেয়ে মাইসা বলে, ‘সন্ধ্যা নামলেই ভাইয়ের কথা বেশি বেশি মনে পড়ে। ঢাকায় যাওয়ার পর প্রতিদিন সন্ধ্যার পর ভাই মাকে ফোন দিত। আর একটু পড়া আছে, শেষ হলেই চাকরি পাবে। আমাকে অনেক পুতুল কিনে দেবে। ভাইয়ের এইসব কথা খুব মনে পড়ে।’ 

নিহত মারুফের বাবা শরিফ উদ্দিন বলেন, ১৯ তারিখ শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে ছেলের সঙ্গে শেষবার কথা হয়। তখনো তাদের মেসে খাবার হয়নি। কথা শেষ হওয়ার আগেই লাইন কেটে যায়। আর কথা হয়নি। বিকেল ৫টার পর ছেলের সহপাঠী নবী তাঁকে ফোন দিয়ে মারুফের মৃত্যুর খবর জানায়। তিনি এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন।

কারাবন্দী স্বামীর হত্যার হুমকিতে তটস্থ সাথী হিজড়া

মাঘের শুরু হতেই শীতে বিপর্যস্ত দিনাজপুরবাসীর জনজীবন

হিলিতে ট্রেন থেকে পড়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত্যু

মেডিকেলে সুযোগ পেলেও মুখ মলিন

গাইবান্ধায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে অগ্নিকাণ্ডে ১ জনের মৃত্যু

দাফনের ৫ মাস পর যুবকের লাশ উত্তোলন

এ বছরেও মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেল সৈয়দপুর বিজ্ঞান কলেজের ৫৩ শিক্ষার্থী

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক এমপি কাদের খান মারা গেছেন

পঞ্চগড়ে আবারও তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রির ঘরে

সেকশন