হোম > অর্থনীতি

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির পরিকল্পনা শিল্প ধ্বংসের চক্রান্ত: বিপিজিএমইএ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১: ৩৮
পুরানা পল্টনের নিজস্ব কার্যালয়ে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ১৫০ শতাংশ গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল। এখন আবার নতুন করে মূল্যবৃদ্ধির পরিকল্পনাকে শিল্প ধ্বংসের একটি সুপরিকল্পিত চক্রান্ত হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিপিজিএমইএ)। তাদের মতে, এই উদ্যোগ শিল্পায়নকে ব্যাহত এবং নতুন বিনিয়োগে বাধা সৃষ্টি করে দেশের কর্মসংস্থানকে সংকুচিত করবে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সংকটের কারণে শ্রমিক অসন্তোষ, বেতন-বকেয়া এবং কারখানা বন্ধ হওয়ার ফলে শিল্প খাত আরও সংকটের দিকে ধাবিত হবে। গ্যাসের দাম বাড়ানোর এই সিদ্ধান্তে শিল্পোদ্যোক্তারা আরও গভীর সমস্যার সম্মুখীন হবেন, যা দেশের শিল্পক্ষেত্রের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

আজ রোববার (১২ জানুয়ারি) রাজধানীর পুরানা পল্টনের নিজস্ব কার্যালয়ে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিপিজিএমইএ সভাপতি সামিম আহমেদ এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি শিল্প কারখানায় গ্যাসের দাম এখন যা আছে, তা-ই বহাল রাখার অনুরোধ জানান।

সামিম আহমেদ বলেন, আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের নির্দেশনা বাস্তবায়নের আগে দেশের স্বার্থ প্রাধান্য দেওয়া উচিত। দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে কোনো চুক্তি বা সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া হবে না। বর্তমানে শিল্প খাতে স্থবিরতা বিরাজ করছে। এই অবস্থায় গ্যাসের দাম বাড়ালে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বহু শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। এই মূল্যবৃদ্ধি শিল্প ধ্বংসের একটি পরিকল্পিত চেষ্টা বলে তিনি মন্তব্য করেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্লাস্টিক খাতের জন্য গ্যাস ও এলএনজি বিষয়ে পাঁচটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। এগুলোর মধ্যে নতুন কূপ খননে বিনিয়োগ বাড়ানোর এবং দ্রুততার সঙ্গে ১৫০টি কূপ খননের প্রস্তাব সমর্থন করা হয়। এ ছাড়া মিয়ানমার থেকে গ্যাস আমদানি করতে না পারা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ব্যর্থতার উদাহরণ। প্রতিবেশী হওয়া সত্ত্বেও গত ৫০ বছরে কোনো গ্যাস চুক্তি হয়নি; যা চীন ও থাইল্যান্ড সফলভাবে করতে পেরেছে। বর্তমান সরকারকে এই বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সংকট সমাধানে এলএনজি আমদানি থেকে শুল্ক-কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেওয়া হয় এবং নতুন এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের মাধ্যমে আমদানি বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়। দেশের শিল্পায়ন ও বিনিয়োগের স্বার্থে গ্যাসের বর্তমান মূল্য বজায় রাখার এবং স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়ারও প্রস্তাব করা হয়।

বিপিজিএমইএ সভাপতি বলেন, গ্যাসের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে শুভঙ্করের ফাঁকি আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা উচিত। তিনি আরও বলেন, গ্যাসের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকারের আরও গভীর চিন্তাভাবনা প্রয়োজন। কারণ, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির ফলে উৎপাদিত পণ্যের দামও বাড়বে, যা মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরা কঠিন করে তুলবে।

বিপিজিএমইএ উপদেষ্টা ও বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, হুট করে দাম বাড়ালে উদ্যোক্তারা কীভাবে ব্যবসা চালাবেন? তিনি প্রশ্ন তোলেন, এ সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হচ্ছে, যখন অন্তর্বর্তী সরকার কিছু সময়ের জন্য ক্ষমতায় থাকবে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক সরকারের জন্য হওয়া উচিত এবং যেভাবে ভর্তুকি দিয়ে খাতটি চলছে, সেভাবেই চলতে দেওয়া উচিত।

বিপিজিএমইএর সাবেক সভাপতি এ এস এম কামাল উদ্দিন বলেন, সরকারের মধ্যে এখনো ঘাপটি মেরে আছে পুরোনো দোসরেরা। তারা দেশের শিল্প ধ্বংসের চক্রান্তে এখনো লিপ্ত।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিপিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ফেরদৌস ওয়াহেদ, সিনিয়র সহসভাপতি কে এম ইকবাল হোসেন, কাজী আনোয়ারুল হক, পরিচালক সৈয়দ নাসির উদ্দিন, সাবেক পরিচালক ঝন্টু কুমার সাহা, ডিউরেবল প্লাস্টিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তৌকিরুল আলম এবং আকিজ বায়াক্সের পরিচালক মফিজুল ইসলাম ইরাজ।

বাণিজ্য মেলায় কেনাকাটায় বিকাশ পেমেন্টে মিলছে ক্যাশব্যাক কুপন

সিটি ব্যাংকের আবারও এমডি হলেন মাসরুর আরেফিন

আয় বাড়াতে উচ্চাভিলাষী ছক

নিরাপত্তা পর্যালোচনায় আসছে আইএসপিএস প্রতিনিধিদল

সেকশন