নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ছাত্রদলের দুই কর্মী স্থানীয় এক বিএনপি নেতার ফেস্টুন ছিঁড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা তাঁদের আটক করে স্বীকারোক্তি নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। তাঁদের একজনের একটি ভিডিও এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে সিহাব নামের ওই ছাত্রদলকর্মীকে বলতে শোনা যায়, ‘উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক বেদার উদ্দিন বিদ্যুতের কথায় তাঁরা ব্যানার-ফেস্টুন কাটতে এসেছিলেন।’
ইংরেজি নববর্ষে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলনের পক্ষ থেকে ওই ব্যানার-ফেস্টুন সাঁটানো হয়েছিল। ব্যারিস্টার মিলন রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী। উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক বেদার উদ্দিন বিদ্যুৎ বিএনপির আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দীনের অনুসারী। এ কারণে বিদ্যুতের কর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় তাঁর ফেস্টুন কেটে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলনের।
মাহফুজুর রহমান মিলন বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক। রাজনীতি করতে হলে সবাইকে সহনশীলতা দেখাতে হবে। কর্মীদের কারণেই কিন্তু নেতাদের বদনাম হয়। তাই কর্মীরা কী করছেন, তা খেয়াল রাখা দরকার।’
গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে উপজেলা সদর সংলগ্ন গোরস্থান এলাকায় মিলনের ফেস্টুন কাটার অভিযোগে সিহাব ও রয়েল নামের দুই ছাত্রদলকর্মীকে আটক করে স্থানীয়রা। সিহাবের বাড়ি পবা উপজেলার আলীমগঞ্জ এলাকায়। রয়েলের বাড়ি গোদাগাড়ীর বিয়ানাবোনা গ্রামে। এলাকাবাসী আটক করলে তাঁরা এই তথ্য দেন।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ছাত্রদলকর্মী সিহাব বলছেন, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক বেদার উদ্দিন বিদ্যুৎ তাঁদের ফেস্টুন কাটতে পাঠিয়েছেন। আগেও ফেস্টুন ছেঁড়া হয়েছে। সিহাব বলতে থাকেন, বেদার উদ্দিন বিদ্যুৎও তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। তিনি পালিয়ে গেছেন।
তবে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করেন ছাত্রদল নেতা বেদার উদ্দিন বিদ্যুৎ। তিনি বলেন, ‘ফেস্টুন নাকি কাটা হয়েছে আধা কিলোমিটার দূরে গোরস্থান এলাকায়। আমার এ দুই ছেলে ছিল উপজেলা সদরে। তারা সেখানে চা খাচ্ছিল। তাদের পরিকল্পিতভাবে ধরে মারধর করে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। তারা কেউ পোস্টার ছিঁড়তে যায়নি। আমাকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে।’
বিদ্যুৎ বলেন, ‘দুজনকেই মারধর করা হয়েছে। সিহাব নামের ছেলেটা আহত। তাকে রড দিয়েও মারা হয়েছে। তাকে আমরা হাসপাতালে ভর্তি করব। তারপর মামলার ব্যাপারে চিন্তা করব।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ধরনের কোনো ঘটনার কথা আমার জানা নেই। কোনো পক্ষ যদি অভিযোগ করে, তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’