সিলেট প্রতিনিধি
সিলেট নগরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে হামলা ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন ম্যাজিস্ট্রেট, বিদ্যুৎ বিভাগের প্রকৌশলী ও পুলিশ সদস্যরা। বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে এ ঘটনার শিকার হন তাঁরা।
আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় নগরের কাষ্টঘর এলাকায় তনিম কান্তি দত্তের (৪৫) বাসায় এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য ও বিদ্যুৎ বিভাগের দুই কর্মচারী আহত হয়েছেন। অভিযুক্ত তনিম কান্তি দত্তকে আটক করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সিলেটের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২-এর সহকারী প্রকৌশলী বকুল চন্দ্র চক্রবর্তী সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বিদ্যুৎ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. আনোয়ারুল হক আজ কাষ্টঘর এলাকায় বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে তনিম কান্তি দত্তের বাসায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করেন। তনিম কান্তিকে বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য অনুরোধ করেন ম্যাজিস্ট্রেট। কিন্তু তিনি কর্ণপাত করেননি। তাই বিধি অনুযায়ী বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে তনিম কান্তি, তনয় কান্তিসহ অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজন বাধা দেন। তাঁরা ম্যাজিস্ট্রেট, নির্বাহী প্রকৌশলী ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। একপর্যায়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে বিদ্যুতের কাজে ব্যবহৃত গাড়ির চাবি নিয়ে নিয়ে যান হামলাকারীরা।
এ সময় হামলাকারীরা দায়িত্বরত পুলিশের ওপরও আক্রমণ করেন। এতে এএসআই খোরশেদ আলম, এএসআই মোস্তাফিজুর রহমান কনস্টেবল বাবুল আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ সময় তনিম কান্তি দত্তকে আটক করে পুলিশ। অন্যরা পালিয়ে যান।
এ ব্যাপারে বিউবো, সিলেট বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামছ-ই-আরেফিন বলেন, ‘অভিযুক্ত তনিম কান্তি দত্তকে এরই পূর্বে অনেকবার বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। আজ অভিযানের সময়ও বিল পরিশোধের জন্য অনুরোধ করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট। কিন্তু তিনি এসব না শুনে আমাদের ওপর দলবল নিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র হাতে আক্রমণ করেন। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আমরা মামলা করেছি।’
সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ঘটনায় বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। হামলায় তিন পুলিশ সদস্য ও বিদ্যুৎ বিভাগের দুই কর্মচারী আহত হয়েছেন। হামলাকারী একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে। আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’