সম্প্রতি বাতাসে উত্তাপ ছড়াচ্ছে সিএমভি প্রযোজিত ও রুবেল হাসান নির্মিত নাটক ‘ঘটনা সত্য’। সিএমভির ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছিল নাটকটি। নিম্ন আয়ের দুজন মানুষ। পাশাপাশি ফ্ল্যাটে কাজ করে। একজন গাড়িচালক মুকুল (অভিনেতা নিশো), অন্যজন গৃহপরিচারিকা বিলকিছ (অভিনেত্রী মেহজাবীন)। টাকা আর একটু বিলাসিতার লোভে দুজনেই কিছু অন্যায় অপকর্ম করে। ঘটনাক্রমে ভালোবেসে ঘর বাঁধে তারা দুজন। একসময় জানতে পারে তাদের ঘর আলো করে আসছে এক শিশু। কিন্তু সেই শিশু প্রতিবন্ধী বা বিশেষ শিশু।
ঘটনাটা এ পর্যন্ত ঠিকঠাকই ছিল। নিজেদের অপরাধবোধ থেকে এই দম্পতির মনে ভয় জাগতেই পারে যে তাদের অপকর্মের ফল বা শাস্তি এই শিশু। কিন্তু রচয়িতা, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান, নির্মাতা কিংবা অভিনেতা—কারও ভাবনাতেই এল না যে ভাবনা বা বোধের কোন জায়গাটা ভুল বা সঠিক। কোন বিষয়টা নিয়ে কথা বলা যায় বা বলা যায় না।
অটিজম নিয়ে সারা বিশ্বে যখন সচেতনতামূলক কাজ হচ্ছে, ঠিক এমনই সময়ে এ ধরনের একটি ভুল বার্তার নাটক মানুষের আবেগকে দুমড়ে–মুচড়ে দিয়েছে। তাই প্রতিটি শিল্পমাধ্যমে কাজ করতে হয় সচেতনভাবে, জেনেবুঝে। কেবল অর্থপ্রাপ্তির আশায় কাজ করলেই হয় না। শিল্পের যেমন দায়বদ্ধতা আছে, আছে শিল্পী ও নির্মাতাদেরও। সেই দায়বদ্ধতার জায়গাটা বুঝতে না পারাটা অজ্ঞতা। অজ্ঞতা নিয়ে শিল্প হয় না। তাই এ ধরনের নির্মাণ নিয়ে ক্ষোভে উত্তাল মিডিয়া। অভিনেতা থেকে শুরু করে নির্মাতা, প্রযোজকেরাও জানাচ্ছেন ক্ষোভ।
অভিনেতা রওনক হাসান বলেন, বলেন, ‘টাকা উপার্জনের অনেক উপায় আছে। অভিনয় দিয়ে, শিল্প দিয়ে টাকা উপার্জন করতে হলে অবশ্যই সমাজের প্রতি, মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকতে হবে।’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্মাতা-অভিনেতাদের প্রকৃত শিক্ষার অভাব, অজ্ঞতা, অর্থলোভ আর অসচেতনতাই এ ধরনের ভুল নির্মাণের জন্য দায়ী। তাই নির্মাণের আগে প্রতিটি নাটক–সিনেমার বিষয়বস্তু নিয়ে সচেতন হতে হবে। কেবল নির্মাণ করলেই হবে না, যেকোনো মাধ্যমে প্রচারের আগে ন্যূনতম প্রিভিউর ব্যবস্থা থাকা উচিত।