ঢাকা: সাদিয়া ইসলাম মৌয়ের ক্যারিয়ার যেকোনো ক্যারিয়ারিস্টের জন্য ঈর্ষণীয়। পরিবারকে একটা নির্দিষ্ট সময় দেওয়ার আট–দশ বছর পরে মৌ আবারো কাজে নিয়মিত হচ্ছেন। নাচ অভিনয় মডেলিং- তিন মাধ্যমেই ব্যস্ত হয়ে উঠছেন।
দুই যুগ পর একসঙ্গে কাজ করছেন অভিনেতা-নির্মাতা আফজাল হোসেন, অভিনেত্রী-নৃত্যশিল্পী সাদিয়া ইসলাম মৌ ও চিত্রগ্রাহক আনোয়ার হোসেন বুলু। তাঁদের নিয়ে ‘প্রেমের আড়ালে প্রেম’ শিরোনামে একটি নাটক নির্মাণ করছেন নির্মাতা সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী; পরিচালনার পাশাপাশি রচনা ও চিত্রনাট্যও করেছেন ‘ঘুড্ডি’ চলচ্চিত্রের এ নির্মাতা। এতে অভিনয় করবেন আফজাল-মৌ জুটি, ক্যামেরার পেছনে থাকছেন বুলু।
করোনাকালীন সময়ে গেল মার্চে বিরতী নিয়ে অভিনয় শুরু করেছেন। অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলনের পরিচালনায় ‘ঘোর’ নামে একটি একক নাটকে অভিনয় করছেন মৌ। নাটকের গল্পে মৌকে দেখা যায় একটি ফ্যাশন হাউসের কর্ণধার হিসেবে। নাটকে তিনি তাঁর থেকে কম বয়সী একটি ছেলের প্রেমে পড়েন। নাটকটি ঈদে প্রচারিত হয়। ২০১৭ সালে বোন শেগুফতা ইসলাম মিথিকে হারিয়েছেন মৌ। বোনকে জীবনের সেরা বন্ধু মানতেন তিনি। তিন বছরের মাথায় মা নাউজিয়া ইসলাম রাসা মারা যান। এই দুইজনের মৃত্যু ক্যারিয়ারে বেশ প্রভাব ফেলেছে। মৌ বলেন,‘ মাঝখানে আমি কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। আম্মা মারা যাওয়ার আগে কিছুদিন অসুস্থও ছিলেন। তাকে নিয়ে হসপিটালে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছে। দু:সহ একটা সময় কাটিয়েছি। কাজ তো আনন্দ নিয়ে করতে হয়। সেই আনন্দটা নিজের মনে আসছিলো না।’
সবাই তাকে মডেল বা অভিনেত্রী হিসেবে চেনেন, কেউ কেউ বলেনও মডেল মৌ। সেসবের খবরেই জানতে পারেন। তবে তিনি নাচের মৌ হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তিনি বলেন,‘মডেলিং কিংবা অভিনয় তো অনেক পরে থেকে করছি। আমি নাচের সঙ্গে জড়িত সেই সাড়ে তিনবছর বয়স থেকে। এটি আমার মায়ের জন্য। নাচ আমার প্রথম ভালোবাসা। প্রথম ভালোবাসা তো ভোলা যায় না, তেমনি নাচও ভুলতে পারবো না। নাচ করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।’
গেল কয়েকমাসে বেশ বড় কয়েকটি নাচের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন। আরটিভি স্টার অ্যাওয়ার্ডে অ্যারাবিক মিউজিক পিসের সঙ্গে মৌয়ের নাচে মুগ্ধ হয়েছেন অসংখ্য দর্শক। এরপর নেচেছেন লন্ডন হাইকমিশনের একটি অনুষ্ঠানে। বঙ্গবন্ধুর কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে এক আয়োজনে তিনি প্রদীপ নাচ, ভরতনাট্যম ও কত্থক নাচ করেছেন ভার্চ্যুয়াল শোতে। একটি পাঁচ তারকা হোটেলে অংশ নিয়েছেন ‘অপরাজিতা’র গ্রান্ড ফিনালেতে। সেখানে নেচেছেন তিনি। এভাবেই সময়ের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে সফলতার হাত ধরে পথ চলছেন মৌ।
মৌ দেশের সেরা মডেল, নৃত্যশিল্পী, অভিনেতা জাহিদ হাসানের স্ত্রী, পুষ্পিতা, পূর্ণের মা। যুগের পর যুগ ধরে সফল অলরাউন্ডারের মতো এই সব ভূমিকা পালন করে আসছেন শক্ত হাতে। মৌ বলেন, ‘আমি হুট করে কাজে চলে যেতে পারি না। ছেলের পরীক্ষা থাকলে তখন শুটিংয়ের ডেট দিই না। এখন ওরা বড় হয়েছে। তাই এখন আমি কাজে আগের চেয়ে বেশি সময় আর মনোযোগ দিতে পারি। শুক্রবারটা আমার ছেলে ঘুম থেকে উঠে আমাকে দেখতে চায়। এটা আমি এখনো মেইনটেইন করি।’
দীর্ঘ সময় ধরে একটা সম্পর্ক সতেজ রাখার মন্ত্র শিখতে চাইলে বললেন, ‘এটা আসলে কারও একার হাতে নেই। দুজন দুজনকে বোঝা খুবই জরুরি।’