ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশের বিরুদ্ধে নির্বিচারে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দেশজুড়েই আন্দোলনে সমালোচনা ও হামলার শিকার হয়েছে পুলিশ বাহিনী; ঘটেছে প্রাণহানির ঘটনা। এমন প্রেক্ষিতে ‘আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর গুলি চালাতে রাজি না হয়ে চাকরি থেকে এক পুলিশ সদস্য অব্যাহতি নিয়েছেন’— এই দাবিতে মুহাম্মদ সুহিন নামের পুলিশ সদস্যের ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
‘বিএনপি সিলেট’ নামের ফেসবুক পেজ থেকে গতকাল শনিবার (১০ আগস্ট) ওই পুলিশ সদস্যের ছবি শেয়ার করে দাবি করা হয়, ‘পুলিশ ভাইটি ছাত্র-ছাত্রীর বুকে গুলি চালাতে না গিয়ে চাকরি থেকে অব্যাহতি নিলেন সেই ভাইটির চাকরি সম্মানের সহিত পদোন্নতি দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হোক। নয়তো মানবতা পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে। ভুলে গেলে চলবে না উনি সত্যিকারের জনগণের বন্ধু। আসুন সবাই আওয়াজ তুলি ভাইটির চাকরি ফেরত পেতে।’
আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই পুলিশ সদস্য চাকরি থেকে অব্যাহতি নেওয়ার ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানে তোফায়েল আহমেদ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ৩১ জুলাই একটি পোস্ট পাওয়া যায়।
এই পুলিশ সদস্যের ছবি শেয়ার করে পোস্টে লেখা হয়, ‘পুলিশের চাকরি থেকে অব্যাহতি নিল আমাদের দিরাইয়ের (সুনামগঞ্জ) মায়ার ছোট ভাই মুহাম্মদ সুহিন (Muhammod suhin)। তোমার আগামী দিনগুলো ভালো কাটুক এই দোয়া করি।’ পোস্টটিতে মুহাম্মদ সুহিন (Muhammod suhin) নামে একজনকে ট্যাগও করা হয়। পোস্টটির কমেন্টবক্সে রাজ সর্দার শিহাব নামে একজন কমেন্ট করে লেখেন, ‘ভাই জব ছাড়ছে ৮ মাস আগে, এখন ফেসবুকে পোস্ট কেন?’ এই কমেন্টের উত্তরে মুহাম্মদ সুহিন লেখেন, ‘তো? এখন জানালে সমস্যা কী?’ রাজ সর্দার লেখেন, ‘সমস্যা কিছু না, বাট মানুষ তো তোমাকে নিয়ে নানা রকমের পোস্ট করতেছে।’ সুহিন লেখেন, ‘এটা তারার (তাঁদের) বিষয়।’
এই কথোপকথন থেকে ধারণা করা যায়, মুহাম্মদ সুহিন নামের এই পুলিশ সদস্যের চাকরি থেকে অব্যাহতি নেওয়ার ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।
অর্থাৎ সাবেক পুলিশ সদস্য মুহাম্মদ সুহিনের চাকরি থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে অব্যাহতি নেননি। বরং তিনি ২০২৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর চাকরি ছেড়েছিলেন।