ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
উন্মুক্ত মাঠে কর্দমাক্ত জমিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এক বাঘ। চারদিকে উৎসুক জনতার ভিড়। কখনো বাঘটি গর্জন করছে। সম্প্রতি এমন একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কেউ কেউ দাবি করছেন, এই ঘটনা চট্টগ্রামের দক্ষিণে আনোয়ারায় একটি বিলের মধ্যে। এমন দাবি করে ‘সারা আনোয়ারা’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে সাধারণ মানুষকে সতর্কতা অবলম্বন করতে অনুরোধ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দিবাগত রাত ১টা ৫০ মিনিটে পেজটিতে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্টটি আজ শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকেল ৫টা পর্যন্ত সাড়ে ৪ লাখ বার দেখা হয়েছে। রিয়েকশন পড়েছে প্রায় সাড়ে আট শ। শেয়ার হয়েছে সাড়ে চার হাজার।
একই ভিডিও আবার ‘নলতা ডায়াবেটিক হাসপাতাল’ নামের একটি পেজ থেকে ভিন্ন ঘটনাস্থল উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) রাত ৯টা ৩১ মিনিটে পোস্ট করা হয়। পেজটিতে দাবি করা হয়, খেপা পথহারা বাঘটিকে দেখা গেছে সাতক্ষীরায়। এই পেজের পোস্টটি দেখা হয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার বার, রিয়েকশন পড়েছে তিন শতাধিক, শেয়ার হয়েছে ছয় শতাধিক।
ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে অনুসন্ধানে ফেসবুকে কি–ওয়ার্ড অনুসন্ধানে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সংবাদপত্র দৈনিক আজাদীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে আজ শুক্রবার (৫ জুলাই) সকাল ১১টা ৪৯ মিনিটে পোস্ট করা একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটি থেকে জানা যায়, ঘটনাটি সাতক্ষীরা বা চট্টগ্রামের নয়। এটি ভারতের আসাম রাজ্যের নগাঁও জেলার।
পরে ভিডিওটির কিছু কি–ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধানে আসামের ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য সেন্টিনেল’ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত বুধবার (৩ জুলাই) একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়। ভিডিওটির সঙ্গে বাংলাদেশে ভাইরাল ভিডিওটির মিল রয়েছে। দুটি ভিডিওতেই একই বাঘকে একই মাঠে, কর্দমাক্ত জমিতে দাপিয়ে বেড়াতে দেখা যায়। ভিডিও দুটিতে দৃশ্যমান বাড়িসহ অন্যান্য উপাদানও এক।
ভিডিওটির ডেসক্রিপশন থেকে জানা যায়, আসামের বাতাদ্রোবা অঞ্চলে বাঘের আক্রমণে দুই জন আহত হয়েছেন। স্থানীয়দের ধারণা, বাঘটি লাওখোয়া বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য থেকে বেরিয়ে এসে থাকতে পারে। আসামের আরেকটি সংবাদমাধ্যম ‘আসাম ট্রিবিউনে’ গত বুধবার (৩ জুলাই) প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়।
উপরোক্ত তথ্যের ভিত্তিতে এটি নিশ্চিত, উন্মুক্ত, কর্দমাক্ত মাঠে দাপিয়ে বেড়ানো বাঘের ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়, আসামের নগাঁওয়ের।