অনলাইন ডেস্ক
ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে (ডি আর কঙ্গো) আকস্মিক বন্যায় ১৭৬ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আফ্রিকার দেশটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা।
কঙ্গোর প্রাদেশিক সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কঙ্গোর দক্ষিণ কিভু প্রদেশে মুষলধারে বৃষ্টির কারণে বৃহস্পতিবার একটি নদী প্লাবিত হয়ে লোকালয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে স্থানীয় বুশুশু ও নিয়ামুকুবি গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি ঘটেছে।
দক্ষিণ কিভুর গভর্নর থিও এনগওয়াবিদজে কাসি বলেছেন, বন্যার কারণে ১৭৬ জন নিহত হয়েছে। এখনো অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। তবে স্থানীয় সিভিল সোসাইটির সদস্য কাসোল মার্টিন জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা আরও বেশি। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ২২৭টি মরদেহ পাওয়া গেছে। অনেক মানুষ এখনো খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছে। অনেক স্কুল ও হাসপাতাল বন্যায় ভেসে গেছে।’
তবে গতকাল শুক্রবার আকাশ পরিষ্কার দেখা গেছে। বৃষ্টি হয়নি।
কঙ্গোর দক্ষিণ কিভুতে বন্যা ও ভূমিধস বিরল কোনো ঘটনা নয়। প্রায় প্রতিবছরই এই অঞ্চলে বন্যা হয়। তবে এর আগে সর্বশেষ ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল ২০১৪ সালে। ওই বন্যায় সাত শতাধিক বাড়ি ধসে পড়েছিল। জাতিসংঘের মতে, ওই সময়ে ১৩০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল।
গত মাসে কঙ্গোর উত্তর কিভু প্রদেশে ভূমিধসে অন্তত ২১ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে বন্যার কারণে রাজধানী কিনশাসায় ১৬৯ জন নিহত হয়েছে।
গত কয়েক দশক ধরে কঙ্গোতে একাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত চলছে। ফলে সেখানে একধরনের মানবিক সংকট জারি রয়েছে। এর মধ্যে এই ভয়াবহ বন্যা মানবিক সংকটকে আরও তীব্র করেছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, কঙ্গোতে ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে অন্তত ১২১টি বিদ্রোহী গোষ্ঠী পরস্পরের সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে। এতে লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অন্তত ১০ লাখ বাসিন্দা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর একাধিক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, কঙ্গোয় কমপক্ষে ২ কোটি ৭০ লাখ মানুষ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করছে।