অনলাইন ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন রাজ্যে অবস্থিত ক্যাসকেড পর্বতমালার নিচে একটি বিশাল জলাধার আবিষ্কার করা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আগে যতটুকু ধারণা করা হয়েছিল, তার চেয়ে অনেক বড় এই জলাধার। তাঁদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের টাহো হ্রদে যে পরিমাণ পানি আছে, তার অর্ধেকের বেশি পরিমাণ পানি জমা আছে জলাধারটিতে।
এই আবিষ্কার যেমন পানি সরবরাহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি এটি আগ্নেয়গিরির বিপদের জন্যও সতর্কবার্তা দিতে পারে।
ওরেগন বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের গবেষকেরা ক্যাসকেড পর্বতমালার কেন্দ্রস্থলে আগ্নেয়গিরির পাথরের নিচে এই জলাধার আবিষ্কারের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এটির আয়তন অন্তত ১৯.৪৩ ঘন মাইল (৮১ ঘন কিলোমিটার)। গত ১৩ জানুয়ারি এই সম্পর্কিত একটি গবেষণা পিএনএএস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণার প্রধান লেখক লাইফ কার্লস্ট্রম বলেছেন, ‘এটি বিশাল আকারের একটি জলাধার, যা পাহাড়ের চূড়ায় একটি বিশাল জল-টাওয়ারের মতো আছে।’
ক্যাসকেড পর্বতমালা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের মাধ্যমে গঠিত হয়েছে। এর দুটি অংশের একটি হলো পশ্চিম ক্যাসকেডস। এখানে পুরোনো নদীবাহিত ঢাল ও উপত্যকা রয়েছে। আর হাই ক্যাসকেডস নামে অপেক্ষাকৃত নতুন এবং সমতল অন্য অংশটিতে লেক এবং লাভা প্রবাহের মতো আগ্নেয়গিরি প্রভাবিত ভূপ্রকৃতি দেখা যায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যাসকেডস ওরেগনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পানীয় জলের উৎস। তবে বিপদও রয়েছে। বড় জলাধারসহ আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত আরও বেশি বিস্ফোরক এবং বিপজ্জনক হতে পারে।
১৯৮০ এবং ১৯৯০-এর দশকে ভূতলের তাপমাত্রা মাপার জন্য করা পুরোনো ড্রিলিং কাজগুলো পুনরায় ব্যবহার করে, বিজ্ঞানীরা পাথরের তাপমাত্রা বিশ্লেষণ করেন। সাধারণত পাথর যত গভীর হয়, তাপমাত্রা তত বেশি হয়। কিন্তু ভূগর্ভস্থ পানির উপস্থিতি তাপমাত্রা কমিয়ে দেয়। এই তাপমাত্রার ভিত্তিতেই গবেষকেরা জলাধারের বিস্তার অনুমান করেন।
গবেষক গর্ডন গ্রান্ট বলেছেন, ‘এটি একটি ভূতাত্ত্বিক উপহার। কিন্তু যদি বরফ না পড়ে বা একাধিক খারাপ শীতকাল হয়, তাহলে এর প্রভাব কী হতে পারে, আমরা এখনো পুরোপুরি বুঝতে পারিনি। এটাই এখন আমাদের প্রধান প্রশ্ন।’