অনলাইন ডেস্ক
টানা ১৫ মাস ধরে চলা গাজা যুদ্ধে অবশেষে কার্যকর হয়েছে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তি। আজ রোববার গাজার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে চুক্তি কার্যকর হয়। এ ঘোষণার পরই ইসরায়েলে নেতানিয়াহুর জোট সরকার থেকে পদত্যাগ করেছেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গাভির। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
যুদ্ধবিরতি আলোচনার শুরু থেকে সবসময় যেকোনো ধরনের যুদ্ধবিরতির বিরোধিতা করেছেন বেন-গাভি। তাঁর সমর্থনে ছিলেন অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মটরিচও। এমনকি পদত্যাগের হুমকিও দিয়েছিলেন তাঁরা। এবার বেন-গাভি পদত্যাগ করলেন।
এর আগে বেন-গাভির বলেছিলেন, ‘এই চুক্তির (যুদ্ধবিরতি) অর্থ হলো যুদ্ধের সমাপ্তি এবং হামাসকে ধ্বংস করার লক্ষ্য পরিত্যাগ করা। এটি একটি বেপরোয়া চুক্তি, যা সন্ত্রাসবাদের বিজয় এবং ইসরায়েল রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।’
ডানপন্থী বেন গাভি ও স্মটরিচ মনে করেন, যুদ্ধের লক্ষ্য এখনো পূরণ হয়নি। গাজায় পুনর্দখল এবং ইসরায়েলিদের পুনর্বাসন ও অধিকৃত পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত করার দিকে তাঁরা বারবার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এজন্য যুদ্ধবিরতি আলোচনায় প্রতিবারই বিরোধিতা করেছেন তাঁরা।
মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি বিশ্লেষকেরা এবং অনেক ইসরায়েলি নাগরিক বিশ্বাস করেন, এই দুই নেতার সরকার ছাড়ার হুমকির কারণেই গত ১৫ মাস ধরে কোনো চুক্তি এগিয়ে নিতে দেরি করেছেন নেতানিয়াহু। এই দুই নেতার পদত্যাগ মানে, ইসরায়েলে নেতানিয়াহু সরকারের পতন, নেতানিয়াহুর প্রধানমন্ত্রীত্বের অবসান এবং অবিলম্বে নতুন নির্বাচন।
তবে ধারণা করা হচ্ছে, বেন-গাভিরের পদত্যাগ সরকারের পতনের কারণ হবে না। কারণ তিনি বলেছেন, প্রথম পর্যায়ের পর যদি যুদ্ধ আবার শুরু হয়, তিনি জোটে পুনরায় যোগ দেবেন।
গত শুক্রবার কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। আজ রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে যুদ্ধবিরতি শুরুর কথা থাকলেও মুক্তি পেতে যাওয়া তিন জিম্মির নাম প্রকাশ নিয়ে বিলম্বিত হয়ে চুক্তি কার্যকরের সময় পিছিয়ে যায় কয়েক ঘণ্টা।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরু হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর। এই সময়ে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছে ৪৭ হাজার ফিলিস্তিনি।