হোম > বিশ্ব > ইউরোপ

জীবন বাঁচাতে পায়ে হেঁটে ১২৫ কিমি 

অনলাইন ডেস্ক

ইউক্রেনের মারিউপোল শহর দখলে নেওয়ার দাবি করেছে রাশিয়া। শঙ্কা রয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত শহরটিতে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে। এমন ভীতিকর পরিস্থিতিতে মারিউপোলের বাসিন্দা ইয়েভগেন ও তেতিয়ানা সিদ্ধান্ত নেন, চার সন্তান নিয়ে সেখান থেকে পালাতে হবে। অবশেষে তাঁরা মারিউপোল থেকে পায়ে হেঁটেই ১২৫ কিলোমিটার পাড়ি দেন। 

গতকাল শুক্রবার ইউক্রেনের শহর জাপোরিঝজিয়াতে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করার সময় বার্তা সংস্থা এএফপিকে পায়ে হেঁটে এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার ঘটনা বর্ণনা করেন ইয়েভগেন ও তেতিয়ানা। 

বোমা বিস্ফোরণে মারিউপোল বিধ্বস্ত হওয়ার পর ইয়েভগেন তাঁদের সন্তান ইউলিয়া (৬), ওলেক্সান্ডার (8), আনা (১০) ও ইভানকে (১২) নিয়ে বাঁচার চেষ্টা শুরু করেন। 

৪০ বছর বয়সী তেতিয়ানা কোমিসারোভা বলেন, ‘আমরা তাদের দুই মাস ধরে বুঝিয়েছিলাম যে কোথায় যাব। আমরা তাদের এই দীর্ঘ ভ্রমণের জন্য প্রস্তুত করেছিলাম।’ 

গত রোববার তেতিয়ানা তাঁর টেকনিশিয়ান স্বামী ইয়েভগেন টিশচেংকোর (৩৭) সঙ্গে মারিউপোল ছাড়েন। 

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরুর পর ওই দিনই প্রথমবার তাঁরা পুরো পরিবার একসঙ্গে বাড়ি থেকে বের হয়। তাঁরা বের হয়ে সম্পূর্ণ ধ্বংসের একটি ভয়ংকর দৃশ্য দেখতে পায়। 

ইয়েভগেন বলেন, ‘ এমন দৃশ্য দেখে বাচ্চারা নিঃশব্দভাবে হাঁটা শুরু করল। আমি জানি না তারা কী ভাবছিল। হয়তো তারাও বিশ্বাস করতে পারেনি যে আমাদের শহরের আর কোনো অস্তিত্ব নেই।’

 তবে প্রাপ্তবয়স্করা বুঝতে পারছিল কী অপেক্ষা করছে তাঁদের জন্য। ইয়েভগেন জানান, বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত দোকান থেকে খাবার ও পানি সংগ্রহের জন্য তাঁদের বাড়ি থেকে লুকিয়ে বের হতে হয়েছে। এ সময়ে তাঁরা পথে মরদেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখেছেন। 

তেতিয়ানা বলেন, ‘ক্ষুধার চেয়ে বোমা হামলায় মারা যাওয়াটা কম ভীতিকর মনে হয়েছে ওই সময়।’ 

তেতিয়ানা জানান, রুশদের একটি শেল তাঁদের অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের ছাদে আঘাত করে। পরে শিশুদের নিয়ে বেসমেন্টে লুকান তাঁরা। 

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর তেতিয়ানার শিশু আনার (১০) জীবনেও বাজে প্রভাব ফেলেছে। 

আনা বলে, ‘কংক্রিটের ওপর ঘুমানোর অভিজ্ঞতা ভালো ছিল না। তবে বোমার শব্দে আমরা ভীত ছিলাম না।’
 
বেসমেন্টের ভেতর থাকার কথা স্মরণ করতে গিয়ে আনা বলে, ‘ভবনটি অনেক কাঁপছিল এবং সেখানে প্রচুর ধুলো ছিল, নিশ্বাস নিতে ভালো লাগছিল না।’ 
 
পাঁচ দিন ও চার রাত পায়ে হেঁটে ইয়েভগেন ও তেতিয়ানা পরিবার নিয়ে পলোহিতে পৌঁছান। এই যাত্রায় অসংখ্যবার রুশ সেনাদের চেকপোস্ট পার হতে হয়েছে তাঁদের। 

 রুশ সেনাদের আচরণ কেমন ছিল জানতে চাইলে ইয়েভগেন বলেন, ‘তাঁরা শত্রুর মতো আচরণ করেনি। তাঁরা সাহায্য করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু প্রতিবার তাঁরা আমাদের জিজ্ঞেস করত, আপনি কোথা থেকে এসেছেন? মারিউপোল থেকে? কিন্তু আপনি কেন এই দিকে যাচ্ছেন, কেন রাশিয়ায় যাচ্ছেন না?’
 
সারা দিন হাঁটার পর রাতে স্থানীয় বাড়িঘরে পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিতেন ইয়েভগেন ও তেতিয়ানা। স্থানীয়রা তাঁদের খাবার দিয়েও সহায়তা করেছেন। 

যাত্রাপথে রুশ দখলকৃত পলোহিতে দিমিত্রো ঝিরনিকভ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হয় ইয়েভগেন পরিবারের। ঝিরনিকভ সবজি বিক্রি করতে প্রায়ই জাপোরিঝজিয়া যান। 
 
ঝিরনিকভ বলেন, ‘আমি এই পরিবারকে রাস্তার পাশে ট্রলি ঠেলতে দেখেছি। আমি তাদের থামিয়ে গাড়িতে তুলি।’ 

 ১২৫ কিলোমিটার হাঁটার পর তেতিয়ানা ও ইয়েভগেন তাঁদের পরিবার নিয়ে ঝিরনিকভের গাড়িতে ওঠেন। 

গতকাল শুক্রবার ইয়েভগেনের পরিবারের সদস্যরা পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লভিভের দিকে যাওয়ার জন্য জাপোরিঝজিয়া থেকে একটি জনাকীর্ণ ট্রেনে ওঠে। সেখান থেকে স্বাভাবিক জীবনের জন্য পশ্চিম ইউক্রেনের আরেকটি বড় শহর ইভানো-ফ্রাংকিভস্কে যাওয়ার পরিকল্পনা ইয়েভগেনদের। 
 
ইয়েভগেন বলেন, ‘আমি একটি কাজ খুঁজে পেতে চাই। আমরা যা করেছি, তা আমরা কখনোই ভুলতে পারব না। 
 
ইয়েভগেনের মেয়ে আনা মারিউপোল থেকে পালিয়ে আসতে পেরে খুশি। অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ১০ বছর বয়সী এই শিশু বলে, আমি মারিউপোলের মতো একটি শহরে থাকতে চাই না।

৩.৭ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প নিয়ে চীন ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে চুক্তি

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পের হুমকির জবাব দিল রাশিয়া

পুলিশ পুনর্গঠনে ইসলামি আইনের দ্বারস্থ সিরিয়ার নতুন শাসকগোষ্ঠী

মাস্কের চাপেই ডিওজিই থেকে রামাস্বামীর পদত্যাগ, শুরুতেই ট্রাম্প প্রশাসনে অন্তর্দ্বন্দ্বের ইঙ্গিত

নিজেদের জলসীমায় রুশ গুপ্তচর জাহাজ ঢুকে পড়ার দাবি যুক্তরাজ্যের

৭ মাস না যেতেই যুক্তরাষ্ট্রে সন্তান প্রসবের হিড়িক ভারতীয় নারীদের

তোমার জন্য বড় সুযোগ এখনই যুদ্ধ বন্ধ করার, পুতিনকে ট্রাম্প

আবর্জনার পাত্রে পড়ে ছিল ২ হাজার বছরের পুরোনো গ্রিক ভাস্কর্য

মেক্সিকো সীমান্তে ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করছেন ট্রাম্প

বাংলাদেশ ঘুরে গেলেন পাকিস্তানের আইএসআই প্রধান, দাবি ভারতীয় গণমাধ্যমের

সেকশন