হোম > বিশ্ব > ইউরোপ

টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে চান সুজান হল

অনলাইন ডেস্ক

আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬: ২৫
টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্তে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে চান সুজান হল। ছবি: সংগৃহীত

ব্রিটেনে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের লন্ডনের বাসাকে কেন্দ্র করে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড নামে পরিচিত লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের উপর চাপ অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশে অবকাঠামো প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে টিউলিপ ওই বাসা পেয়েছেন বলে অভিযোগ। এই অভিযোগ নিয়ে এবার মাঠে নেমেছেন লন্ডন এসেম্বলির পুলিশ ও অপরাধবিষয়ক কমিটির প্রধান সুজান হল। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির সাবেক মেয়র প্রার্থী এবং স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের কার্যক্রম নজরদারির দায়িত্বে থাকা সুজান এ বিষয়ে ব্রিটেনের অপরাধ তদন্ত ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির (এনসিএ) প্রধান গ্রায়েম বিগগারের কাছে চিঠি লিখেছেন। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পত্তির উৎস জানতে ব্রিটিশ আইনে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ‘আনএক্সপ্লেইনড ওয়েলথ অর্ডার’ জারির আহ্বান জানিয়েছেন।

বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবকাঠামো প্রকল্প থেকে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত করছে।

ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে তার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে লন্ডনের কয়েকটি বাড়ি, যেগুলো টিউলিপ সিদ্দিক এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা ব্যবহার করেছেন।

এই বাড়িগুলো টিউলিপ সিদ্দিকের খালা ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনদের কেনা। উল্লেখ্য, গত আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন।

৪২ বছর বয়সী টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে ব্রিটিশ মন্ত্রিসভায় অর্থনৈতিক দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। গত মাসে তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তে তাঁর নাম ওঠে আসলে তিনি নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্তের ভার প্রধানমন্ত্রীর স্ট্যান্ডার্ডস অ্যাডভাইজার বা মানদণ্ড উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাসের কাছে তুলে দেন।

টিউলিপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা রাশিয়ার অর্থায়নে নির্মিতব্য পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছিলে না করতে সাহায্য করেছিলেন।

সুজান হল গ্রেটার লন্ডন অ্যাসেম্বলির পুলিশ ও অপরাধ বিষয়ক কমিটির চেয়ার। তিনি বিগগারের কাছে লেখা চিঠিতে টিউলিপের বিরুদ্ধে চলমান বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। এই তদন্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাস্তবায়িত বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্প থেকে তহবিল তছরুপের বিষয়টি জানতে পরিচালিত হচ্ছে।

সুজান হল তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, ‘টিউলিপ সিদ্দিক এমন কিছু সম্পত্তি থেকে সুবিধা পেয়েছেন, যেগুলো হাসিনার দলের (আওয়ামী লীগ) সঙ্গে সম্পৃক্তদের অর্থে কেনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কিংস ক্রসে বিনা মূল্যে প্রাপ্ত একটি ফ্ল্যাট, হ্যাম্পস্টেডে তাঁর ব্যবহৃত একটি ফ্ল্যাট, যা পরে তাঁর বোনকে বিনা মূল্যে উপহার দেওয়া হয় এবং উত্তর লন্ডনে ২১ লাখ পাউন্ড মূল্যের একটি বাড়ি। এই বাড়ির মালিক একজন ডেভেলপার এবং তিনি হাসিনার রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠ এবং টিউলিপ সিদ্দিক ভাড়া পরিশোধ করেই সেখানে বসবাস করছেন।’

সুজান হল আরও লিখেন, ‘আনএক্সপ্লেইনড ওয়েলথ অর্ডার জারি করা জরুরি। কারণ, এটি সিদ্দিকের সম্পদের উৎস সম্পর্কে সত্য উদ্‌ঘাটনে সহায়তা করবে। বিশেষত, যখন বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়েছে, সেই অবস্থায় এটি খুবই জরুরি।’

বিরোধী দলের এই নেতা এনসিএর প্রতি আহ্বান জানান, ‘এই বিষয়টি অগ্রাধিকারের সঙ্গে তদন্ত করা হোক...দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হিসেবে সিদ্দিকের এই অভিযোগে জড়িত থাকা গভীর উদ্বেগের বিষয়। এই কেলেঙ্কারি প্রধানমন্ত্রীর বিচার-বুদ্ধি নিয়ে আরও প্রশ্ন তোলে এবং প্রমাণ করে যে তিনি এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা সরকার পরিচালনায় অযোগ্য।’

উল্লেখ্য, আনএক্সপ্লেইনড ওয়েলথ অর্ডার হলো আদালতের একটি আদেশ। যে আদেশ জারির পর ব্যক্তি তাঁর দখলে থাকা অস্বচ্ছ সম্পদের উৎস প্রকাশে বাধ্য হন।

এদিকে, টিউলিপ সিদ্দিক নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর মানদণ্ড উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করেছেন এবং জোর দিয়ে বলেছেন যে, তিনি কোনো অন্যায় করেননি। উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে এক চিঠিতে তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, আমি কোনো ভুল করিনি। তবে সমস্ত বিভ্রান্তি দূর করতে চাই যাতে আপনি বিষয়টি স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে পারেন।’

টিউলিপ সিদ্দিক তাঁর চিঠিতে আরও বলেছেন, ‘সম্প্রতি আমার আর্থিক বিষয় এবং বাংলাদেশের সাবেক সরকারের সঙ্গে আমার পরিবারের সম্পর্ক নিয়ে অনেক ভুল তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। আমি নিশ্চিত যে আমি কোনো ভুল করিনি।

অপরদিকে, কেয়ার স্টারমার সিদ্দিকের প্রতি আস্থা প্রকাশ করে বলেছেন, তিনি যথাযথভাবে কাজ করেছেন এবং নিজেকে স্বেচ্ছায় তদন্তের জন্য হস্তান্তর করেছেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট জানিয়েছে, স্যার লরি এখন বিষয়টি তদন্ত করবেন এবং যদি প্রয়োজন হয়, পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।

ইসলাম অবমাননার অভিযোগে শ্রীলঙ্কায় বৌদ্ধ ভিক্ষুর ৯ মাসের কারাদণ্ড

বুনো শূকরের বিরুদ্ধে কেন যুদ্ধ ঘোষণা করল চীন

অদ্ভুত কারণে ছোট্ট শহরকে বিপুল অর্থ দান করে গেলেন এক ব্যক্তি

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার প্রসিকিউটর জ্যাক স্মিথের পদত্যাগ

সেকশন