অনলাইন ডেস্ক
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার বেসামরিক স্বেচ্ছাসেবী পুলিশ সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দিয়েছেন আদালত। আগামী সোমবার তাঁর সাজা ঘোষণা করা হবে। আজ শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।
শিয়ালদহর অতিরিক্ত জেলা ও সেশন আদালতে আজ রায় চলাকালে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়। তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে দাবি করে সঞ্জয় বলেন, ‘আমি এটা করিনি। যারা করেছে তাদের কেন ছাড় দেওয়া হচ্ছে?’ যদিও প্রথমে নিজেকে অপরাধী হিসেবে স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন তিনি।
সেসময় বিচারক অনির্বাণ দাস বলেন, ‘তথ্যপ্রমাণে ভিত্তিতে আপনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। আপনার সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে মৃত্যুদণ্ড।’
সিবিআই জানিয়েছে, বায়োলজিক্যাল প্রমাণের ভিত্তিতে সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। নিহতের দেহে পাওয়া নমুনা সঞ্জয়ের সঙ্গে মিলে গিয়েছে। ঘটনাস্থলে পাওয়া নমুনার সঙ্গে সঞ্জয়ের ডিএনএ মিলেছে। আদালতে সঞ্জয়কে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার সুপারিশ করে সিবিআই।
আদালতে সঞ্জয়ের আইনজীবী দাবি করেন, যে সেমিনার হল থেকে ওই চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল, সেটি জনাকীর্ণ এলাকা। এমন এলাকায় কারও নজর এড়িয়ে সেমিনার হলে ঢুকে যাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম। তিনি দাবি করেন, কারও নজরে না পড়ে ২৮ মিনিটের মধ্যে ধর্ষণ ও খুন করা সম্ভব নয়।
নিহতের বাবা-মা দাবি করেন, এ ঘটনায় সঞ্জয়ের সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত আছেন। তাঁরা বাকিদের শাস্তি কামনা করেন।
গত বছরের ৯ আগস্ট আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটে। ওই দিন ভোরেই সঞ্জয়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে কলকাতা পুলিশ এই মামলার তদন্ত করলেও পরে কলকাতা হাইকোর্ট মামলাটির দায়িত্ব সিবিআইকে দেয়। ১১ নভেম্বর বিচারপর্ব শুরু হয়ে ঘটনার ১৬২ দিনের মাথায় আজ শনিবার রায়ে সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করলেন আদালত।
এ মামলায় নিহতের বাবা, তদন্তকারী সিবিআই কর্মকর্তা, কলকাতা পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং নিহতের কয়েকজন সহপাঠীসহ ৫০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল।
এ ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে কলকাতা। পরে এর রেষ ছড়িয়ে ভারত ছাড়িয়ে অন্যান্য দেশেও। দফায় দফায় বিক্ষোভ করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। হাসপাতালগুলোতে কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিও উঠেছিল।