অনলাইন ডেস্ক
নামের সঙ্গে মিল থাকলেও ফ্রান্সের নরম্যান্ডির থিবেরভিল শহরে কখনোই যাননি রজার থিবেরভিল। তিনি ছিলেন এক ওয়াইন প্রস্তুতকারকের বংশধর। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে তিনি তাঁর বাবা-মায়ের কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে একাধিক সম্পত্তি লাভ করেছিলেন। আর ব্যক্তিজীবনে ছিলেন একজন আবহাওয়া বিশ্লেষক।
রোববার দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, গত আগস্টে ৯১ বছর বয়সে মারা গেছেন থিবেরভিল। তাঁর কোনো উত্তরাধিকারী ছিল না। তবে তাঁর মৃত্যুর পর একটি ফোনকল পান নরম্যান্ডির থিবেরভিল শহরের মেয়র। তিনি জানতে পারেন, মৃত্যুর আগে নিজের নামের সঙ্গে মিল থাকা শহরটিকে প্রায় ১০ মিলিয়ন ইউরো দান করে গেছেন থিবেরভিল।
থিবেরভিল শহরের মেয়র গাই প্যারিস জানিয়েছেন, শহরের স্থানীয় মানুষ ও কর্মকর্তারা এই অপ্রত্যাশিত দান নিয়ে অবাক এবং আনন্দিত। এখন তারা কীভাবে এই বিপুল অর্থ ব্যবহার করবেন, তা নিয়ে আলোচনা করছেন। যে পরিমাণ অর্থ পাওয়া গেছে, তা শহরটির বার্ষিক বাজেটের চেয়ে অন্তত পাঁচ গুণ বেশি।
স্থানীয় রেডিও স্টেশন ফ্রান্স ব্লুকে মেয়র প্যারিস বলেন, ‘এটি একটি ব্যতিক্রমী পরিমাণের অর্থ। স্পষ্টতই এটি কল্পনার বাইরে। আমরা এখনো জানি না, কীভাবে এটি ব্যয় করব।’
তবে শহরের সবার প্রথম কাজ হচ্ছে একটি নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণের জন্য নেওয়া ৪ লাখ ইউরোর ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করা। একটি পাবলিক সংস্থা হওয়ায় শহরটিকে কোনো উত্তরাধিকারী করও দিতে হবে না।
মেয়র প্যারিস বলেন—এটি স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, থিবেরভিলের শহরের সঙ্গে অর্থ দানকারী ব্যক্তির একমাত্র সংযোগ ছিল তাঁর নামের শেষাংশ। প্যারিসে তিনি একজন সাদাসিধে মানুষ ছিলেন এবং সাদামাটাভাবেই জীবনযাপন করেছেন। তিনি প্যারিস শহরের দক্ষিণ-পূর্বে চারটি অ্যাপার্টমেন্টের মালিক ছিলেন।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো—থিবেরভিলের কোনো ছবি পাওয়া যায়নি। নিজের শবদেহের অস্থি শহরের কবরস্থানে একটি স্মৃতিসৌধে রাখাই ছিল তাঁর একমাত্র ইচ্ছা।
থিবেরভিল একটি সাধারণ ছোট্ট শহর। বাসিন্দা মাত্র ১ হাজার ৭৬৫ জন। এই শহরে উনিশ শতকের শেষদিকে তৈরি একটি প্রাসাদ এবং একটি প্রাচীন রিবন ফ্যাক্টরি রয়েছে। তবে নরম্যান্ডির অন্যান্য শহরগুলোর মতো কোনো বিশেষ বৈশিষ্ট্য এর নেই।
থিবেরভিলের এমন সুদিনে প্রতিবেশী শহরগুলো হয়তো অনুশোচনা করবে। কারণ অতীতে এই শহরের সঙ্গে একীভূত হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল পার্শ্ববর্তী লে প্লানকুয়ে এবং লা শাপেল-হারেং শহরকে। কিন্তু সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন ওই শহর দুটির কাউন্সিলরেরা।