অনলাইন ডেস্ক
কারাবন্দী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা ক্রেমলিন ও ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক অ্যালেক্সি নাভালনির শেষকৃত্য আজ শুক্রবার আয়োজনের কথা রয়েছে। মস্কোর মস্কোভা নদীর তীরে বোরিসোভস্কয় কবরস্থানে সমাহিত করা হবে তাকে।
তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলেছে, শেষকৃত্যের কয়েক ঘণ্টা আগেও নাকি এ অনুষ্ঠান আয়োজনে বাধা দিয়েছিল পুলিশ। নাভালনির মুখপাত্র কিরা ইয়ারমিশ জানান, রুশ বিরোধী দলীয় এই নেতার মরদেহ তখনো হস্তান্তর করেনি রুশ কর্তৃপক্ষ। নাভালনির আত্মীয়রা স্থানীয় সময় ১০টায় মর্গে পৌঁছায়। তখন তাদের কাছে নাভালনির মরদেহ হস্তান্তর করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি।
শেষকৃত্য সম্পর্কে কিরা ইয়ারমিশ বলেন, ‘আজকের সময়সূচি পরিবর্তিত হয়নি, তবে বিলম্ব হতে পারে।’
নাভালনির প্রাক্তন চিফ অব স্টাফ লিওনিড ভলকভ বিবিসিকে বলেছেন যে, গির্জার বাইরে ইতিমধ্যেই শত শত লোক জড়ো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘প্রচুর পুলিশও উপস্থিত হয়েছে—যেন আমরা বিপ্লব শুরু করতে যাচ্ছি! আমরা কেবল শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিদায় দিতে চাই, শোক পালন করতে চাই। কিন্তু পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, রুশ কর্তৃপক্ষ আজ দাঙ্গা বা অন্য কিছু বলে মনে করছে।’
অ্যালিওনা নামের এক তরুণী বলেন কেন তিনি নাভালনিকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘অ্যালেক্সিই একমাত্র ব্যক্তি যাকে আমি বিশ্বাস করতে পারতাম। আমার স্বপ্ন ছিল তিনি প্রেসিডেন্ট হবেন। এটা আমার এবং রাশিয়ার জন্য একটি বড় বিয়োগান্ত ঘটনা।’
নাভালনির শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানে আগতদের পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তার স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া। কারণ মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ গ্রুপ ওভিডি-ইনফো অনুসারে, রাশিয়ার ৩২টি শহরে নাভালনির অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে আসা ৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে আটক করেছিল পুলিশ।
এর আগে, নাভালনির মরদেহ উদ্ধার করতে সাইবেরিয়া গিয়েছিলেন তার মা লিউডমিলা নাভালনায়া। সেখানে কারাগার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেলের অভিযোগ করে তিনি জানান, নাভালনির দাফন কোথায় কখন কীভাবে হবে সে ব্যাপারে রুশ কর্তৃপক্ষের শর্তে রাজি না হলে নাভালনায়ার কাছে হস্তান্তর করা হবে না তার ছেলের লাশ। ক্রেমলিন অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সাইবেরিয়ান প্রত্যন্ত অঞ্চল ইয়ামালো-নেনেতের আর্কটিক পেনাল কলোনিতে বন্দী অবস্থায় পুতিন সমালোচক ও বিরোধী দলের নেতা নাভালনির মৃত্যু হয়।
রাজনৈতিক জীবনে পুতিনের কট্টর বিরোধী হিসেবে পরিচিত ছিলেন নাভালনি। বিশেষ করে রাশিয়ার দুর্নীতি ও শাসনব্যবস্থার কড়া সমালোচক ছিলেন তিনি। রাশিয়ায় তিনি কয়েক যুগ ধরেই বিদ্যমান সরকার ও শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বলে আসছিলেন। দেশজুড়ে এ নিয়ে তিনি বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন চালিয়েছেন।