অনলাইন ডেস্ক
আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চলে একটি প্রাইভেট জেট দুর্ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছেন রাশিয়ার এক ব্যবসায়ী ও তাঁর স্ত্রী। আশঙ্কা করা হচ্ছে, তাঁরা দুজনই নিহত হয়েছেন। ৬৫ বছর বয়সী ব্যবসায়ী আনাতোলি ইভসিউকভ পুতিনঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। অর্থনীতিতে অবদানের জন্য পুতিন সরকার তাঁকে পুরস্কৃতও করেছিল। স্ত্রীসহ তাঁকে বহনকারী বিমানটির পাইলটসহ বাকি চার আরোহীকে তালেবান কর্তৃপক্ষ জীবিত উদ্ধার করেছে।
দ্য নিউজউইকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত শনিবার উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানের বাদাখশান প্রদেশের কুফ আব জেলায় বিধ্বস্ত হয় ডাসাল্ট ফ্যালকন-১০ মডেলের ওই বিমান। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় এবং স্বাধীন গণমাধ্যমগুলোর প্রকাশিত ফুটেজে দেখা গেছে, দুর্ঘটনাস্থল থেকে বাতাসে ধোঁয়া উঠছে।
ব্যবসায়ী ইভসিউকভ রাশিয়ার রোস্তভ অঞ্চলের ভলগোডনস্কের বাসিন্দা। ওই অঞ্চলের একাধিক শপিং সেন্টারের মালিক তিনি। ২০১৪ সালে স্থানীয় অর্থনীতির উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য পুতিন-নিযুক্ত আঞ্চলিক গভর্নরের কাছ থেকে পুরস্কৃত করা হয়েছিল তাঁকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভলগোডনস্কে অন্তত তিনটি মার্কেটের মালিক ছিলেন ইভসিউকভ। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, তাঁর নির্দেশে ৪৮ হাজার বর্গফুট আয়তনবিশিষ্ট একটি শপিং কমপ্লেক্সও নির্মাণাধীন ছিল।
আফগানিস্তানে রুশ দূতাবাসের বরাত দিয়ে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় বিমান পরিবহন সংস্থা ওই দুর্ঘটনায় চারজনের বেঁচে থাকার খবরটি নিশ্চিত করে। এ বিষয়ে সংস্থাটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘স্থানীয় গ্রাউন্ড সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ সার্ভিস ফ্যালকন-১০ বিমানটিকে খুঁজে পেয়েছে। বিমানটিতে থাকা ছয়জনের মধ্যে প্রাথমিকভাবে চারজন জীবিত (তবে বিভিন্ন আঘাতপ্রাপ্ত) উদ্ধার করা হয়েছে, দুজনের ভাগ্য জানার চেষ্টা চলছে।’
সিরেনা টেলিগ্রাম চ্যানেল জানিয়েছে, জীবিতদের মধ্যে একজন ছিলেন ২৬ বছর বয়সী চিকিৎসাকর্মী ইগর সিরোভকিন। তিনি কাছাকাছি একটি গ্রামে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছিলেন। তবে ভাষার ব্যবধানের কারণে শেষ পর্যন্ত তিনি অঙ্গভঙ্গি করে স্থানীয়দের সাহায্য চেয়েছিলেন। পরে তাঁকে তালেবান প্রতিনিধিদের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, ডবল ইঞ্জিনের ব্যর্থতার কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য রাশিয়ার তদন্ত কমিটি একটি ফৌজদারি মামলা করেছে।
ইজভেস্টিয়া জানিয়েছে, বিমানটি তাজিকিস্তানে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে মুখোমুখি বাতাসের কারণে জ্বালানি কমে যাওয়ার কথা জানায় এবং তাজিকের রাজধানী দুশানবের একটি বিমানঘাঁটিতে তাঁরা অবতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
ইউক্রেনে হামলার জের ধরে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় দেশটির বিভিন্ন মডেলের বিমানের খুচরা যন্ত্রাংশ সংগ্রহ করতে বেগ পেতে হচ্ছিল। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এ ধরনের ঝামেলায় পড়ে বেশ কয়েকটি বিমান জরুরি অবতরণের পথ বেছে নিয়েছে বলেও জানা গেছে।