কলকাতা প্রতিনিধি
একাত্তরে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে শহীদ ভারতীয়দের শ্রদ্ধা জানাতে দিল্লির ইন্ডিয়া গেটে প্রায় ৫০ বছর ধরে জ্বলছিল অমর জওয়ান জ্যোতি। সেই জ্যোতি আজ শুক্রবার নিভল। তা মিলিয়ে দেওয়া হলো ৪০ একর জমির ওপর ১৭০ কোটি রুপি খরচে করে ২০১৯ সালে নির্মিত জাতীয় যুদ্ধ স্মারকে। সেখানে একসঙ্গে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে ভারতের বিভিন্ন যুদ্ধে নিহত ২৫ হাজার ৯৪২ শহীদ জওয়ানকে। আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা শুরু হয়েছে।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর অভিযোগ, দিল্লিতে সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের নামে শুরু হয়েছে সবকিছুতেই ‘মোদিকরণ।’ ১৯৭২ সালে ইন্দিরা গান্ধীর আমলে নির্মিত অমর জওয়ান জ্যোতিকে মোদির আমলে তৈরি জাতীয় যুদ্ধ স্মারকে মিলিয়ে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাতীয় সংসদের আসন্ন বাজেট অধিবেশনও উত্তপ্ত হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিতে শুরু করেছেন বিরোধীরা।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত সেনাদের শ্রদ্ধা জানাতে ব্রিটিশরা দিল্লির অন্যতম দর্শনীয় স্থান ইন্ডিয়া গেট তৈরি করেছিল। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানকে পরাস্ত করার পর ১৯৭২ সালে সেখানে ‘অমর জওয়ান জ্যোতি’র উদ্বোধন করেন প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। প্রায় ৫০ বছর ধরে সেই অগ্নিশিখা প্রজ্বলিত ছিল। আজ সেই শিখা নিভিয়ে ফেলা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী টুইটারে মোদিকে কটাক্ষ করেন, কেউ কেউ দেশপ্রেম বা আত্মত্যাগের গুরুত্ব বোঝেন না। আমরা ফের প্রজ্বলিত করব অমর জওয়ান জ্যোতি। কংগ্রেসের আরেক নেতা শশী থারুরের প্রশ্ন, ২০১৪-র পর থেকে সবকিছু নতুন করে লিখতে হবে?’
রাহুল গান্ধীর অভিযোগ, বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক বা গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের প্রতি কোনো সম্মান নেই। শিবসেনা এমপি প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদীও কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন। ৩১ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে ভারতের জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন। সেখানেও বিষয়টি সোচ্চার হচ্ছেন বিরোধীরা। তৃণমূল সাংসদ ডা. শান্তনু সেনের অভিযোগ, বিজেপি ইতিহাসকে বিকৃত করছে। শুধু অমর জওয়ান জ্যোতি-ই নয়, অরুণাচল ও লাদাখে চীনা আগ্রাসন নিয়েও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সংসদে বিরোধীরা সরব হবেন বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি। তবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পাল্টা দাবি, অমর জওয়ান জ্যোতিকে জাতীয় যুদ্ধ স্মারকের মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে।