অনলাইন ডেস্ক
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও মেশিন লার্নিংয়ের ব্যবহার ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতের ওষুধ শিল্পে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে। ভবিষ্যতে প্রযুক্তির ব্যবহার করে গুণগত মান বৃদ্ধির পাশাপাশি সাশ্রয়ী ও মানসম্পন্ন ওষুধ সরবরাহের মাধ্যমে এই খাত আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে ভারতের ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পের বাজারমূল্য ৫৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০৩০ সালের মধ্যে এটি প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ১২০-১৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইন্ডিয়ান ফার্মাসিউটিক্যাল অ্যালায়েন্সের (আইপিএ) সেক্রেটারি জেনারেল সুদর্শন জৈন বলেন, ‘গুণগত মান, উদ্ভাবন এবং বিশ্ব বাজারে প্রসারের মাধ্যমে এই খাত নিজেদের সক্ষমতা পূর্ণমাত্রায় কাজে লাগাতে পারবে।’
নতুন ওষুধ উদ্ভাবন ভারতের ফার্মা শিল্পের ভবিষ্যৎ নীতিতে কেন্দ্রীয় স্থান দখল করে আছে। প্রমোশন অব রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন প্রোগ্রামের কার্যক্রম শিগগিরই চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা উদ্ভাবনের গতিকে আরও ত্বরান্বিত করবে।
সুদর্শন জৈন আরও বলেন, ‘কার-টি সেল থেরাপি, এমআরএনএ ভ্যাকসিন ও জটিল অণুর বিকাশের মতো বিশেষায়িত খাতে উন্নতির জন্য ভারতীয় কোম্পানিগুলো কাজ করে চলেছে। এ ছাড়া ২০২৫ সালের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পেটেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ায় বায়োসিমিলারস মার্কেটে বড় সুযোগ তৈরি হবে।’
অর্গানাইজেশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল প্রডিউসারস অব ইন্ডিয়ার (ওপিপিআই) মহাপরিচালক অনিল মাতাই বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মেশিন লার্নিং নির্ভুল ওষুধ উদ্ভাবন, উৎপাদন ও রোগীর যত্নে বিপ্লব আনবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নীতিনির্ধারক, একাডেমিয়া ও এই শিল্পের অংশীদারদের মধ্যে সমন্বয় আমাদের ফার্মা শিল্পকে বিশ্বব্যাপী আরও শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাবে।’
ফর্টিস হেলথ কেয়ারের এমডি ও সিইও আশুতোষ রঘুবংশী জানান, ভারতের ক্লিনিক্যাল খাতের বাজার ৯৯ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০৩২ সালের মধ্যে ১৯৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে।
পলি মেডিকিউরের এমডি হিমাংশু বৈদ্য বলেন, ‘মেডিকেল ডিভাইস শিল্পের বাজারমূল্য ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ও অনুকূল পরিবেশ এই খাতের বৈশ্বিক অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।’
অন্যদিকে মেট্রোপলিস হেলথ কেয়ারের চেয়ারপারসন আমীরা শাহ জানান, ডায়াগনস্টিক শিল্প ১৩ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে ২৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। প্রযুক্তির ব্যবহার, জিনোমিকস এবং ডেটা অ্যানালিটিক এই খাতের অগ্রগতিকে আরও ত্বরান্বিত করবে।
ভারতের ফার্মাসিউটিক্যাল ও স্বাস্থ্যসেবা খাতের উদ্ভাবনী অগ্রগতি এবং উন্নয়নশীল টেকসই প্রকল্প দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।