প্রতিনিধি, কলকাতা
ভারতে সিপিএম ও বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষে উত্তাল ত্রিপুরা রাজ্য। ত্রিপুরায় সিপিএমের সদর দপ্তর ছাড়াও বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক অফিসে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। অন্যদিকে, বিজেপির অভিযোগ, সিপিএম সমর্থকেরাই তাঁদের ওপর ইট বৃষ্টি চালিয়েছে।
এদিন ত্রিপুরার জনপ্রিয় বাংলা দৈনিক প্রতিবাদী কলমের দপ্তরেও ব্যাপক ভাঙচুর চালায় বিজেপি সমর্থকেরা। পত্রিকাটির সম্পাদক অনল রায় চৌধুরীর গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের সামনেই চলে তাণ্ডব। সাংবাদিকদেরও হুমকি দেওয়া হয়। তাণ্ডবের ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে আবারও একই রকম তাণ্ডব চলবে বলে হুমকি দেয়। গণমাধ্যমে হামলার এমন ঘটনা ত্রিপুরায় আগে কখনো ঘটেনি।
ত্রিপুরায় সিপিএমের সাবেক সম্পাদক তথা রাজ্য বামফ্রন্টের আহ্বায়ক বিজন ধর আজকের পত্রিকাকে জানান, বিজেপির সমর্থকেরা তাঁদের রাজ্য দপ্তর এবং দলীয় মুখপত্র ডেইলি দেশের কথার অফিসে ব্যাপক হামলা চালায়। সবকিছু তছনছ করে দেয় হামলাকারীরা। পার্টি অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতেও আগুন দেয় হামলাকারীরা। দমকল বাহিনীকে আগুন নেভানোর কাজে বাধা দেওয়া হয়। এ সময় পুলিশ নীরব দর্শক ছিল বলেও উল্লেখ করা হয়।
সিপিএমের প্রবীণ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী পবিত্র কর জানিয়েছেন, উদয়পুর, কাঁঠালতলি, বিশালগড়-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে সিপিএম কার্যালয়ে ফ্যাসিবাদী কায়দার আক্রমণ চালানো হয়। বিশালগড় পার্টি অফিস দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে। সেই ছবি সামাজিক গণমাধ্যমে ভাইরাল হয় এদিন। সিপিএম সূত্র জানিয়েছে, দলের নেতারা আলোচনা করে আন্দোলন কর্মসূচি দেবেন।
অন্যদিকে বিজেপি মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য সাংবাদিক সম্মেলন করে পাল্টা অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগ, সিপিএম পার্টি অফিস থেকেই বিজেপির শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা করা হয়। কর্মীরা এর প্রতিবাদ করেছে।
তৃণমূল বলছে, ত্রিপুরায় ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছে। সাবেক সাংসদ সুস্মিতা দেব ও পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী চন্দ্রীমা ভট্টাচার্যকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল নেতা ঋতব্রত ব্যানার্জি হামলার তীব্র নিন্দা করেন। ঋতব্রতের অভিযোগ, 'ত্রিপুরায় অঘোষিত জরুরি অবস্থা চলছে। তাই গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভের ওপরও ত্রিশ দশকে জার্মানিতে হিটলারের কায়দায় বিজেপি দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। গণতন্ত্রের পক্ষে এটা লজ্জার'।