হোম > রাজনীতি

নয়াপল্টনে সংঘর্ষের মামলায় মির্জা ফখরুল ও আব্বাসসহ ২২৪ নেতা কর্মীর জামিন নামঞ্জুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গত বুধবার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ ২২৪ নেতা কর্মীর জামিন নামঞ্জুর করা হয়েছে।

আজ সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শফিউদ্দিন এ আদেশ দেন। 

মির্জা ফখরুলসহ ১৩৮ জনের জামিনের আবেদন করা হয় গতকাল রোববার সকালে। পরে বিকেলে ও আজ সকালে আরও ৮৬ জনের জামিনের আবেদন করা হয়। ২২৪ জনের জামিনের আবেদন আজ বেলা আড়াইটার সময় শুনানি শুরু হয়। ২ ঘণ্টা শুনানির পরে মির্জা ফখরুলসহ ১১ জনের জামিন বিষয়ে আদেশ পরে দেওয়া হবে বলে আদালত জানান। ২১৩ জনের জামিন আবেদন তাৎক্ষণিকভাবে নামঞ্জুর করা হয়। পরে ম্যাজিস্ট্রেট খাস কামরায় গিয়ে মির্জা ফখরুলসহ ১১ জনের জামিন আবেদনও নামঞ্জুর করেন। 

আরও যাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য— বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক মো. আব্দুস ছালাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, গাজীপুর বিএনপির সভাপতি মো. ফজলুল হক মিলন, নরসিংদী বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব খাইরুল কবির খোকন ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সেলিম রেজা হাবিব। 

বিএনপির আইনজীবী জয়নাল আবেদীন মেজবাহ আজকের পত্রিকাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ৩টায় মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে তাঁদের নিজ নিজ বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরদিন তাঁদের গ্রেপ্তারের কথা জানানো হয়। গত শুক্রবার পল্টন থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের আদালতে পাঠানো হলে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

অন্যদের গত বুধবার সংঘর্ষের পর নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে আটক করা হয়। তাঁদের বৃহস্পতিবারে আদালতে আনার পর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়। 

একই মামলায় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদসহ ৪৩৪ জনকে বৃহস্পতিবার কারাগারে পাঠানো হয়। রিমান্ডে নেওয়া হয় ১৪ নেতা কর্মীকে। রিমান্ড শেষে ওই ১৪ জনকেও গতকাল রোববার কারাগারে পাঠানো হয়। গত শনিবার আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এই মামলায় মোট ৪৫৩ জন বর্তমানে কারাগারে আছেন। 

গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক মিজানুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। 

গত বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় ৪৭৩ জনের নাম উল্লেখ করে পল্টন মডেল থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। পুলিশের ওপর হামলা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলা হয়। মামলায় ৪৭৩ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা দেড় থেকে দুই হাজার বিএনপি নেতা কর্মীকে আসামি করা হয়। 

এজাহারে বলা হয়, গত বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বেআইনি সমাবেশ করে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা। কোনো প্রকার পূর্বানুমতি ছাড়া অবৈধভাবে এই সমাবেশের ফলে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ বাধা দিলে পুলিশের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করে। এ সময় বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে চাল, পানি, খিচুড়ি, নগদ টাকা ও বিস্ফোরকদ্রব্য উদ্ধার করে পুলিশ।

১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে গত বুধবার বিএনপি জড়ো হয়েছিল পার্টি কার্যালয়ের সামনে। পরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধে যাওয়ার পরে পল্টন, রমনা, শাহজাহানপুর ও মতিঝিল থানায় বেশ কয়েকটি মামলা হয়। 

আজ জামিন শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, মো. বোরহান উদ্দিন, জয়নাল আবেদীন মেজবাহ প্রমুখ। 

রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন ঢাকা মহানগর পিপি আব্দুল্লাহ আবু, ঢাকা জেলা পিপি শেখ হেমায়েত হোসেন প্রমুখ। 

বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা শুনানিতে বলেন, এই মামলায় যে ঘটনা দেখানো হয়েছে প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপিকে দমন নির্যাতনের অংশ হিসেবে এখন গায়েবি মামলা হচ্ছে। আবার গায়েবি ঘটনা দেখিয়ে মামলা করা হচ্ছে। 

তাঁরা আরও বলেন, মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের নাম এজাহারে নেই। তাঁরা ঘটনাস্থলে ছিলেন না। ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করেই তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। সমাবেশ বানচাল করার জন্য এই মামলা করা হয়েছে। কিন্তু সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখন তাঁদের কারাগারে আটক রাখার কোনো যুক্তি নেই। 

অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে দাবি করা হয়, মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসই হলেন এই ঘটনার নির্দেশদাতা। রাজনৈতিক সমাবেশ এবং রাজনৈতিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে একের পর এক পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটাচ্ছে বিএনপির নেতা কর্মীরা। তাঁরা সদ্য ধৃত, এই মুহূর্তে জামিন দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। 

রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আরও বলা হয়, মামলাটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের। সম্পূর্ণ অজামিনযোগ্য ধারার মামলা। কাজেই তাদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করা হোক। 

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতি’ চলছে, একাত্তরের মতো ষড়যন্ত্র হচ্ছে: ছাত্রদল

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে বিএনপির মতবিনিময়

মধ্যরাতে ঢাবিতে বঙ্গবন্ধু ও সিরাজ সিকদারের ছবি মুছল কারা

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

দু-এক দিনের মধ্যেই খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় সিদ্ধান্ত

শনিবার ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ করবে ছাত্রদল

সংসদে কোনো নারী কোটা থাকা যাবে না: মুফতি ফয়জুল করীম

আ.লীগ উন্নয়নের নামে টাকা পাচার করেছে: রিজভী

তরুণ প্রজন্মের শক্তিতে বাংলাদেশের চিত্র পাল্টে যাবে: মির্জা ফখরুল

এক–দুই দিনের মধ্যেই খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত

সেকশন