চাঁদা না পেয়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাকে অপহরণের মামলায় গত ২৭ মে গ্রেপ্তার হন ছাত্রলীগের দুই নেতা। তাঁরা ঢাকা কলেজের নর্থ হলের আবাসিক ছাত্র।
গ্রেপ্তার ওই দুই ছাত্রলীগ নেতা জামিনে বেরিয়ে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফের সঙ্গে ফুল হাতে দেখা করেছেন। এ সময় জামিনে বের হওয়া ওই দুই ছাত্রলীগ নেতা ও ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফকে ফুল হাতে দেখা যায়।
জামিনে বেরিয়ে ওই দুই ছাত্রলীগ নেতা শোডাউন করেছেন বলেও জানা গেছে।
তবে ফুল গ্রহণের বিষয়টি অস্বীকার করে অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘আমি তাদের ফুল দিয়ে বরণ করিনি। কলেজের জুনিয়র-সিনিয়ররা মিলে আমার রুমে এসে ফুল দেওয়ার চেষ্টা করে, কিন্তু আমি গ্রহণ করিনি। আর তারা যখন রুমে আসে তখন আমার এক আত্মীয় অসুস্থ, তাঁকে নিয়ে আলাপ করছিলাম।’
অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘তারা কিছুদিন আগে একটা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিল বলে জেনেছি। কয়েক দিন কারাগারেও ছিল। যেহেতু বিষয়টা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেখছে তাই এই বিষয়ে আমাদের করার কিছু নেই।’
এর আগে গত ২৭ মে গ্রেপ্তার হন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসম্পাদক জনি হাসান এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক এস এম শফিক। ২৫ মে রাতে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ঢাকা কলেজের হলে আটকে রেখে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
ক্যামেরা ফেরত নিতে আসা তৌকিরকে জিম্মি করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। টাকা না পেলে মেরে ফেলার হুমকি দেন। পরে ভুক্তভোগী মেহেদী ঢাকা কলেজের নর্থ হলে আসলে তাঁকেও জিম্মি করা হয়। ছাত্রলীগের নেতাদের নেতৃত্বে মেহেদী ও তৌকিরকে হলে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছে থাকা নগদ টাকা, এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নেন। রাতে মারধর করে তৌকিরকে ছেড়ে দিলেও মেহেদীকে রাতভর নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের কারণে মেহেদীর অবস্থা বেগতিক দেখে পরদিন শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা কলেজ থেকে বের করে নিউমার্কেটের গাউছিয়া মোড়ে কৌশলে ফেলে রেখে পালিয়ে যান।
এই সময় নিউমার্কেট থানার টহল পুলিশকে বিষয়টি জানালে তারা মেহেদীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী মেহেদী বাদী হয়ে জনি হাসান, এস এম শফিকসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা নম্বর (১৮/৮৫)।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন ছাত্রলীগের কর্মী মো. গোলাপ হোসেন, মোহেরাব হোসেন সিয়াম, অর্বণ, মো. রমজান, গোপাল, রাব্বী তালুকদার, মো. বেল্লাল হোসেন, তারিফ, সালমান, মো. রায়হান, মাসুম, ফাহিম, শাহীন।
ঢাকা কলেজ সূত্রে জানা গেছে, মামলার আসামিরা সবাই ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সবাই নর্থ হলের আবাসিক ছাত্র। জনি ও শফিক নিউমার্কেটসহ আশপাশের এলাকায় চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।