ক্রীড়া ডেস্ক
থ্রিলার মুভির গল্পও হয়তো হার মানবে রিংকু সিংয়ের কাছে। অভাবের সংসারে ক্রিকেট খেলাটাই একসময় তাঁর কাছে ছিল ‘ছেঁড়া কাথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখার মতো।’ তবে রিংকু যে হার মানবার পাত্র নন। গতকাল খাদের কিনারা থেকে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে অবিশ্বাস্য ম্যাচ জিতিয়ে তিনি তাঁর ‘হার না মানা’ মানসিকতার প্রমাণ দিলেন। টানা পাঁচ ছক্কা মেরে ক্রিকেটবিশ্ব তোলপাড় করে দিয়েছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে গতকাল কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রতিপক্ষ ছিল গুজরাট টাইটান্স। শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ২৯ রান।বোলিং করতে আসেন গুজরাটের বাঁহাতি পেসার যশ দয়াল। প্রথম বলে এক রান নিয়ে রিংকুকে ব্যাটিং করতে দেন উমেশ যাদব। শেষ পাঁচ বলে তখন দরকার ২৮ রান। স্ট্রাইক প্রান্তে গিয়ে ছক্কার ‘হ্যাটট্রিক’ করেন রিংকু। এই হ্যাটট্রিক ছক্কাই যেন তাঁর আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। শেষ দুই বলে টানা ছক্কা মেরে কলকাতাকে এনে দিয়েছেন রূপকথার এক জয়।
কলকাতার রূপকথার জয়ের নায়ক রিংকুর ব্যাটিংয়ে হয়েছে বেশ কিছু রেকর্ড। আইপিএল ইতিহাসে শেষ ওভারে সর্বোচ্চ রান করে জয়ের রেকর্ড এখন কলকাতার। এমন বিধ্বংসী ব্যাটিং করে রিংকু যেন ৭ বছর আগের পুরোনো এক স্মৃতি রোমন্থন করালেন। ২০১৬ আইপিএলে বিশাখাপত্তনমে এক ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল রাইজিং পুনে সুপার জায়ান্টস এবং কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। শেষ ওভারে জয়ের জন্য পুনের দরকার ছিল ২৩ রান। অক্ষর প্যাটেলের করা ওভার থেকে একাই ম্যাচ বের করে নিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি।
দুর্দান্ত ব্যাটিং করে সামাজিকমাধ্যমে শুরু হয়েছে ‘রিংকু বন্দনা’। অবিশ্বাস্যভাবে ম্যাচ জিতিয়ে ‘সুপারস্টার’ তকমা পেয়ে গেছেন রিংকু। হরভজন সিং টুইট করেন, ‘সুপারস্টার রিংকু সিং।’ ইউসুফ পাঠান টুইট করেছেন, ‘অসাধারণ ব্যাটিং রিংকু সিংয়ের। শেষ সাত বলে ৬,৬, ৬,৬, ৬,৪, ৬। আইপিএল অন্যতম সেরা এক নাটকীয় ফিনিশিং দেখেছে।’ ভারতের তিন সংস্করণের অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেন, ‘আইপিএল সত্যিকার অর্থেই প্রতিভাবানদের সুযোগ কাজে লাগানোর জায়গা। অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলেছে রিংকু।’ অন্যদিকে রশিদ খানের হ্যাটট্রিকের পর জহির খান সেখানেই যেন ম্যাচের ফল দেখতে পাচ্ছিলেন। কলকাতার অবিশ্বাস্য জয়ের প্রশংসা করে জহিরের টুইট, ‘রশিদের হ্যাটট্রিকের পর মনে হচ্ছিল খেলা শেষ। কিন্তু ৬,৪, ৬,৬, ৬,৬, ৬-রিংকু নিজের শেষ সাত বলে এই রান করেছে। আইপিএল ইতিহাসের অন্যতম সেরা জয় পেয়েছে কলকাতা।’