ক্রীড়া ডেস্ক
ঢাকা: গ্যারি লিনেকারের একটি কথা ফুটবল বিশ্বে বেশ প্রচলিত। ফুটবল খেলায় ৯০ মিনিট ধরে ২২ জন বলের পেছনে দৌড়ায়, দিন শেষে কেবল জার্মানিই জেতে। না, কাল চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে কোনো জার্মান ক্লাব শিরোপা জেতেনি। তবে এক জার্মান তরুণের গোলেই ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটিকে হারিয়ে জিতেছে চেলসি। সেই একটি গোলেই এখন ইউরোপের নায়ক ২১ বছর বয়সী জার্মান তরুণ হাভার্টজ।
হাভার্টজের করা একমাত্র গোলটিই নয় বছর পর ইউরোপসেরার ট্রফি ঘরে এনে দিয়েছে চেলসিকে। অথচ ফাইনালের আগ পর্যন্ত ভুলে যাওয়ার মতো মৌসুম কাটিয়েছেন হাভার্টজ। অনেক প্রত্যাশা নিয়ে জার্মান ক্লাব বেয়ার লেভারকুসেন থেকে তাঁকে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে নিয়ে আসে চেলসি। দামটাও চোখ কপালে তোলার মতো। বাংলাদেশি টাকায় ৮৬৪ কোটি ১৪ লাখ।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলতে এসে যেন অসহায় বোধ করছিলেন হাভার্টজ। দলের চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন বারবার। এমনিতেই ছিলেন বাজে ফর্মে, তার ওপর গত নভেম্বরে কোভিডে আক্রান্ত হন তিনি। পুরো সুস্থ হয়ে মাঠে নামার অবস্থায় ফিরতে লেগে গিয়েছিল তিন সপ্তাহের মতো। তাঁর পেছনে ‘এতগুলো টাকা জলে গেলো কি না’ সেই প্রশ্নও উঠছিল সমর্থকদের মাঝ থেকে।
তবে একরাতেই যেন সব আলোচনা-সমালোচনা প্রশংসার জোয়ারে রূপ নিল। জ্বলে উঠলেন ক্লাব ফুটবলের সবেচেয়ে বড় মঞ্চে। ম্যাচের ৪২ মিনিটে তাঁর করা একমাত্র গোলটিই ফাইনালের ভাগ্য গড়ে দিয়েছে। উদ্যাপনই বলে দিচ্ছিল ওই মুহূর্তে সবচেয়ে সুখী মানুষটা তিনিই। এই গোলের মাধ্যমে একটি রেকর্ডও নতুন করে লিখেছেন হাভার্টজ। ১৯৯৯ সালের ১১ জুন জন্ম নেওয়া এই জার্মান চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে গোল করা সবচেয়ে কম বয়সী ফুটবলার।
হাভার্টজের জন্য কালকের রাতটা রূপকথার মতো। স্বপ্নের মতো রাতটায়ও ম্যাচ শেষে নিজের দাম নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। তবে এসবকে খুব একটা পাত্তা দেন না উল্লেখ করে হাভার্টজ জানান, ‘আমি এসব ভাবিই না। শুধু এটা জানি আমরা চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতেছি।’
ম্যাচ শেষে বিটি স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উচ্ছ্বাস লুকাতে পারেননি এই তরুণ। এমন একটা দিনের জন্য ১৫ বছর অপেক্ষা করছিলেন জানিয়ে বলেছেন, ‘আমি আসলে বুঝতে পারছি না কী বলব। এখনো সবকিছু স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। এমন একটা দিনের অপেক্ষায় অনেক দিন ধরেই ছিলেন।’ নিজের পরিবার আর বান্ধবীর প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন হাভার্টজ।