এ বছর দেশে আলুর উৎপাদন বেশ ভালো হলেও দাম ও সংরক্ষণে বিভিন্ন এলাকায় বড় ধরনের সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে সিরাজদিখান ও রাজশাহীতে আলুর দাম কমার পাশাপাশি সংরক্ষণে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে। এতে এ মৌসুমে বিক্রি না হওয়া আলু পচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের কৃষক আওলাদ হোসেন এ বছর সাত বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। খুব ভালো ফলন হয়েছে। কিন্তু উৎপাদিত আলু সংরক্ষণ নিয়ে বিপদে পড়েছেন তিনি। উপজেলার নেপচুন কোল্ডস্টোরেজের সামনে দুই দিন অপেক্ষা করেও ২০০ বস্তা আলু রাখতে পারেননি।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘মাঠে যাওয়া মানে আমরা আলু তুলে দিচ্ছি, এমন না। যে মাঠে আলু তোলা হচ্ছে, সেখানে যাই এই কারণে যে, আলু উৎপাদন করতে কয় টাকা খরচ হয়, তা শুনতে।’ আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে পঞ্চগড় সদর উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নে জনসংযোগের সময় সাংবাদিকদের
রাজশাহীতে এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু বাজারে দাম না থাকায় কৃষকেরা জমির ইজারার খরচও ওঠাতে পারছেন না। এমনকি অনেক কৃষক আলু সংরক্ষণ করতে চাইলেও হিমাগারে জায়গার সংকট রয়েছে। অনেক কৃষক বুকিং দেওয়ার পরও হিমাগারে আলু রাখতে পারছেন না।
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে একটি হিমাগারে মজুত করা কৃষকের আলুতে পচন ধরেছে। সেখানে মজুত ৪৫ হাজার বস্তা আলু নিয়ে দুশ্চিন্তায় শতাধিক কৃষক। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী ওই হিমাগারে মজুত আছে কমপক্ষে ৩ কোটি টাকার আলু। বর্তমানে আলুগুলো পচে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার খট্টামাধবপুর ডাঙ্গাপাড়া এলাকার কৃষক মোমিনুল ইসলাম। এবার তিন বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করেছেন তিনি। একটি ট্রাক্টরে করে ১৮ বস্তা আলু নিয়ে ফুলবাড়ী উপজেলার রাঙামাটির ফুলবাড়ী কোল্ডস্টোরেজে এসেছেন। সিরিয়ালের কোনো স্লিপ পাননি। আদৌ আলু হিমাগারে রাখতে পারবেন কি না, তা নিয়েও রয়েছে সংশয়।
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় চলছে আলু উত্তোলনের ব্যস্ততম মৌসুম। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের প্রায় ১০-১২ হাজার কৃষক মাঠে পরিশ্রম করছেন। এ বছর পচা ও দাউদের পরিমাণ কম থাকলেও আলুর আকার ছোট হওয়ায় কৃষকেরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
দিনরাত আলু নিয়ে হিমাগারে অপেক্ষা। তারপরও সেখানে রাখা যাচ্ছে না। বুকিং কার্ড থাকলেও আলু নিয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে কৃষককে। হিমাগারের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্থানীয় দালাল ও ফড়িয়াদের সঙ্গে আঁতাত করে ব্যবসায়ীরা অগ্রিম আলু সংরক্ষণের কার্ড হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
দেশীয় পেঁয়াজ, রসুন, আলু ও লবণের ভরা মৌসুম এখন। চলতি মৌসুমে এসব পণ্য উৎপাদন পর্যাপ্ত হওয়ায় এই সময়ে কৃষকের মুখে হাসি ফোটার কথা। কিন্তু লাভ তো দূরে থাক, পণ্যের উৎপাদন খরচও তুলতে না পেরে হতাশ কৃষকেরা।
রংপুরের ঈশ্বরপুর গ্রামে যতদূর চোখ যায় চোখে পড়ে মাঠে মাঠে বিভিন্ন জাতের আলুর গাছ। মূলত সেখানে উৎপাদন হচ্ছে আলুবীজ। আর সেখান থেকে উৎপাদিত আলুবীজ ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। এখন দেশের প্রায় সব জেলাতেই কমবেশি আলুর চাষ হয়।
আলু সংরক্ষণের জন্য কোল্ডস্টোরেজের সর্বোচ্চ ভাড়া নির্ধারণ করেছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। আজ রোববার এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
রাজশাহীর হিমাগারগুলোতে আলু সংরক্ষণের ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন কৃষকেরা। কৃষকেরা রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কে আলু ফেলে এই বিক্ষোভ দেখান। এ সময় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে জেলার পবা উপজেলার বায়া এলাকায় সরকার হিমাগারের সামনে কৃষকেরা এই কর্মসূচি পালন করেন। স্থানীয় বিএনপি
বাড়ির রান্নাঘরে মাইক্রোওয়েভ বেশ প্রয়োজনীয় যন্ত্র। দ্রুত খাবার গরম করার জন্য এর ব্যাপক চাহিদা। কিন্তু অনেকেই মাইক্রোওয়েভ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু ভুল করে থাকেন, যা স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে। মাইক্রোওয়েভ খাবার গরম করার জন্য হলেও...
আলু সংরক্ষণে হিমাগার ভাড়া ‘অন্যায্যভাবে’ বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে পাঁচ দফা দাবিতে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। এ সময় তাঁরা মহাসড়কে আলু ফেলে হিমাগার মালিক সমিতির ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান।
রংপুরের পীরগাছায় আলুর বাম্পার ফলন হলেও হাসি নেই চাষিদের মুখে। বাজারে দাম না থাকায় আগাম আলু নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছেন তাঁরা। উৎপাদন খরচ উঠছে না কৃষকদের। গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি দাম অর্ধেকের বেশি কমে গেছে। ফলে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন আলুচাষিরা।
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের প্রধান আলু উৎপাদনকারী জেলা রংপুর ও ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকেরা এ বছর বহুমুখী সংকটে পড়েছেন। উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, হিমাগারের সীমিত ধারণক্ষমতা, সংরক্ষণ ব্যয়ের ঊর্ধ্বগতি এবং বাজারে আলুর নিম্নমূল্য—সব মিলিয়ে তাঁরা আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছেন।
ঠাকুরগাঁওয়ে আলুচাষিরা এখন চরম সংকটে পড়েছেন। বাজারে আলুর দাম কমেছে। এদিকে হিমাগারে আলু সংরক্ষণের খরচ বেড়ে যাওয়ায় তাঁদের অবস্থা আরও করুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় কয়েক দিন ধরে জেলার ১৭টি হিমাগারের আলু সংরক্ষণের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে সম্প্রতি বিক্ষোভ করছেন চাষিরা।