ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হেরজি হালেভি বলেছেন, ইরান যে হামলা চালিয়েছে, তার জবাব অবশ্যই দেওয়া হবে। গতকাল সোমবার ইরানি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ইসরায়েলি বিমান ঘাঁটি পরিদর্শনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
জেনারেল হেরজি হালেভি দক্ষিণ ইসরায়েলের নেভাতিম বিমানঘাঁটি পরিদর্শন করেন। গত শনিবার গভীর রাতে ইরানি হামলায় ঘাঁটিটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সব মিলিয়ে ইরানের চারটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ওই ঘাঁটিতে আঘাত হানে। হালেভির এই মন্তব্য দেশটির যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের কয়েক ঘণ্টা পর এল। এর আগে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা ইরানে আক্রমণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছিল।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হালেভি সোমবার সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘এক দিন আগে ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা—যার ফলে একটি বিমানঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে—তার জবাব অবশ্যই দেওয়া হবে।’
হালেভি বলেন, ‘ইসরায়েল রাষ্ট্রের কৌশলগত সক্ষমতার ক্ষতি করতে চেয়েছিল ইরান, যা আগে কখনোই ঘটেনি। আমরা আয়রন শিল্ড অপারেশনের জন্য প্রস্তুত ছিলাম।’ তিনি বলেন, ‘গত সোমবার আমরা দেখেছি কী ঘটেছে। আমরা মনে করি, ইসরায়েল খুবই শক্তিশালী এবং জানে কীভাবে কোন ঘটনা একা মোকাবিলা করতে হয়।’
এ সময় ইরানকে সতর্ক করে ইসরায়েলি সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমরা সামনের দিকে তাকিয়ে। আমরা আমাদের পদক্ষেপগুলো বিবেচনা করছি এবং ইসরায়েলি ভূখণ্ডে যে ক্ষেপণাস্ত্র, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও মানুষবিহীন এই হামলার জবাব অবশ্যই দেওয়া হবে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত রোববার গভীর রাতে কথা বলেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে। সে সময় বাইডেন বলেছেন, ইরানের বিমান হামলার প্রতিক্রিয়ায় কোনো প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপে অংশ নেবে না যুক্তরাষ্ট্র।
মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা ও সংঘাত কমাতে বিশ্বনেতাদের আহ্বানে বাইডেনও সুর মিলিয়েছেন। তবে ইসরায়েলের জন্য স্থগিত সহায়তা তহবিলটি যদি পাস করিয়েই ফেলে বাইডেন প্রশাসন, তবে সহিংসতা কমার আশা শিগগিরই আলোর মুখ দেখবে না। কারণ, সে ক্ষেত্রে নেতানিয়াহুকে ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার সহায়তা পেতে সাহায্য করবে ওয়াশিংটন।
এর আগে, ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে বিমান হামলা হয়। এতে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) আল-কুদস ফোর্সের দুই শীর্ষ জেনারেলসহ সব মিলিয়ে ১১ জন নিহত হন। ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে এই হামলার দায় স্বীকার না করলেও ইরান ইসরায়েলকেই এর জন্য দায়ী করে আসছে।
জবাবে গত শনিবার ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে একসঙ্গে বেশ কয়েকটি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। গতকাল শনিবার রাতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ইরান ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে। সেই হামলায় ইসরায়েলের একটি গোয়েন্দা কেন্দ্র ও একটি বিমান ঘাঁটি ধ্বংস করার দাবি করেছে ইরান।
আরও পড়ুন: