হোম > সারা দেশ > রংপুর

ডিমলায় হিমাগার না থাকায় নষ্ট হচ্ছে আলু

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি 

আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯: ৪৬
উপজেলার নাউতারা এলাকায় আলু তুলছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নীলফামারীর ডিমলা কৃষিপ্রধান উপজেলা হলেও নেই সরকারি বা বেসরকারি কোনো হিমাগার। ২০-৩০ কিলোমিটার দূরের অন্য উপজেলায় রয়েছে বেসরকারি কয়েকটি হিমাগার, যা পর্যাপ্ত নয়। ফলে আলু নিয়ে চরম বিপাকে চাষিরা। হিমাগার না থাকায় প্রতিবছর সংরক্ষণের অভাবে খেতেই নষ্ট হচ্ছে কয়েক হাজার মণ আলু।

কৃষকেরা বলছেন, হিমাগার নির্মাণ হলে কৃষকদের জন্য সুবিধা হবে আলু সংরক্ষণে। এতে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমবে। ভালো দাম পেয়ে লাভবান হবেন আলুচাষিরা।

কৃষি বিভাগ বলছে, জেলায় মোট উৎপাদনের পাঁচ ভাগের এক ভাগ আলু সংরক্ষণ করার মতো হিমাগার রয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বছর বীজের সংকট ও সিন্ডিকেটের কারণে চড়া দামের আলু বীজ বপন করেন কৃষকেরা। ফলে আলু আবাদে দ্বিগুণ খরচ হয়েছে তাঁদের। এরপর ফলন ভালো হলেও এখন সংরক্ষণের অভাবে খেতেই কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে আলু। আবার খরচের ভয়ে অনেকে আলু তুলছেন না খেত থেকে। এতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কয়েক হাজার মণ আলু।

উপজেলার কাঁকড়া গ্রামের আলুচাষি জামিনুর রহমান জানান, গত বছর ৮ বিঘা জমিতে আলু রোপণ করে ফলন পেয়েছিলেন ৫১০ মণ। রোপণ থেকে শুরু করে হিমাগারে রাখতে খরচ হয়েছিল মোট ২ লাখ টাকা। এ বছরও আলু রোপণ করেছেন ১০ বিঘা জমিতে। তবে আলু সংরক্ষণে উপজেলায় ব্যবস্থা না থাকায় রাখতে হয় পাশের উপজেলা জলঢাকা অথবা ডোমারের হিমাগারে। ফলে পরিবহন ও শ্রমিকের জন্য গুনতে হয় বাড়তি টাকা।

জামিনুর জানান, হিমাগারে আলু সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রশিদ নিতে হয়। নির্ধারিত সময়ে আলু না রাখতে পারলে আর সম্ভব হয় না হিমাগারে রাখা। ফলে পরতে হয় লোকসানে। এতে কম দামে আলু কেনায় লাভবান হন মধ্যস্বত্বভোগীরা।

উপজেলার নাউতারা এলাকায় আলু তুলছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সুন্দরগাতা গ্রামের আলুচাষি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বাজারে আলুর দামের পরিস্থিতি খারাপ। জমিতে যে আলু রয়েছে, সেগুলো ওঠাইনি। আলু ওঠালে খরচের টাকা উঠবে না। এখন পাইকারেও বিক্রি করতে পারছি না। আবার সংরক্ষণও করতে পারছি না। হিমাগার না থাকায় আলু চাষ করে সংকটে পড়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আলু চাষ করেছি। কীভাবে ঋণ শোধ করব তা জানা নেই।’

কৃষকদের অভিযোগ, চলতি মৌসুমে আগাম জাতের বীজ আলু বগুড়া থেকে তাঁদের বেশি দামে কিনতে হয়েছে। ফলনও ভালো, তবে বাজারে দাম নেই। এখন তো আলু বেচতে পারছেন না। জেলায় যেসব হিমাগার রয়েছে সেখানে রশিদ পাওয়া যায় না।

তাঁদের দাবি, সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা না থাকায় আলু নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই তাঁদের। এই উপজেলার মধ্যে একটি সরকারি বা বেসরকারি হিমাগার থাকলে এ সমস্যা পোহাতে হতো না। আলু সংরক্ষণ করতে পারতাম।

জানা গেছে, জেলায় ১১টি হিমাগার রয়েছে। যার ধারণক্ষমতা ৮২ হাজার ২৫০ টন। জেলায় এ বছর কৃষকদের আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ৫ হাজার ৭৭০ টন। আলু চাষ হয়েছে ২১ হাজার ৯৯০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ডিমলা উপজেলায় চাষ হয়েছে ১ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের আশা ৪২ হাজার টন।

এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মীর হাসান আল বান্না বলেন, এ উপজেলায় প্রতিবছরই আলুর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তবে সংরক্ষণের অভাবে বিপুল পরিমাণ আলু প্রতিবছরই নষ্ট হয়ে যায়। হিমাগার না থাকায় কৃষকেরা চরম ক্ষতির মুখে পড়ছেন। যদি হিমাগার করা যায়, তাহলে স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পর অতিরিক্ত আলু আশপাশের সব জেলার চাহিদা মেটানো সম্ভব।

এক মাসেও মাটি পড়েনি ফসল রক্ষা বাঁধে

দখল-চাঁদাবাজি-হামলায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা

মতবিনিময় সভায় মুজিব বর্ষের লোগো, নেসকোর ৩ কর্মকর্তা বদলি

পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা: ২ জন আটকের কথা জানালেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম

সেকশন