ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জের ঘিওরে দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি না দেওয়ায় স্ত্রী লায়লা আরজুকে (৬০) গলা কেটে হত্যা করেছেন তাঁর স্বামী সেকেন্দার আলী (৬৬)। উপজেলার রাথুরা গ্রামে ১৫ জানুয়ারি গলা কেটে এক নারীকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার স্বামী আদালতে জবানবন্দিতে এ তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানিয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) ইয়াসমিন খাতুন। এর আগে গতকাল দায় স্বীকার করে মানিকগঞ্জ আদালতে ১৬৪ ধারায় আসামি এই জবানবন্দি দিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, উপজেলার রাথুরা গ্রামে সেকেন্দার আলী ও লায়লা আরজু দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে বিয়ে করে নিজ নিজ কর্মস্থলের কাছে বসবাস করেন। বাড়িতে থাকতেন সেকেন্দার আলী ও তাঁর স্ত্রী লায়লা আরজু। গত ১৫ জানুয়ারি সকালে ওই তিনতলা বাড়ির দ্বিতল ভবন থেকে গলাকাটা লায়লা আরজুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন নিহতের ভাই ময়নুল ইসলাম মুকুল বাদী হয়ে ঘিওর থানায় হত্যা মামলা করেন।
পুলিশের তদন্তের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, ঘটনার সঙ্গে নিহতের স্বামী সেকেন্দার আলী সরাসরি যুক্ত। তাঁকে শুক্রবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়ার পর সেকেন্দার আলী স্ত্রীকে হত্যার কারণ পুলিশকে খুলে বলেন।
সেকেন্দার আলী পুলিশকে বলেন, তাঁর স্ত্রী ডায়াবেটিস, হাই প্রেশার, থাইরয়েড ও ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্ত। তা ছাড়া তাঁর জরায়ু অপসারণ করা হয়েছিল। ২০২২ সাল থেকে তিনি অসুস্থ। এসব কারণে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করবেন জানালে স্ত্রী তাতে বাধা দেন। এ নিয়ে গত ১৪ জানুয়ারি রাতে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ নিয়ে পরদিন সকালে আবারও ঝগড়ার একপর্যায়ে স্ত্রীকে ধাক্কা দিয়ে তিনি মেঝেতে ফেলে দেন। পরে রান্নাঘর থেকে ফল কাটার ছুরি দিয়ে স্ত্রীর গলায় আঘাত করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাজারের দিকে চলে যান। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ি ফিরে তিনি চিৎকার করে বলেন যে, তাঁর স্ত্রীকে কে বা কারা গলা কেটে হত্যা করেছে।
পুলিশ সুপার ইয়াসমিন বলেন, মামলা হওয়ার পর মাত্র দুই দিনের মধ্যে আলোচিত এই হত্যার রহস্য উন্মোচন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালত আসামিকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন।