নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
‘বাবা, আমি কি আর হাঁটতে পারব না।’ বাবার উদ্দেশে ছোট্ট নুসরাতের প্রশ্ন। ডান পায়ের গোড়ালি থেকে পাতার পুরোটাই সাদা ব্যান্ডেজে মোড়ানো। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বেডে নির্বাক শুয়ে আছে নুসরাত জাহান ইশাত। কিছুক্ষণ পরপর সেই নীরবতা ভাঙছে ব্যথার গোঙানিতে। দুই পাশ থেকে বাবা-মা সান্ত্বনা দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু ব্যথার সঙ্গে ছোট্ট শরীর টিকতে পারছে কোথায়? তার প্রশ্নের সামনে বাবা-মায়ের অপ্রস্তুত ও অসহায়বোধ ছাড়া আর কী করার আছে?
নুসরাত চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। আজ রোববার দুপুর ১২টায় স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে একটি দ্রুতগামী ট্রাক তার ডান পায়ের পাতার ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে তার পায়ের গোড়ালি থেকে আঙুল পর্যন্ত থেঁতলে গেছে। এখন পায়ের নিম্নাংশ হারানোর শঙ্কায় আছে মেয়েটি।
নুসরাতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নুসরাতের বাসা বায়েজিদ বোস্তামীর কুঞ্জছায়া আবাসিক এলাকায়। টেক্সটাইল এলাকায় সড়ক পার হওয়ার সময় সে দুর্ঘটনায় পড়ে। পরে স্থানীয়রা দ্রুত তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ট্রাক ও ট্রাকচালককে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার বেলা দেড়টার দিকে হাসপাতালে কথা হয় নুসরাতের সঙ্গে। সে বলে, ‘রাস্তা পার হওয়ার জন্য এক পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলাম। পরে এক নারী রাস্তা পারাপারে সহযোগিতা করতে বললে তাঁর হাত ধরি। এমন সময় হঠাৎ ট্রাকটি এসে তার পায়ের ওপর চাপা দিয়ে চলে যায়। এখন পায়ে খুব যন্ত্রণা হচ্ছে।’
রিয়াজ বলেন, ‘এই ঘটনার বিচার চাই। আগে মেয়েকে সুস্থ করে তুলি। এরপর দোষী চালকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
বায়েজিদ বোস্তামী থানার উপপরিদর্শক বশির গাজী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আহত মেয়েটি যেন সঠিক চিকিৎসা পায়, আমরা আগে সেটি নিশ্চিত করেছি। ট্রাকচালককে আমরা নিজেদের হেফাজতে রেখেছি। আহতের বাবা আইনগত ব্যবস্থা নিলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।’