নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় চট্টগ্রামে চিকিৎসক নিহতের মামলায় চবি ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি গোলাম রসুল নিশানসহ দুজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার মহানগর দায়রা জজ বেগম জেবুন্নেছার আদালত আসামিদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ মামলায় আসামি নিশান ও আরিফুল্লাহ রাজু হাইকোর্টে ছয় সপ্তাহের জামিনে ছিলেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে বুধবার দুজনই আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী এএইচএম জিয়া উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই দুই আসামি হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের জামিনে ছিলেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে বুধবার তারা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।’
তিনি বলেন, ‘নিশানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার নেতৃত্বে আসামিরা উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে এবং তার নির্দেশনায় হামলা হয়। আদালতে আমাদের বক্তব্য ছিল, ঘটনা যখন সংঘটিত হয় সেই সময় আসামি গোলাম রসুল নিশান তাঁর শ্বশুরবাড়িতে ছিলেন। সেখানে একটি সিসিটিভি ফুটেজে তাঁকে ওই বাসা থেকে বের হতে দেখা যায়। সিসিটিভি ফুটেজটি সিজার লিস্টে রয়েছে। তিনি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।
অপর আসামি রাজুর নাম এফআইআরে নেই। তাঁকে আসামি হিসেবে দেখানো হয়েছে। এসব কিছু আমরা আদালতে উত্থাপন করি। কিন্তু আদালতে আমাদের তথ্যগুলো অগ্রাহ্য করে আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে কাস্টডিতে পাঠানোর আদেশ দেন।’
কোরবান আলীর মাথায় পাথরের আঘাত লাগলে তিনি নিচে পড়ে গেলে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন (৬ এপ্রিল) আকবরশাহ থানায় নিশানসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৫ / ৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।
ঘটনার পাঁচ দিন পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কোরবান আলীর মৃত্যু হলে মামলাটি হত্যা মামলায় পরিণত হয়। প্রথম দিকে থানা-পুলিশ মামলাটি তদন্ত করলেও পরে তদন্তভার ডিবি পুলিশের হাতে ন্যস্ত হয়।
মামলায় কয়েক আসামি কারাগারে থাকলেও নিশানসহ তিন আসামি ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল। বাদী আলী রেজা রানা ঘটনার মূল হোতা নিশানকে গ্রেপ্তার না করায় সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করে বিভিন্ন সময় প্রতিবাদ জানান।
এদিকে জামিন বাতিলের খবর শুনে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার অনুসারী লোকজন আদালত এলাকায় গণমাধ্যমকর্মীদের সংবাদ সংগ্রহ ও ছবি তুলতে বাধা প্রদানের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, ‘এ সময় এক টেলিভিশন সাংবাদিককে ধাক্কা মেরে সিঁড়িতে ফেলে দেওয়া হয়। আমাকে একজন মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এরপরও আমরা ছবি তুলতে থাকি। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’