হোম > সারা দেশ > চট্টগ্রাম

লক্ষ্মীপুরে ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়, এক বিলেই তৈরি হয়েছে ২০০ পুকুর

রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নে ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে ফসলি জমির মাটি। এভাবে ইউনিয়নের একটি বিলেই তৈরি হয়েছে দুই শতাধিক পুকুর। আশপাশের জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে গর্ত করে ফেলায় অনেকে বাধ্য হচ্ছেন নিজেদের জমি কম দামে বেঁচে দিতে।

গত শুক্রবার বিকেলে ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রামের আমির হোসেন ডিপজলের আল মদিনা ইটভাটার পেছনে দেহলা ও সমেষপুরে দেখা যায় কৃষিজমির মাটি কাটার কর্মযজ্ঞ। পুরো ফসলি জমির মাঠে বিশাল বিশাল পুকুর। ২০ থেকে ২৫টি ট্রলি ও ভেকু মেশিন দিয়ে ফসলি জমিতে পুকুর খনন করে মাটি নিয়ে যাচ্ছে পাশের আল মদিনা ও জেবিএম ইটভাটায়। 

স্থানীয় লোকজন জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ওই বিলে ৩০টির বেশি পুকুর খনন করা হয়েছে। ভুক্তভোগী কৃষক ও এলাকাবাসী কয়েকবার মানববন্ধন, প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ, গণস্বাক্ষরসহ স্মারকলিপি প্রদান, সংবাদ সম্মেলন করলেও বন্ধ হয়নি মাটি কাটা। 

আবদুস সালাম, কালা মিয়া, রাজা মিয়াসহ কয়েকজন কৃষক জানান, ভোলাকোট ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান বশির আহম্মদ মানিক, স্থানীয় প্রভাবশালী দুলাল পাটোয়ারী, ইটভাটার মালিক আমির হোসেন ডিপজল, জাহাঙ্গীর কোম্পানী, সিরাজ মিয়াসহ মাটি ব্যবসায়ী এই চক্র জমি কিনে নিয়ে ৪০ থেকে ৫০ ফুট গভীর করে মাটি নিয়ে যায়। 

এতে পার্শ্ববর্তী জমি ভেঙে পড়ে পুকুরে পড়ে। তখন ওই জমির মালিক বাধ্য হয়ে মাটিখেকোদের কাছে অল্প দামে জমি বিক্রি করে দিচ্ছেন। আবার অনেক কৃষককে জমির মাটি বিক্রিতেও বাধ্য করা হয় কখনো কখনো। নামমাত্র মূল্যে ২-৩ ফুট কাটার কথা বলা হলেও অল্প কদিনেই ভেকু মেশিন বা খনন যন্ত্র দিয়ে কোথাও কোথাও তা ৪০-৫০ ফুট গভীর করে মাটি নিয়ে যায়। 

সিরাজ নামের এক কৃষক বলেন, ‘সমস্ত মাঠ যেভাবে ধ্বংস করে ফেলছে, আমরা কৃষক কীভাবে চাষাবাদ করব, কী খাব?’
 
শাহ আলম নামের আরেক কৃষক বলেন, ‘পুরো মাঠে পুকুর। পুকুরের কারণে নিজের জমিতেই যাওয়া যায় না। কিছু কিছু জমির ধান পেকে আছে। অথচ ধান কেটে কীভাবে আনব বুঝতে পারছি না। নৌকায় করেও আনা সম্ভব নয়।’

কৃষকেরা জানান, ভোলাকোট গ্রামের দেহলা, শাহারপাড়া, শাকতলা ও ভাদুর ইউনিয়নের সমেষপুর ও সিরুন্দিসহ পাঁচ গ্রামের কয়েক হাজার কৃষক যুগ যুগ ধরে এই মাঠে চাষাবাদ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। কয়েক বছর আগে থেকেই এই মাঠ ইটভাটার মালিকদের নজরে পড়ে। বিপুল হারে মাটি কাটায় এখন চাষাবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই বেশির ভাগ কৃষক কৃষিকাজ ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় জড়িত হতে বাধ্য হচ্ছেন। 

মাটিকাটার অভিযোগ যাঁদের বিরুদ্ধে, তাঁদের একজন দুলাল পাটোয়ারী বলেন, ‘সবাই কাটে, আমরা কাটলে দোষ হয়? আপনারা আসছেন, আপনারা নিউজ করেন। আমরা আমাদের কাজ করি।’

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দিলুর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি অসহায়। আমার কিছু করার নেই মাটিকাটা বন্ধে। আপনারা নিউজ করে দেখেন কিছু করতে পারেন কি না।’ 
 
লক্ষ্মীপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ পাঠান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে বিহিত-ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’ 

রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন ইসলাম বলেন, সর্বশেষ মাসিক সভায় এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। মাটি কাটা রোধে সরকারি সব ধরনের আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

চট্টগ্রামে পাহাড়ের জমি থেকে দখলদার উচ্ছেদ

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প পরিদর্শনে তিন উপদেষ্টা

৩৪ মাস ধরে পরিত্যক্ত ভবনে ইউএনও, রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ

টেকনাফের পাহাড়ে আবারও বন্য হাতির মৃত্যু

দুর্নীতিবাজ-খুনিদের সংসদ ও রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্ত না করার সুপারিশ করা হয়েছে: বদিউল আলম

মাদক কারবারে জড়িত পুলিশের এএসআইসহ ২ জন গ্রেপ্তার

নাফ নদ থেকে পণ্যবাহী ৩ জাহাজ নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

মেয়র হতে পারায় প্রয়াত উপদেষ্টা হাসান আরিফের প্রতি কৃতজ্ঞ ডা. শাহাদাত

বান্দরবানে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

চকরিয়ায় গৃহবধূ হত্যার ঘটনায় ৫ জনের নামে মামলা, স্বামী গ্রেপ্তার

সেকশন