নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নগরীর সড়কবাতি নেভানোর কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠা সেই বিতর্কিত প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। গত রোববার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিত এই অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা যায়। নিয়ম অনুযায়ী, তিনি ৯০ দিনের নগদ বেতন পাবেন বলে তাতে উল্লেখ করা হয়েছে।
অফিস আদেশে আরও বলা হয়েছে, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিদ্যুৎ উপবিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (সাময়িক বরখাস্ত) ঝুলন কুমার দাশকে সিটি করপোরেশন কর্মচারী চাকরি বিধিমালা, ২০১৯-এর ৬৪(২) ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জনস্বার্থে চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো। তিনি বিধি মোতাবেক ৯০ দিনের বেতন নগদে প্রাপ্য হবেন। এ আদেশ ১৫ ডিসেম্বর থেকেই কার্যকর হবে।’
অপসারণের বিষয়টি নিশ্চিতের জন্য চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামকে কল দেওয়া হলে তিনি ধরেননি। তবে হোয়াটসঅ্যাপে ফিরতি মেসেজ দিয়ে জানান, তিনি বর্তমানে কোরিয়ায় রয়েছেন অফিসসংক্রান্ত কাজে।
প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশ বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে বিধি মোতাবেক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
চসিক জানায়, ৮ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিটি করপোরেশন-২ শাখার উপসচিব খোন্দকার ফরহাদ আহমদ স্বাক্ষরিত এক আদেশে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া প্রকৌশলী ঝুলন দাশকে রংপুর সিটি করপোরেশন থেকে চসিকে বদলি করা হয়। তবে তাঁকে চসিকের কোনো দায়িত্বে দেওয়া হয়নি। পৃথক আরেকটি আদেশে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেন তিনি। বদলি আদেশ পেয়ে ঝুলনের যোগদান নিয়ে ‘হার্ডলাইনে’ থাকার ঘোষণা দিয়েছিলেন সিটি মেয়র শাহাদাত। পরে তাঁকে ১২ ডিসেম্বর চসিকে যোগদান করানো হয়।
এরপর ১৫ ডিসেম্বর তাঁকে অপসারণ করা হলো। ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সড়কবাতি বন্ধের অভিযোগ তুলে প্রকৌশলী ঝুলনের পদত্যাগ দাবিতে গত ১৩ আগস্ট চসিক কার্যালয় ঘেরাও করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরদিন ঝুলনকে সাময়িক বরখাস্ত করে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করে চসিক। ২৬ সেপ্টেম্বর ‘বরখাস্ত আদেশ’ মাথায় নিয়ে বদলি হন ওই কর্মকর্তা। ২৯ সেপ্টেম্বর চসিক থেকে ‘অবমুক্ত’ হয়ে যোগ দেন নতুন কর্মস্থল রংপুরে।